আদর্শ বনাম ভক্তের ফাইনাল

শুক্রবার সেমিফাইনালে তাঁর ৬-৩, ৬-১ গেমের দাপুটে জয় দেখে অবশ্য পরিষ্কার, অতীতের কোনও স্মৃতি আর তাড়া করেনি সেরিনাকে। যে জয় ১০ নম্বর যুক্তরাষ্ট্র ওপেন ফাইনাল এবং মার্গারেট কোর্টের ২৪ গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের নজির স্পর্শ করার আরও একটা সুযোগ এনে দিল ৩৭ বছর বয়সি তারকার সামনে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৬:০০
Share:

দ্বৈরথ: যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের ফাইনালে সেরিনার সামনে বিয়াঙ্কা। এএফপি

তিন বছর আগের সেই দিনটা এতটাই অপ্রত্যাশিত ছিল যে, সেরিনা উইলিয়ামস যত দ্রুত সম্ভব ভুলে যেতে চাইছিলেন সব। ২০১৬ রিয়ো অলিম্পিক্সে যে দিন স্ট্রেট সেটে এলিনা সোয়াইতোলিনার বিরুদ্ধে হেরে গিয়েছিলেন মার্কিন তারকা। ছয় বারের সাক্ষাতে ইউক্রেনের প্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে তাঁর এক মাত্র হার। ‘‘আমার জন্য খুব কঠিন গিয়েছে সেই অলিম্পিক্সটা। ডাবলসে হেরে গিয়েছিলাম। সেই ধাক্কাটা সামলাতে না সামলাতেই কিছুক্ষণ পরে সিঙ্গলসে নামতে হয়েছিল। তাই রিয়ো অলিম্পিক্সে খেলতেই পারিনি,’’ যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের সেমিফাইনালে ফের সোয়াইতোলিনার মুখোমুখি হওয়ার আগে বলেছিলেন সেরিনা।

Advertisement

শুক্রবার সেমিফাইনালে তাঁর ৬-৩, ৬-১ গেমের দাপুটে জয় দেখে অবশ্য পরিষ্কার, অতীতের কোনও স্মৃতি আর তাড়া করেনি সেরিনাকে। যে জয় ১০ নম্বর যুক্তরাষ্ট্র ওপেন ফাইনাল এবং মার্গারেট কোর্টের ২৪ গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের নজির স্পর্শ করার আরও একটা সুযোগ এনে দিল ৩৭ বছর বয়সি তারকার সামনে। ‘‘আরও একটা ফাইনালে ওঠাটা পাগলামি মনে হচ্ছে। তবে এটাও ঠিক, আমি এর চেয়ে কম কিছু আশা করিনি। আমি জানতাম, আরও ভাল খেলতে পারি। সেটাতেই বেশি জোর দিয়েছি,’’ ফাইনালে ওঠার পরে বলেন সেরিনা।

সোয়াইতোলিনাকে হারিয়ে একটা রেকর্ডও গড়ে ফেলেছেন। ফ্লাশিং মেডোজে ১০১ নম্বর ম্যাচ জিতে কিংবদন্তি ক্রিস এভার্টের নজির স্পর্শ করেছেন সেরিনা। যা নিয়ে বলেছেন, ‘‘ক্রিসির সঙ্গে যে কোনও ক্লাবে থাকার সুযোগ পাওয়াটা বিরাট বড় ব্যাপার।’’

Advertisement

ফাইনালে সেরিনার প্রতিপক্ষ ১৯ বছর বয়সি বিয়াঙ্কা আন্দ্রেস্কু। ১৯৯৯ সালে সেরিনা যুক্তরাষ্ট্র ওপেনেই খেলোয়াড় জীবনের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতার সময় বিয়াঙ্কার জন্মই হয়নি। তারও এক বছর পরে জন্মান তিনি। টেনিসের ওপেন যুগে গ্র্যান্ড স্ল্যামের দুই ফাইনালিস্টের মধ্যে এত বেশি বয়সের পার্থক্য (১৮ বছর) এর আগে দেখা যায়নি। চলতি মরসুমেই রজার্স কাপের ফাইনালে সেরিনার মুখোমুখি হয়েছিলেন বিয়াঙ্কা। কিন্তু চারটি গেম খেলার পরেই চোটের জন্য ম্যাচ ছেড়ে দিয়েছিলেন সেরিনা।

বিয়াঙ্কার জন্ম কানাডাতে হলেও খুব ছোট বয়েসে বাবা-মার সঙ্গে রোমানিয়ায় চলে গিয়েছিলেন। সেখানেই টেনিসে হাতেখড়ি। বিয়াঙ্কার যখন ১১ বছর বয়স, কানাডায় ফিরে আসে তাঁর পরিবার। ফিরে এসেই টেনিস কানাডার অনূর্ধ্ব-১৪ ন্যাশনাল ট্রেনিং সেন্টারে ভর্তি হন। জন্মের পর থেকেই মেয়েদের টেনিসে তাঁর আদর্শ সেরিনার দাপট দেখে আসছেন বিয়াঙ্কা। তাই সেমিফাইনালে বেলিন্দা বেনচিচকে ৭-৬, ৭-৫ হারানোর পরে কানাডিয়ান তারকা বলে দিয়েছেন, ‘‘সব সময় আমার টিমকে (সাপোর্ট স্টাফ) বলে এসেছি, সেরিনা অবসর নেওয়ার আগে ওর বিরুদ্ধে খেলতে চাই। তাই ফাইনালে নামতে মুখিয়ে রয়েছি। কোর্টে হোক বা কোর্টের বাইরে, সেরিনা অসাধারণ চ্যাম্পিয়ন। খুব মজা হবে ম্যাচটায়,’’ সেমিফাইনালে জেতার পরে বলেন বিয়াঙ্কা।

প্রাক্তন বিশ্বসেরা মার্কিন তারকা বিলি জিন কিং আবার বলে দিয়েছেন, সেরিনা শনিবার মার্গারেট কোর্টের নজির স্পর্শ করে আসন্ন অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে তাঁর দেশেই রেকর্ড ভাঙবেন, সেটাই প্রার্থনা করছেন। শুধু কিংয়েরই নয়, টেনিস প্রেমীদের অধিকাংশেরই বোধহয় প্রার্থনা এখন এটাই!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement