চিনে পৌঁছে শিল্টন পাল, সনি নর্ডিরা দেখলেন রাস্তার গাছে বরফ ঝুলছে!
বাগানের এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের দ্বিতীয় প্রতিপক্ষ শেনডং চিনের যে শহরের ক্লাব সেই জিনান-এ এখন তাপমাত্রা দু’ডিগ্রি চলছে। রাতের দিকে মাইনাস দুই-তিনে নেমে যাচ্ছে। সঞ্জয় সেন ব্রিগেড রবিবার সেখানকার জিংসি রো়ডে জানুই শিউওয়ান হোটেলে চেক-ইন করল ভারতীয় সময় সন্ধে সাতটায়। স্থানীয় সময় তখন রাত সাড়ে ন’টা।
কাঁপতে কাঁপতে শৌভিক-কাতসুমিরা হোটেলে ঢুকলেন যখন, তার ষোলো ঘণ্টা আগেই অবশ্য গোটা সবুজ-মেরুনকে কাঁপিয়ে দিয়ে গিয়েছে এক অপ্রত্যাশিত ঘটনা। শনিবার রাত আড়াইটেয় মুম্বই বিমানবন্দরে অভিবাসন দফতরের আধিকারিকরা বাগানের বিশ্বকাপার স্ট্রাইকার কর্নেল গ্লেনকে চিনের বিমানে ওঠার বদলে ফেরত পাঠিয়ে দেন। অভিযোগ, ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো ফুটবলারের ভিসার কাগজপত্র ঠিক ছিল না। যা ঠিক করতে মুম্বই থেকে গ্লেন চলে গিয়েছেন শিলংয়ে। পুরনো ক্লাব লা়জংয়ে। নিটফল, মঙ্গলবার বিদেশের মাঠে শেনডং এফসি-র বিরুদ্ধে মহাগুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক লড়াইয়ে বাগান নামছে তার প্রধান গোলগেটারকে বাইরে রেখে। চারের বদলে তিন বিদেশি নিয়ে। স্ট্রাইকারে জেজে ছাড়া কেউ নেই।
তাতেও অবশ্য ডাকাবুকো বাগান কোচ চিনের টিম হোটেল থেকে বলে দিলেন, ‘‘মনে হয় সমস্যা হবে না। বরং দেখে নেওয়া যাবে গ্লেন ছাড়া আমার টিম কেমন খেলে।’’ কর্তারাও যেন হতাশ নন। উল্টে তাঁরা আশাবাদী, পরের আই লিগ ম্যাচের আগে বিশ্রাম পেয়ে আরও তাজা থাকবেন গ্লেন।
পুণে থেকে সড়কপথে মুম্বই। সেখান থেকে রাত আড়াইটের বিমানে ছ’ঘণ্টা জার্নি করে হংকং। সেখান থেকে চিনে আরও আড়াই ঘণ্টার ফ্লাইটে। সবশেষে ফের বাসে পাঁচ ঘণ্টা চেপে জিনানে। ক্লান্তির বাইরে রাস্তায় কোনও সমস্যা না হলেও ডিনারে গিয়ে অবশ্য বিপত্তিতে পড়েন শিল্টনরা। হোটেলকর্মীরা ইংরেজি না জানায় বাগান ফুটবলাররা ঠিক বিশ্বাস করতে পারছেন না তাঁদের সাপ, ব্যাঙের মাংস খাওয়ানো হয়েছে কি না! অর্ধেকের বেশি খাবার খেতে পারেননি। সব মিলিয়ে সমস্যায় টিম ম্যানেজার প্রতীম রায়।
তার উপর আবার মঙ্গলবার যে সময় ম্যাচ, সোমবার ঠিক সেই সময় স্টেডিয়ামে প্র্যাকটিসের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না বাগানকে। জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, মাঠে তখন জল দেওয়া হবে। বিদেশের কন্ডিশনে মাত্র এক দিনের অনুশীলনে খেলতে হবে। তার উপর এই নির্দেশে আরও সমস্যায় সঞ্জয়ের দল।
শেনডং চার বার চিনের লিগ চ্যাম্পিয়ন। দলের কোচ ব্রাজিলের প্রাক্তন জাতীয় কোচ মানো মেনেজেস। নেইমারের দেশের হয়ে খেলা তাঁর হাতেই। শেনডংয়ের প্রধান স্ট্রাইকার গত কোপা আমেরিকায় ব্রাজিল দলে থাকা দিয়েগো তারদেলি। এই অবস্থায় ইউটিউব-ই ভরসা সঞ্জয়ের। আর লুসিয়ানোর টোটকা। যিনি নাকি শেনডংয়ের ব্রাজিলীয় তারকাদের খুঁটিনাটি জানেন।