প্রস্তুতি: তৈরি হচ্ছেন সনি নর্দে। বৃহস্পতিবার। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী
সনি নর্দে একদিকে। বাকি মোহনবাগান অন্য দিকে।
চেন্নাই ম্যাচ খেলতে নামার তিন দিন আগে সঞ্জয় সেনের ড্রেসিংরুম কার্যত দু’ভাগ হয়ে গিয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে রবীন্দ্র সরোবর স্টেডিয়ামে অনুশীলনের পর হাইতি তারকা বলে দিলেন, ‘‘শুধু আমি নই, ঈশ্বরও জানেন আইজলই আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হবে। ঈশ্বরকে ডেকে লাভ নেই। মোহনবাগানের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনা আমার মতে শূন্য।’’ পাশাপাশি তাঁর মন্তব্য, ‘‘আইজল হারলে খুশি হব। কিন্তু ওরাই এ বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার যোগ্য দল।’’
সনি যখন এ রকম কথা বলছেন তখন তাঁর সতীর্থরা একেবারে উল্টো পথে হাঁটছেন। জেজে লালপেখলুয়া ড্রেসিংরুমে ফেরার পথে বললেন, ‘‘লিখে রাখুন আমি বলছি শিলং লাজং হারিয়ে দেবে আইজলকে। আমরা রবিবারের ম্যাচটা জিততে পারলেই চ্যাম্পিয়ন হব। ওটা পাহাড়ের ডার্বি। কেউ কাউকে ছেড়ে দেবে না।’’ মোহনবাগান সূত্রের খবর, আইজলকে হারানোর জন্য শিলংয়ের ফুটবলারদের নাকি ফোন করে নানাভাবে তাতাচ্ছেন জেজে। ‘‘পুরো শিলং মাঠে আসবে এই ম্যাচ দেখতে। আইজলের অ্যাওয়ে রেকর্ড কিন্তু খুব খারাপ,’’ বলছিলেন দেশের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার। জেজের সঙ্গে গলা মেলাচ্ছেন প্রীতম কোটাল, শৌভিক চক্রবর্তীরাও। প্রীতম বলছিলেন, ‘‘কেন জানি না মন বলছে আমরা চ্যাম্পিয়ন হব। চেন্নাই ম্যাচটা তাই জিততেই হবে।’’ আর তাঁর পাশে দাঁড়ানো শৌভিকের মন্তব্য, ‘‘পাহাড়ের ওই ম্যাচটা ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের মতোই। সে জন্যই আশা আছে আমাদের। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছি আইজল যাতে হারে।’’
সনি অবশ্য সতীর্থদের যুক্তি মানতে নারাজ। বলছিলেন, ‘‘আমার সতীর্থরা বা ক্লাব কর্তারা অন্য কথা ভাবতেই পারেন। আমি বলছি, আইজল সর্বশক্তি দিয়ে ম্যাচটা জিততে চাইবে। এই সুযোগ ওরা কিছুতেই হাতছাড়া করবে না। আমার ধারণা ম্যাচটা ড্র হলেও হতে পারে। কিন্তু শিলং জিততে পারবে না।’’ তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, মাঠের বাইরে কি কিছু ঘটতে পারে বলে আপনার আশঙ্কা? সনি হেসে ফেলেন, ‘‘হতেই পারে। বললাম তো আইজল সব সুযোগ নেবে।’’ কিন্তু শিলং-এর কোচ তো ফেডারেশনের ওয়েবসাইটে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘‘আইজলকে এক ইঞ্চিও জমি ছাড়বে না শিলং।’’ তা শুনে সনির মন্তব্য, ‘‘কোচ তো আর মাঠে নেমে খেলবেন না। খেলবে তো ফুটবলাররা। আবার বলছি, আমরা আইজলে খেতাব হারিয়ে এসেছি।’’ সনির মতে, গতবারের মতো শিলং আর মুম্বইয়ের সঙ্গে পয়েন্ট হারানোটা পিছিয়ে দিয়েছে মোহনবাগানকে।
আপনার সর্তীর্থরা বলছেন, কলকাতায় ম্যাচ খেললেও তাঁদের মন রবিবার পড়ে থাকবে শিলংয়ে। আপনিও কি খেলতে খেলতে আইজল-শিলং ম্যাচের ফল জানার জন্য মুখিয়ে থাকবেন? সোনালি চুলের তারকা হতাশায় ডুব দিলেন, ‘‘কোনও লাভ নেই। আমাদের আই লিগ ভুলে এখন ফেড কাপের কথা ভাবা উচিত।’’
তিন দিনের ছুটি নিয়ে বাড়ি যাওয়া আনাস এডাথোডিকা বিমান বিভ্রাটে এ দিনও আসতে পারেননি শহরে। কুঁচকির চোটে কাবু ড্যারেল ডাফি ফিজিও-র সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন। তার মধ্যেই সঞ্জয় সেন চেন্নাই ম্যাচের প্রস্তুতি সেরেছেন। কিন্তু তাঁর টিমের এক নম্বর তারকাই যে ম্যাচটা খেলার মোটিভেশন পাচ্ছেন না। টিম তাতবে কী করে?