ত্রয়ী: বল বিকৃতি কাণ্ডের কলঙ্কিত অধ্যায় কািটয়ে আবারও টেস্ট জার্সিতে ডেভিড ওয়ার্নার, স্টিভ স্মিথ এবং ক্যামেরন ব্যানক্রফ্ট। ছবি: রয়টার্স।
প্রতিভাকে যে চাপা দিয়ে রাখা যায় না, তা ফের এক বার প্রমাণ করলেন অস্ট্রেলিয়ার স্টিভ স্মিথ!
এক বছর আগে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে কেপটাউন টেস্টে বল বিকৃতি কাণ্ডে জড়িয়ে এক বছরের নির্বাসনের সঙ্গে হারিয়েছিলেন অধিনায়কত্বও। একটা সময় নিজেও স্মিথ ভাবতে শুরু করেছিলেন, ক্রিকেট জীবনটাই হয়তো শেষ হয়ে গিয়েছে। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে বৃহস্পতিবার এজবাস্টনে অ্যাশেজের প্রথম টেস্টে ১৪৪ রান। প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার ২৮৪ রানের প্রায় অর্ধেক এসেছে তাঁর ব্যাট থেকে। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা স্মিথের এই মহারাজকীয় ইনিংসকে বলতে শুরু করেছেন স্বপ্নের প্রত্যাবর্তন।
স্মিথ নিজে বলছেন, ‘‘গত ১৫ মাসে একটা বড় সময় গিয়েছে, যখন ভাবতে পারিনি ফের ক্রিকেটে ফিরতে পারব। একটা সময় ক্রিকেটের প্রতি ভালবাসাও হারিয়ে গিয়েছিল। বিশেষ করে যখন কনুইয়ে অস্ত্রোপচার হয়।’’
অস্ট্রেলিয়ার ২৮৪ রানের জবাবে লড়ছে ইংল্যান্ডও। জেসন রয় (১০) বড় রান না পেলেও শুক্রবার সেঞ্চুরি করেন রোরি বার্নস (১২৫)। অধিনায়ক জো রুট ৫৭ রান করেছেন। দ্বিতীয় দিনের শেষে ইংল্যান্ডের রান ২৬৭-৪। এ দিন জো রুট ব্যাট করার সময়ে জেমস প্যাটিনসনের বল উইকেট ছুঁয়ে যায়। কিন্তু বেল পড়েনি। প্যাটিনসন আবেদন করলে আম্পায়ার আউট দেন। রিভিউতে দেখা যায় বল ব্যাটে নয়, উইকেটে লেগেছে। বেল না পড়ায় আম্পায়ার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেন।
রাজসিক প্রত্যাবর্তনের পরে স্মিথ বলছেন, ‘‘এই ম্যাচের আগে আত্মবিশ্বাস বাড়াতে নিজেকে বলেছিলাম, সেরা ছন্দে ব্যাট করতে প্রস্তুত।’’ আর শতরানের মুহূর্ত নিয়ে স্মিথ বলেন, ‘‘শতরানের জন্য বলটা মেরেই দেখলাম স্টুয়ার্ট ব্রড তা ধরতে ছুটছে। কিন্তু বল ওর আয়ত্তের বাইরে যেতেই মেরুদণ্ডে এটা ঠান্ডা স্রোত বয়ে গেল। রোম খাড়া হয়ে যায়। ঠিক যেমন হয়েছিল জীবনের প্রথম সেঞ্চুরির সময়ে।’’ স্মিথের পরিবারও উচ্ছ্বসিত। বাবা পিটার বলছেন, ‘‘ চাপ নিয়ে খেলতে হয়েছে ওকে। ভয়েই ছিলাম। ওর সেঞ্চুরির পরে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ি। এখনও ঘোরটা কাটছে না।’’ আরও বলেছেন, ‘‘এই জায়গায় আসতে স্মিথকে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে। ও আমায় বলেছে এই ইনিংসটা খেলা খুব কঠিন ছিল। সেটা খেলাতেও বোঝা গিয়েছে।’’ স্মিথের ব্যাটিংয়ের প্রশংসা করেছেন প্রাক্তন অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক রিকি পন্টিংও। তিনি বলেছেন, ‘‘এই ইনিংসে স্মিথ বুঝিয়ে দিল মানসিক দিক থেকে ও কতটা শক্তপোক্ত।’’
স্কোরকার্ড
অস্ট্রেলিয়া ২৮৪ (৮০.৪)
ইংল্যান্ড ২৬৭-৪ (৯০)
ইংল্যান্ড (প্রথম ইনিংস)
(বৃহস্পতিবার ১০-০ পর)
বার্নস ন. আ. ১২৫ • ২৮২
রয় ক স্মিথ বো প্যাটিনসন ১০ • ২২
রুট ক ও বো সিডল ৫৭ • ১১৯
ডেনলি এলবিডব্লিউ বো প্যাটিনসন ১৮ • ৩৬
বাটলার ক ব্যানক্রফট বো কামিন্স ৫ • ১০
স্টোকস ন. আ. ৩৮ • ৭১
অতিরিক্ত ১৪ মোট ২৬৭-৪ (৯০)
পতন: ১-২২ (রয়, ৭.২), ২-১৫৪ (রুট, ৪৯.৬), ৩-১৮৯ (ডেনলি, ৬২.১), ৪-১৯৪ (বাটলার, ৬৫.৪)।
বোলিং: প্যাট কামিন্স ২১-৬-৬৫-১, জেমস প্যাটিনসন ১৭-২-৫৪-২, পিটার সিডল ২১-৫-৪৩-১, নেথান লায়ন ২৮-৪-৭৯-০, ম্যাথু ওয়েড ১-০-৭-০, ট্রাভিস হেড ২-১-৭-০।