মহড়া: করোনা আতঙ্কের মধ্যেই বুধবার শুরু হচ্ছে ইপিএলের দ্বৈরথ। তার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত ম্যাঞ্চেস্টার সিটির ফুটবলারেরা। দীর্ঘ দিন পরে ম্যাচে নামার জন্য মুখিয়ে আগুয়েরো, রাহিম স্টার্লিংরা। টুইটার
জায়ান্ট স্ক্রিনে ভেসে উঠছে ভক্তদের মুখ। যাতে ফাঁকা স্টেডিয়ামে নিজেদের একেবারে নিঃসঙ্গ মনে না-করেন ফুটবলারেরা। গোল বা ম্যাচ জেতার উৎসব করার জন্য বিশেষ ক্যামেরা। মাঠে যাওয়ার উপায় নেই। ঘরে বসে যাতে টিভিতে মাঠের আবহের স্বাদ পেতে পারেন, সেই সম্প্রচার-অভিনবত্ব নিয়ে ফিরছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ। আর প্রথম রাতেই ডার্বি। দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি ম্যাঞ্চেস্টার সিটি ও আর্সেনাল।
প্রিমিয়ার লিগ কমিটির লক্ষ্য, সামনের ছয় সপ্তাহের মধ্যে বাকি ৯২টি ম্যাচের আয়োজন করা। যা মেনে নিতে পারছেন না ম্যাঞ্চেস্টার সিটির ম্যানেজার পেপ গুয়ার্দিওলা। বলেছেন, ‘‘জার্মানি বা স্পেনে এক-একটা ক্লাব লিগের জন্য তৈরি হতে পাঁচ থেকে ছ’সপ্তাহ সময় পেয়েছে। আমরা পেলাম মাত্র তিন সপ্তাহ। তাই সে ভাবে তৈরি হতেই পারিনি।’’ যোগ করেছেন, ‘‘তিন দিন, চার দিনের ব্যবধানে আমাদের খেলতে হবে। সেটাও একটা চিন্তার ব্যাপার। তা ছাড়া অন্য দলগুলো কী অবস্থায় আছে সেটা জানারও সুযোগ নেই।’’
এত কিছুর পরেও পেপ অবশ্য প্রিমিয়ার লিগ কমিটির ইপিএল শুরুর সিদ্ধান্ত ‘আর্থিক কারণেই’ মেনে নিচ্ছেন। করোনা অতিমারিতে স্পেনে তাঁর মায়ের মৃত্যু হয়েছে। সেই শোকের মধ্যে ফুটবল মাঠে ফেরাটা যে সহজ নয়, স্বীকার করেছেন লিয়োনেল মেসির প্রাক্তন গুরু। প্রতিপক্ষ আর্সেনাল ম্যানেজার মিকেল আর্তেতা এক সময় ম্যান সিটিতে তাঁর সহকারী ছিলেন। এই আর্তেতাও করোনায় আক্রান্ত হন। যা নিয়ে পেপ মজা করে বলেছেন, ‘‘ইচ্ছে আছে কাল ম্যাচের পরে দু’জনে একসঙ্গে পান করার। জানি না সে অনুমতি আমাদের দেওয়া হবে কি না।’’
n অভিনব: ক্লাবের নামাঙ্কিত স্যানিটাইজ়ার ম্যান ইউতে।
মারণ ভাইরাসের আরও সংক্রমণ রুখতে ইপিএলের সব ম্যাচেই কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা হবে। বুন্দেশলিগা, লা লিগার মতো ইংল্যান্ডেও কোনও ম্যাচেই স্টেডিয়ামে বসে দর্শকেরা খেলা দেখতে পারবেন না। খেলোয়াড়দের থুতু ফেলতে বা নাক পরিষ্কার করতে নিষেধ করা হয়েছে। রেফারি বা তাঁর সহকারীদের ঘিরে কিছু বলতে পারবেন না ফুটবলারেরা। ম্যানেজারেরা হাত মেলাবেন না। দুই অর্ধে একবার করে জল পান করার বিরতি দেওয়া হবে। আর ২৫ মিনিটের বেশি ওয়ার্মআপের ব্যবস্থা থাকবে না। সঙ্গে নিয়মিত মাঠ, গোলপোস্ট, কর্নার ফ্ল্যাগ ইত্যাদি জায়গা জীবাণুমুক্ত করা হবে। এমনকি, মাঠের মধ্যে বলবয়ও রাখা হচ্ছে না। ভিডিয়ো প্রযুক্তির সাহায্যে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়ও সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করা হবে। গোলের পরে ফুটবলারদেরও উৎসব করতে হবে যতটা সম্ভব নিজেদের মধ্যে দূরত্ব রক্ষা করে।
আরও পড়ুন: বিপর্যস্ত ইটালিতে বিনোদন ফেরানোর পরীক্ষা রোনাল্ডোর
তবে ঘরে বসেই যাতে ফুটবলভক্তরা যথাসম্ভব মাঠের আমেজ পান, তার ব্যবস্থা করার চেষ্টা হচ্ছে। টিভি সম্প্রচারে আনা হচ্ছে নানা অভিনবত্ব। যেমন টানেলে ক্যামেরা থাকবে, ফুটবলারদের উৎসবের ভঙ্গি তুলে ধরার জন্যও থাকছে বিশেষ ক্যামেরা। টসের সময়ে অডিয়ো রাখা হচ্ছে, যাতে সরাসরি দর্শকেরা বৈঠকখানায় বসে শুনে নিতে পারেন, কারা জিতল এবং কী সিদ্ধান্ত নিলেন বিজয়ী অধিনায়ক। যে সমস্ত স্টেডিয়ামে জায়ান্ট স্ক্রিন আছে, সেখানে যে দু’টি ক্লাব খেলছে তাদের ১৬ জন করে সমর্থককে বেছে ম্যাচ চলাকালীন তাদের প্রতিক্রিয়া ভিডিয়োর মাধ্যমে দেখানো হবে। তবে মাঠের কৃত্রিম আওয়াজ টিভি দর্শকেরা শুনতে চান কি না, তা তাঁদের উপর ছাড়া হবে। শব্দ, গান ও অন্য নানা আওয়াজের এই সংগ্রহ নেওয়া হচ্ছে মূলত ফিফা ভিডিয়ো গেমসের থেকে।
আরও পড়ুন: যেন ভূত বাড়িতে চলছে খেলা, ফের চ্যাম্পিয়ন বায়ার্ন