আপ্লুত: গোলাপি বলের স্মারক উপহার হাতে সানিয়া মির্জা। নিজস্ব চিত্র
টেস্ট ম্যাচে এত দর্শক কখনও দেখেননি সানিয়া মির্জা। ইডেনে এসেছেন। টি-টোয়েন্টি ও ওয়ান ডে ম্যাচ ছাড়া গ্যালারির প্রত্যেক কোণে সমর্থকদের ভিড় চোখে পড়েনি আগে। শুক্রবার ইডেনে এক নতুন অভিজ্ঞতা হল তাঁর। মাতৃত্বকালীন অবসর ও চোটের কারণে প্রায় দু’বছর কোর্টের বাইরে। সানিয়া জানিয়ে গেলেন, দ্রুতই তিনি কোর্টে ফিরতে চলেছেন। সব কিছু ঠিকঠাক এগোলে আগামী বছরের জানুয়ারিতে অস্ট্রেলীয় ওপেনেই ফের দেখা যেতে পারে ভারতীয় টেনিস সুন্দরীকে।
শুক্রবার ইডেনের ক্লাব হাউসে দাঁড়িয়ে সানিয়া বলছিলেন, ‘‘কোর্টে দ্রুতই ফিরব। আশা করছি, জানুয়ারিতে অস্ট্রেলীয় ওপেনেই ফের খেলতে দেখা যাবে আমাকে।’’ প্রথম বার টেস্ট ম্যাচ দেখতে এসে এত সমর্থন কী রকম উপভোগ করছেন তিনি? সানিয়ার কথায়, ‘‘অসাধারণ অভিজ্ঞতা। ইডেনে আগেও এসেছি। কিন্তু কখনও টেস্ট দেখা হয়নি। প্রথম বার দিনরাতের টেস্ট ম্যাচের সাক্ষী থাকতে পেরে খুব ভাল লাগছে।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘টেস্ট ম্যাচকে ঘিরে এত উত্তেজনা সত্যি দেখা যায় না। ইডেন উদাহরণ হয়ে থাকল।’’ সানিয়ার পোশাকেও গোলাপির আভা। কালো টপের উপরে গোলাপি ব্লেজার পরে ইডেনে এসেছেন। বলছিলেন, ‘‘গোলাপি বলে খেলা। কলকাতার প্রত্যেক কোণ এখন গোলাপি। আমিও ভাবলাম পরিবেশের সঙ্গে মানিয়েই নিজে সেজে উঠি।’’
সানিয়ার সঙ্গেই সিএবি বক্স থেকে বেরিয়ে আসছিলেন নিজ়ামের শহরের আরেক তারকা। তিনি ইডেনের সম্রাট মহম্মদ আজহারউদ্দিন। তাঁর টেস্ট জীবনের অভিষেক হয়েছিল ইডেনেই। প্রথম ইনিংসেই সেঞ্চুরি করেছিলেন প্রাক্তন অধিনায়ক। আজহারউদ্দিনের সঙ্গে কথা বলতে যাওয়ার সময়েই তাঁকে দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরলেন কৃষ্ণমাচারী শ্রীকান্ত। বললেন, ‘‘মনে আছে আজ্জু, তোমার অভিষেক ম্যাচের সেঞ্চুরি আমি মাঠের বাইরে বসে দেখেছিলাম। কারণ, সে ম্যাচে আমি দ্বাদশ ব্যক্তি। তাই সেঞ্চুরি ভাল করে উপভোগ করেছিলাম।’’
আজহারও তাঁর প্রথম সেঞ্চুরির স্মৃতিচারণা করে বলছিলেন, ‘‘ইডেনের সমর্থন এখনও একই রকম। মাঝে টেস্টের সেই জৌলুস হারালেও এ ম্যাচে তা ফিরে এসেছে।’’ দিনরাতের ম্যাচকে টেস্টের ভবিষ্যৎ হিসেবে দেখছেন ভারতীয় ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের অনেকেই। কিন্তু আজহারের প্রস্তাব, গোলাপি বলের টেস্টকে ভবিষ্যৎ হিসেবে দেখতে গেলে আরও নিয়মিত আয়োজন করতে হবে এই ম্যাচ। তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘লাল বলের ক্রিকেট ও গোলাপি বলের ক্রিকেট আলাদা। টেস্টের ভবিষ্যৎ হিসেবে যদি এই ম্যাচকে দেখা হয়, তা হলে আরও নিয়মিত আয়োজন করা উচিত এই টেস্ট। বেশ কয়েকটি ম্যাচ না হলে বোঝা যাবে না আদৌ গোলাপি বল টেস্ট খেলার যোগ্য কি না।’’
প্রথম ইনিংসে লাঞ্চের মধ্যেই বাংলাদেশের হাল দেখে তিনি হতাশ। তবে ভারতীয় পেস ত্রয়ীর প্রশংসা অবশ্যই করে গেলেন তিনি। বলছিলেন, ‘‘এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা পেস আক্রমণ ভারতের। অস্ট্রেলিয়াও খারাপ নয়। কিন্তু শামিরা বিশ্বের যে কোনও দলকে সমস্যায় ফেলবে।’’