পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জয়ের পর আমেরিকার ক্রিকেটারদের উচ্ছ্বাস। ছবি: আইসিসি।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে পাকিস্তান। আমেরিকার কাছে সুপার ওভারে হেরে গিয়েছেন বাবর আজ়মেরা। প্রথম বার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলা আমেরিকা ঐতিহাসিক জয় ছিনিয়ে নিয়েছে। এ বারের বিশ্বকাপের অন্যতম আয়োজকদের এই জয়ে অবদান থাকল পাঁচ ভারতীয়ের। সঙ্গে আরও ছয় দেশের ক্রিকেটারদের।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলা আমেরিকার দলকে অবশিষ্ট বিশ্ব একাদশ বলা যেতে পারে। ভারত, পাকিস্তান, নিউ জ়িল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, কানাডা সব দেশের ক্রিকেটারেরা খেলছেন আমেরিকার হয়ে। বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আমেরিকার প্রথম একাদশে ছিলেন ছ’টি দেশে জন্ম নেওয়া ক্রিকেটরেরা। সব থেকে বেশি পাঁচ জন ছিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভুত। অধিনায়ক মনাঙ্ক পটেল আদতে গুজরাতের আনন্দের বাসিন্দা। ৩১ বছরের উইকেটরক্ষক-ব্যাটার অনূর্ধ্ব ১৯ গুজরাত দলের হয়েও খেলেছেন। বাঁহাতি অলরাউন্ডার হরমিত সিংহের জন্ম মুম্বইয়ে। খেলেছেন ভারতের অনূর্ধ্ব ১৯ দলের হয়ে। ভারতে ৩১টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। আর এক ভারতীয় বংশোদ্ভুত জোরে বোলার জসদীপ সিংহের জন্ম অবশ্য নিউ ইয়র্কে। প্রথম থেকেই তিনি আমেরিকার ক্রিকেটার। আমেরিকার আলাবামায় জন্ম আর এক বাঁ হাতি বোলার নসটুশ কেনজিগের। ভারতীয় বংশোদ্ভুত কেনজিগেও প্রথম থেকে আমেরিকার ক্রিকেটার। বাঁ হাতি জোরে বোলার সৌরভ নেত্রভালকরের জন্ম মুম্বইয়ে। ভারতের অনূর্ধ্ব ১৯ দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। মুম্বইয়ের হয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটও খেলেছেন। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন নীতীশ কুমার। ভারতীয় বংশোদ্ভুত ব্যাটারের জন্ম কানাডার ওন্টারিয়োতে। তিনি প্রথমে ছিলেন কানাডার ক্রিকেটার। পরে আমেরিকার হয়ে খেলতে শুরু করেন। অর্থাৎ, বৃহস্পতিবার আমেরিকার হয়ে খেলা ছয় ভারতীয় বংশোদ্ভুত ক্রিকেটারের তিন জনের জন্ম ভারতে।
আমেরিকার হয়ে বৃহস্পতিবার খেলেছেন আন্দ্রিস গৌস। দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্ম উইকেটরক্ষক ব্যাটারের। নিজের দেশের অনূর্ধ্ব ১৯ দলের হয়ে খেলেছেন তিনি। ৬০টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। দলে ছিলেন নিউ জ়িল্যান্ডের প্রাক্তন অলরাউন্ডার কোরি অ্যান্ডারসনও। কেন উইলিয়ামসের প্রাক্তন সতীর্থের ১৩টি টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। নিজের দেশে সুযোগ না পেয়ে আমেরিকায় চলে এসেছিলেন তিনি। আমেরিকার জোরে বোলার আলি খানের জন্ম পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশে। যদিও প্রথম থেকেই তিনি আমেরিকার ক্রিকেটার। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে সারা বছর ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি লিগ খেলেন তিনি।
এই নয় ক্রিকেটারের বাইরে এমন দু’জন ছিলেন যাঁরা আমেরিকার। অ্যারন জোন্স এবং স্টিভন টেলরের জন্ম আমেরিকায়। প্রথম থেকেই আমেরিকার হয়ে খেলেন ওপেনিং ব্যাটার টেলর। মিডল অর্ডার ব্যাটার জোন্সের জন্ম আমেরিকায় হলেও তাঁর পরিবার আদতে বার্বাডোজ়ের বাসিন্দা। আমেরিকায় ক্রিকেট খেলা শুরু করলেও এক সময় নিজের মাতৃভূমির হয়ে খেলতেন। পরে আবার ফিরে আসেন নিজের জন্মভূমিতে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জয়ে আমেরিকার অন্যতম নায়ক তিনি।
সব মিলিয়ে বৃহস্পতিবার আমেরিকার হয়ে খেলা ১১ জন ক্রিকেটারের মধ্যে ছ’জন ছিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভুত। পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউ জ়িল্যান্ড, বার্বাডোজ় এবং আমেরিকার এক জন করে ক্রিকেটার ছিলেন। আবার জন্মগত ভাবে ভারত, পাকিস্তান, নিউ জ়িল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, আমেরিকা এবং কানাডা— সাত দেশের ক্রিকেটারেরা খেলেছেন আমেরিকার হয়ে।