অভিনন্দন: আউট হওয়ার পরে বিরাট-আলিঙ্গন গেলকে। এপি
ক্রিস গেল। ক্রিকেটের ইতিহাসে বিস্ময় হিসেবেই থেকে যাবেন। তিনটি স্লিপ, একটি গালির ঘেরাটোপে সচরাচর তাঁকে আটকানো যায়নি। বোলারদের কড়া শাসনের মধ্যে রাখাই তাঁর ক্রিকেট-দর্শন। কিন্তু ২০১৯ বিশ্বকাপ থেকে এই ক্রিস গেলই কেমন যেন চরিত্রের বিপরীত ইনিংস খেলতে শুরু করেছিলেন। বড় শট নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন, পাওয়ারপ্লে-তে দ্রুত রান তোলার তাগিদও সে রকম দেখা যাচ্ছিল না। বুধবার পোর্ট অব স্পেনে পুরনো মেজাজে দেখা গেল ‘ইউনিভার্স বস’ ও তাঁর সঙ্গী ওপেনার এভিন লুইসকে।
৬৫ বলে ১১৫ রান করে শেষ হল এই জুটি। মহম্মদ শামি, ভুবনেশ্বর কুমার, খলিল আহমেদরা কোন জায়গায় বল ফেলে তাঁদের আটকাবেন, বুঝে উঠতে পারছিলেন না। ম্যাচের প্রথম ওভার মেডেন হয়েছিল। কিন্তু নবম ওভারের মধ্যে স্কোরবোর্ডে ১০০-০। যার অর্থ মাঝের আট ওভারে একশো রানের জুটি গড়েন গেল ও লুইস।
৪১ বলে ৭২ রানের ইনিংস খেলে গেল প্যাভিলিয়নের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময় তাঁকে অভিনন্দন জানাতে এগিয়ে আসেন ভারতীয় ক্রিকেটারেরা। পুরনো ভঙ্গিতে উৎসব করেন অধিনায়ক বিরাট কোহালি। এক সময় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের জার্সিতে এ ভাবেই উৎসব করতে দেখা যেত গেল ও কোহালিকে। এর পরে আউট হয়ে ব্যাটের হাতলে হেলমেট ঝুলিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন গেল। সতীর্থরা তখন উঠে দাঁড়িয়ে হাততালি দিচ্ছেন।
ভারতীয় দল এবং সতীর্থদের এই অভিনন্দনের ভঙ্গি দেখেই সোশ্যাল মিডিয়ায় জল্পনা শুরু হয়, ‘‘তা হলে এটাই কি গেলের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ?’’ বিশ্বকাপ চলাকালীনই গেল বলেছিলেন, ‘‘ভারতের বিরুদ্ধে টেস্ট খেলে অবসর নেওয়ার কথা ভাবব।’’ কিন্তু টেস্ট দলে তাঁকে রাখা হয়নি। তাই অনেকেই ভেবেছিলেন, ভারতের বিরুদ্ধে শেষ ওয়ান ডে খেলেই অবসর ঘোষণা করবেন তিনি। ইনিংসের বিরতি পর্যন্ত কিছু ঘোষণা করেননি গেল। কিন্তু টুইটারে তাঁর অনেক ভক্তই বিদায়ী বার্তা দিতে শুরু করেছেন ‘ইউনিভার্স বস’-কে। এমনকি আইপিএল চেয়ারম্যান রাজীব শুক্ল পর্যন্ত টুইটারে লেখেন, ‘‘অবসরের পরের জীবনের জন্য শুভেচ্ছা।’’
এ দিন পোর্ট অব স্পেনে গেলের খেলা ইনিংসে রয়েছে আটটি চার ও পাঁচটি ছয়। তার মধ্যে খলিলকে স্কোয়ার লেগের উপর দিয়ে এক হাতে মারা ছক্কাই সব চেয়ে আকর্ষণীয়। গেলের এই শট দেখে সুনীল গাওস্করও বিস্মিত। বলছিলেন, ‘‘কব্জির কতটা জোর থাকলে এ রকম একটা শট খেলা সম্ভব আমার জানা নেই। ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিলে এ ধরনের ইনিংস আর দেখে যাবে না।’’
বৃষ্টির জন্য পুুরো ওভার খেলানো সম্ভব হয়নি। পরিবর্ত নিয়মে ৩৫ ওভারে সাত উইকেট হারিয়ে ২৪০ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তিন উইকেট খলিল আহমেদের। কিন্তু ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতি প্রয়োগ করে ২৫৫ রান লক্ষ্য দেওয়া হয় ভারতকে।