পিটি ঊষা। — ফাইল চিত্র।
রবিবার সকালেই ভারতীয় কুস্তি সংস্থাকে নিলম্বিত করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রক। কিন্তু ভারতে কুস্তির প্রতিযোগিতা যাতে থেমে না যায় তার জন্য উদ্যোগী তারা। ক্রীড়া মন্ত্রকের তরফে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক্স সংস্থাকে (আইওএ) অনুরোধ করা হয়েছে একটি অ্যাড-হক কমিটি গঠন করে কুস্তি সংস্থার কাজকর্ম সামলানোর জন্য। চিঠিটি লেখা হয়েছে আইওএ সভাপতি তথা প্রাক্তন দৌড়বিদ পিটি ঊষাকে উদ্দেশ্য করে।
পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কুস্তি সংস্থাকে নির্বাসিত করা হয়েছে। তার পরেই আইওএ-কে একটি চিঠি লিখে ক্রীড়া মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, কুস্তি সংস্থার নির্বাচনের পর তৈরি হওয়া পরিস্থিতির জেরে প্রশাসন চালানো এবং সংস্থার ভাবমূর্তি নিয়ে গভীর চিন্তা তৈরি হয়েছে। এই মুহূর্তে তা সংশোধন করা এবং উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। ভারতের কুস্তি যাতে থেমে না যায় তা দেখা আইওএ-র দায়িত্ব। তাই একটি অ্যাড-হক কমিটি তৈরি করে কুস্তি সংস্থার কাজকর্ম দেখাশোনার দায়িত্ব দেওয়া হোক। কুস্তি সংস্থার ভাবমূর্তি স্বচ্ছ রাখার আবেদনও করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, রবিবার সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানায়, বৃহস্পতিবার নির্বাচিত হওয়ার পরেই জাতীয় অনূর্ধ্ব-১৫ ও অনূর্ধ্ব-২০ স্তরের প্রতিযোগিতার কথা ঘোষণা করেন নতুন সভাপতি সঞ্জয় সিংহ। তিনি জানান, চলতি মাসের শেষে উত্তরপ্রদেশের গোন্ডাতে সেই প্রতিযোগিতা হবে। কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রকের মনে হয়েছে, কোনও পরিকল্পনা না করেই সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তার ফলে অংশ নিতে চাওয়া কুস্তিগিরেরা নিজেদের তৈরি করার পর্যাপ্ত সময় পাবেন না।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই আরও জানিয়েছে, ভারতীয় কুস্তি সংস্থার সংবিধান অনুযায়ী, যুব বা সিনিয়র স্তরের কোনও প্রতিযোগিতার আয়োজন করার আগে এগজ়িকিউটিভ কমিটির বৈঠক হয়। সেই বৈঠকের পরে প্রতিযোগিতার সূচি প্রকাশ করা হয়। প্রত্যেকটি প্রতিযোগিতার আগে কুস্তিগিরদের প্রস্তুতির জন্য প্রয়োজনীয় সময় দিতে হয়। সব থেকে কম ১৫ দিন সময় দিতে হয় প্রস্তুতির। সেই সব কোনও নিয়মের তোয়াক্কা করেননি সঞ্জয়। নিজের মতো সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। সেই কারণে নতুন কমিটি সাসপেন্ড করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্রীড়া মন্ত্রক। তবে কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়নি। পরবর্তী নির্দেশ পর্যন্ত তাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন সঞ্জয়। তিনি যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত কুস্তিকর্তা ব্রিজভূষণের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। তার পরেই প্রতিবাদে কুস্তি ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন সাক্ষী মালিক। সেই সিদ্ধান্ত জানাতে গিয়ে কেঁদে ফেলেছিলেন অলিম্পিক্স পদকজয়ী কুস্তিগির। আর এক পদকজয়ী কুস্তিগির বজরং ‘পদ্মশ্রী’ ফেরানোর সিদ্ধান্ত নেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করতে সংসদে যান তিনি। কিন্তু সেখানে যাওয়ার আগেই তাঁকে পুলিশ আটকায়। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে পারেননি বজরং। পরে সংসদের সামনের রাস্তায় (কর্তব্যপথ) সেই পদক ফেলে দিয়ে আসেন।