অবিস্মরণীয়: অধিনায়ক বিরাট কোহালির হাত থেকে টি-টোয়েন্টি সিরিজের ট্রফি নিয়ে নটরাজন।
অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সিরিজে তাঁকে প্রথমে বেছে নেওয়া হয়েছিল নেট বোলার হিসেবে। সেখান থেকে সদ্য শেষ হওয়া এই সফরে তিনি দেশের হয়ে তিন ফর্ম্যাটেই প্রতিনিধিত্ব করে নজির গড়েন। শুধু তাই নয়, গ্যাবায় টেস্ট অভিষেকে তিন উইকেটও নেন। অথচ তিন ফর্ম্যাটের একটিতেও অভিষেক হওয়াটা তিনি আশা করেননি। তিনি— টি নটরাজন।
রবিবার একটি সাংবাদিক বৈঠকে নটরাজন বলেছেন, ‘‘ওয়ান ডে-তে সুযোগ পাব আশা করিনি। অস্ট্রেলিয়ায় অভিষেক হবে জাতীয় দলের জার্সিতে ভাবিনি। যখন বলা হল আমি মাঠে নামব, কিছুটা চাপে পড়ে গিয়েছিলাম। সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে চেয়েছিলাম। মাঠে নেমে খেলা আর উইকেট পাওয়াটা আমার কাছে স্বপ্নের মতো।’’
ব্রিসবেন টেস্টে অভিষেক হওয়া নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘দেশের হয়ে খেলার সুযোগ পেয়ে কতটা খুশি হয়েছিলাম বলে বোঝাতে পারব না। প্রচুর সমর্থন পেয়েছি কোচ, সতীর্থদের। উৎসাহ পেয়েছি। এই জন্যই পারফর্ম করতে পেরেছি।’’ বিরাট কোহালি এবং অজিঙ্ক রাহানে দু’জনের নেতৃত্বেই খেলা উপভোগ করেছেন নটরাজন। তিনি বলেছেন, ‘‘কোহালি এবং অজিঙ্ক রাহানে আমাকে অনেক ইতিবাচক কথা বলেছে, উৎসাহ দিয়েছে। দু’জনের নেতৃত্বে খেলাটা উপভোগ করেছি।’’
টি-টোয়েন্টি সিরিজে জেতার পরে অধিনায়ক কোহালি যখন তাঁর হাতে ট্রফি তুলে দেন, তিনি আবেগরুদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন, স্বীকার করেন নটরাজন। তিনি বলেছেন, ‘‘টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের ট্রফিটা যখন কোহালি হাতে দিল, চোখে জল চলে এসেছিল।’’
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদের সঙ্গে একই দলে খেলার অভিজ্ঞতা নিয়ে জানতে চাইলে নটরাজন বলেছেন, ‘‘আইপিএলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদের সঙ্গে খেলার অভিজ্ঞতা অনেক কাজে এসেছে। অনেক কিছু শিখেছি।’’ অস্ট্রেলীয় ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার যিনি সানরাইজ়ার্স হায়দরাবাদের অধিনায়ক, তিনিও প্রশংসা করেছেন নটরাজনের। ‘‘ওয়ার্নার বলেছিল আমায় নিয়ে গর্বিত। আমার উন্নতি দেখে খুব খুশি হয়েছিল। একটা ম্যাচের সময় ওয়ার্নার বলে, আমার মেয়ে হয়েছে বলেই এত ভাল খেলছি।’’ নটরাজনের কন্যা হওয়ার সময় তিনি সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে আইপিএল খেলছিলেন। তিনি বলেন, তখন মেয়েকে দেখতে না পাওয়ার ব্যাপারটা মনে ছিলই তবে দেশের হয়ে খেলাটা তাঁর কাছে গর্বের।
তিনি আরও বলেছেন, ‘‘তিন ফর্ম্যাটে খেলার অন্যতম কারণ হল আমার অনুশীলন। আমার কোচেরা জানতেন এক একটা ফর্ম্যাটে আমার শক্তি কোথায়। তাই আমায় তাঁরা সুযোগ দিয়েছেন সব ফর্ম্যাটে খেলার। আমি বাঁ-হাতি পেসার বলে সুবিধে হয়েছে।’’ যোগ করেছেন, ‘‘আমি সব সময় নিজের শক্তির উপরে বিশ্বাস করে এসেছি। আমার স্থানীয় ক্রিকেট সংস্থাকে যতটা সম্ভব সাহায্য করব। কারণ এখানকার মানুষ পাশে দাঁড়ানোর জন্যই আজ আমি এখানে আসতে পেরেছি। সবাই জানে আমি কী ভাবে এখানে উঠে এসেছি। পরিশ্রম করলে তার ফল পাওয়া যায়।’’