আস্থা: ধোনিকে আগ্রাসী হতে বলছেন আজহার। ফাইল চিত্র
ক্রিকেটার জীবনের শেষ প্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছেন প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। তাঁর অবসর নিয়ে একাধিক জল্পনা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ধোনির সঙ্গে নির্বাচকদের কথা বলা গুরুত্বপূর্ণ। এমনটাই মত আর এক প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক মহম্মদ আজহারউদ্দিনের।
ভারতীয় অধিনায়ক হিসেবে অতীতে দু’টি বিশ্বকাপ জিতেছেন ধোনি। এ বারের বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে নিউজ়িল্যান্ডের কাছে হেরে ভারত বিদায় নেওয়ার পরে ধোনি দ্রুত অবসর ঘোষণা করতে পারেন। সেই জল্পনাই এই মুহূর্তে প্রবল ভারতীয় ক্রীড়া মহলে। কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের দল ঘোষণার আগেই ধোনি জানিয়ে দেন, ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্যারাশুট রেজিমেন্টের সঙ্গে আগামী দু’মাস ট্রেনিং করবেন তিনি। উড়িয়ে দেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের ক্যারিবিয়ান সফর শুরুর আগেই তাঁর অবসর গ্রহণের জল্পনা।
সোমবার আজহারের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, ধোনির মতো বড় ক্রিকেটাররা খেলোয়াড় জীবনের শেষ লগ্নে চলে এলে কী করা উচিত? যার উত্তরে আজহার বলেন, ‘‘একজন ক্রিকেটার খেলতে চায়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে নির্বাচকদের কথা বলতে হবে। কত দিন সে খেলবে, কী ভাবে খেলবে, কী হতে পারে এই সব বিষয় নিয়ে কথা বলা যেতেই পারে।’’ প্রাক্তন ভারতীয় অধিনায়ক যোগ করেন, ‘‘আর সেই ক্রিকেটারটি যদি বড় খেলোয়াড় হয়, তা হলে তার আস্থা অর্জন করে সরাসরি কথা বলতে হবে। আমার মতে, এতে কোনও না কোনও সিদ্ধান্ত বেরিয়ে আসবেই। না হলে জল্পনা আরও বাড়বে। সংবাদমাধ্যমে কেউ লিখবেন অবসর নেওয়া উচিত। কেউ বলবেন অবসরের সময় এখনও হয়নি। কারণ, এখনও পর্যন্ত ধোনির তরফ থেকে এ ব্যাপারে কোনও বিবৃতি আসেনি।’’
ভারতীয় ক্রিকেট মহলের অনেকেরই মত ৩৮ বছরের ধোনি এই মুহূর্তে নিজের সেরা সময় পেরিয়ে এসেছেন। কিন্তু আজহার মনে করেন, যদি শারীরিক ও মানসিক ভাবে ধোনি চাঙ্গা থাকেন তা হলে খেলতেই পারেন। আজহারের কথায়, ‘‘যদি শারীরিক ও মানসিক ভাবে ধোনি ফিট থাকে ও ভাল খেলতে পারে, তা হলে এখনও ও খেলতেই পারে। কিন্তু অনেক সময় এটা হয় যে দেশের হয়ে টানা দীর্ঘ সময় খেলার পরে কেউ কেউ মানসিক ভাবে ক্লান্ত হয়ে যায়। তখন খেলার ইচ্ছা থাকে না। যদি এখনও ধোনির দেশের হয়ে খেলার জন্য ১০০ শতাংশ ইচ্ছা থাকে, ও ক্লান্ত বোধ না করে, তা হলে ও বেশ ভাল ক্রিকেটার। এখনও খেলা চালিয়ে যেতে পারে।’’
আজহার এর পরেই বলেন, ‘‘তবে আমার ধোনির কাছে অনুরোধ, দেশের হয়ে মাঠে নামলে আগের মতো আগ্রাসী মেজাজেই ব্যাট করুক ও। অনেক সময় বয়স হলে রিফ্লেক্স কমে যায়। কিন্তু ধোনিকে দেখতে হবে ওর রিফ্লেক্স কমে গিয়েছে কি না। কিন্তু ধোনি যদি আগের মতো স্বাভাবিক খেলা মেলে ধরতে পারে, তা হলে ওর খেলে যাওয়া দেশের
জন্য দরকার।’’ হায়দরাবাদের এই প্রাক্তন ক্রিকেটার ধোনি সম্পর্কে আরও বলেন, ‘‘আগামী দু’মাস ধোনিকে দেশের হয়ে খেলার চাপ নিতে হবে না। ফলে বিশ্রামে পাবে ও। এমনও হতে পারে, তার পরে আগামী দিনে ও কী পরিকল্পনা নিতে চলেছে, তা জানাতে পারে। আমার মতে, যখন সময় হবে, তখনই ধোনি ঠিক সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবে।’’
রবিবারেই নির্বাচক কমিটির প্রধান এম এস কে প্রসাদ ব্যাখ্যা দিয়েছেন, বিশ্বকাপ চলার মাঝে টিম ম্যানেজমেন্ট ওপেনার চাওয়ায় কেন স্ট্যান্ড বাই থাকা অম্বাতি রায়ডুকে পাঠানো সম্ভব হয়নি। এ দিন সে ব্যাপারেও মুখ খোলেন আজহার। বলে দেন, ‘‘যখন স্ট্যান্ড বাই হিসেবে ক্রিকেটার রয়েছে, তখন প্রয়োজন পড়লে তাকেই পাঠানোর নিয়ম। আর তুমি যখন নির্বাচক, তখন কোচ ও অধিনায়কের অনুরোধ তুমি না শুনতেই পারো। বলতেই পারা যায়, আমরা তোমাদের অনুরোধ রাখতে পারছি না। আমি যখন অধিনায়ক ছিলাম, তখন তখন এ রকম অনেক বার আমাকে শুনতে হয়েছে। কাজেই প্রসাদের ব্যাখ্যা মানতে পারছি না।’’