মহড়া: গোয়া ম্যাচের প্রস্তুতিতে লাল-হলুদের মাগোমা ও রফিক। টুইটার
দুরন্ত ব্রাইট এনোবাখারে বনাম ভয়ঙ্কর ইগর আঙ্গুলো! আজ, শুক্রবার এসসি ইস্টবেঙ্গল-এফসি গোয়া ম্যাচে আকর্ষণের কেন্দ্রে দুই তারকার দ্বৈরথই।
ইগর এই মুহূর্তে সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ার দৌড়ে সকলের আগে। ১২ ম্যাচে ৯ গোল করেছেন এফসি গোয়ার স্পেনীয় স্ট্রাইকার। লাল-হলুদের নাইজিরীয় তারকা ছয় ম্যাচে মাত্র দু’গোল করলেও বিপক্ষের ডিফেন্ডারদের কাছে আতঙ্ক। প্রথম পর্বে গোয়ার চার ফুটবলারকে কাটিয়ে ব্রাইটের বিস্ময় গোল নিয়ে চর্চা এখনও চলছে। মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে আগের ম্যাচে দলের সেরা অস্ত্রকে বাদ দিয়েই প্রথম একাদশ গড়েছিলেন রবি ফাওলার। ০-১ হারের পরে ঘনিষ্ঠ মহলে লাল-হলুদ কোচ স্বীকার করেছিলেন, ব্রাইটকে শুরু থেকে খেলানো উচিত ছিল। ভুল শুধরে নিয়ে শুক্রবার কি প্রথম একাদশে উইগান অ্যাথলেটিকের প্রাক্তন তারকাকে খেলাবেন ফাওলার? কারণ, রক্ষণের দুই প্রধান ভরসা ইভান গঞ্জালেস ও জেমস ডোনাচিকে ছাড়াই খেলতে হবে গোয়াকে। কেরলের বিরুদ্ধে আগের ম্যাচে লাল কার্ড দেখেছেন ইভান। চোট পেয়ে ছিটকে গিয়েছেন জেমস। হলুদ কার্ড দেখায় কোচ খুয়ান ফের্নান্দোও রিজার্ভ বেঞ্চে বসতে পারবেন না। পরিস্থিতি সামলাতে হায়দরাবাদ এফসি থেকে ডিফেন্ডার আদিল খানকে সই করিয়েছে গোয়া। ফুটবল বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্রাইট শুরু থেকে খেললে আরও চাপে পড়ে যাবে গোয়া রক্ষণ। গোল করে এগিয়ে যাওয়ার এটাই সেরা সুযোগএসসি ইস্টবেঙ্গলের।
বৃহস্পতিবার ভার্চুয়াল সাংবাদিক বৈঠকে লাল-হলুদ কোচ নিজে না এসে পাঠিয়েছিলেন সহকারী অ্যান্টনি গ্র্যান্টকে। বিপক্ষের দুই সেরা ডিফেন্ডারের না থাকা যে স্বস্তি দিচ্ছে তা খোলাখুলিই স্বীকার করলেন তিনি। তবে ব্রাইটের শুরু থেকে খেলা প্রসঙ্গে ধোঁয়াশা রেখে গ্র্যান্ট বললেন, ‘‘প্রতি ম্যাচেই ফাউল করে ব্রাইটকে আটকানোর চেষ্টা করছে বিপক্ষের ফুটবলারেরা। ওকে সুরক্ষিত রাখা আমাদের দায়িত্ব। তাই ব্রাইটকে কোথায় ও কী ভাবে ব্যবহার করব, তা নিয়ে আমরা ভাবনা-চিন্তা করছি।’’ তিনি যোগ করলেন, ‘‘গোয়ার দুই সেরা ডিফেন্ডার না থাকাটা অবশ্যই আমাদের জন্য ভাল খবর। আমরাও প্রতিযোগিতার শুরুর দিকে অধিনায়ক ড্যানি ফক্সকে বেশ কয়েকটা ম্যাচে না পাওয়ার মূল্য দিয়েছিলাম। সেরা ফুটবলার ছিটকে গেলে সব দলই সমস্যায় পড়ে। জয়ের সরণিতে ফেরার এটাই সেরা সুযোগ।’’ চোট সারিয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছেন রাজু গায়কোয়াড়ও। মাঝমাঠে ফিরতে পারেন নির্বাসনমুক্ত অজয় ছেত্রী। আইএসএলে এই মরসুমে এখনও পর্যন্ত সব চেয়ে বেশি পাস খেলেছে গোয়া। ১৩ ম্যাচে মোট ৬৬২০টি। লাল-হলুদ কোচেরও অস্ত্র পাসিং ফুটবল। ১৩ ম্যাচে ৫১৩২টি পাস খেলেছেন জা মাগোমা, অ্যান্টনি পিলকিংটনরা। শুক্রবার নিজেদের মধ্যে পাস খেলার পাশাপাশি বিপক্ষের ছন্দ নষ্ট করে দেওয়াই লক্ষ্য লাল-হলুদ কোচের। প্রথম পর্বের দ্বৈরথে এই রণনীতি নিয়েই দশ জনে খেলে গোয়াকে আটকে এগিয়ে গিয়েছিল এসসি ইস্টবেঙ্গল। সেই ম্যাচে ৫৬ মিনিটে লাল কার্ড দেখেছিলেন ড্যানি। চোটের কারণে পিলকিংটনও দলে ছিলেন না। ব্রাইটের গোলে এগিয়ে যাওয়ার দু’মিনিটের মধ্যে লাল-হলুদ রক্ষণের ব্যর্থতায় সমতা ফেরান গোয়ার দেবেন্দ্র মুরগাওকর। রেফারির ভুল সিদ্ধান্ত বাতিল হয়েছিল ব্রাইটের ন্যায্য গোলও।
১৩ ম্যাচে ২০ পয়েন্ট নিয়ে আইএসএস টেবলে তৃতীয় স্থানে এই মুহূর্তে গোয়া। সমসংখ্যক ম্যাচ খেলে ১২ পয়েন্ট নিয়ে দশম স্থানে এসসি ইস্টবেঙ্গল। অঙ্কের বিচারে ব্রাইটদের প্লে-অফে খেলার সম্ভাবনা একেবারে শেষ হয়ে যায়নি। যদিও ওয়াকিবহাল মহলের মতে, প্রথম চারটি দলের মধ্যে থেকে লিগ শেষ করা কার্যত অসম্ভব লাল-হলুদের পক্ষে। আশাবাদী গ্র্যান্টের কথায়, ‘‘লিগ টেবলের উপরের দিকে যারা রয়েছে, তারা পয়েন্ট নষ্ট করলে সব দলের সামনেই এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। দেখা যাক কী হয়।’’