বিস্ময়: নেটে শাহিদের ব্যাটিংয়ে নজর রাখছেন সম্বরণ। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
একরত্তি ছেলের নিখুঁত কভার ড্রাইভ, স্ট্রেট ড্রাইভের ভিডিয়ো ক্লিপিংস টুইট করেছেন মাইকেল ভন, কেভিন পিটারসেনরা। যা দেখে ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহালিও অবাক হয়ে জানতে চেয়েছেন সেই খুদে প্রতিভার পরিচয়।
বেহালার মুচিপাড়ার সেই তিন বছর দু’মাসের শেখ শাহিদের অবিশ্বাস্য প্রতিভার কথা সোমবার প্রকাশিত হয়েছিল আনন্দবাজারে। যে প্রতিবেদনে জানা গিয়েছিল, বাড়ির ছাদে অনুশীলন করালেও শাহিদের বাবা শেখ শামসের ছেলেকে কোনও বিখ্যাত কোচিং ক্যাম্পে ভর্তি করতে চান। যা শুনেই শাহিদকে নিখরচায় নিজের অ্যাকাডেমিতে খেলা শেখানোর জন্য ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন রঞ্জি ট্রফি জয়ী বাংলার অধিনায়ক সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
মঙ্গলবার সকালে দক্ষিণ কলকাতার বিবেকানন্দ পার্কে সম্বরণের অ্যাকাডেমিতে খুদে শাহিদকে নিয়ে হাজির হয়ে গেলেন শামসের ও তাঁর স্ত্রী সোফিয়া। মায়ের কোলে চেপে অ্যাকাডেমিতে ঢুকেই তাঁর প্লাস্টিকের ব্যাট হাতে বাবার সঙ্গে প্রথমে ক্রিকেট খেলতে শুরু করে দেয় শাহিদ। তার পরে সম্বরণবাবু খুদে ক্রিকেটারটিকে নিয়ে যান নেটে। সেখানে ম্যাটেই প্লাস্টিকের বল ছোড়া হচ্ছিল শাহিদকে। আর সোজা ব্যাটে মহানন্দে সেই বলগুলো খেলে যাচ্ছিল এই বিস্ময় প্রতিভা। উইকেটের পিছনে দাঁড়িয়ে একমনে শাহিদের পায়ের নড়াচড়া ও ব্যাটের ওঠানামা লক্ষ করছিলেন সম্বরণবাবু। শাহিদের ব্যাটিং দেখতে নেটের কাছে ভিড় জমিয়েছিল অ্যাকাডেমির বাকি শিক্ষার্থী ক্রিকেটার ও তাদের অভিভাবকেরাও। কেউ তাকে দেয় চকোলেট। কেউ বা আদর করে তুলে নেয় কোলে। কেউ কেউ খুদে প্রতিভার সঙ্গে নিজস্বীও তুলতে শুরু করেন।
আরও পড়ুন: আইসিসি বর্ষসেরা দু’দলেই মন্ধানা, আছেন ঝুলনও
শাহিদের বাবা বলছিলেন, ‘‘ব্যাট করার সময়ে একদিন সামনে বালতি ছিল। সেই বালতিতেই ডান পা ঢুকিয়ে খেলা শুরু করেছিল ডান হাতি শাহিদ। তার পরে এক মাস এ ভাবেই ব্যাট করার ফলে এখন ডান পায়ের অবস্থান ঠিক জায়গায় থাকে।’’
পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সম্বরণবাবু বলেন, ‘‘শাহিদের বয়স খুবই কম। এই বয়সে এ রকম ব্যাট ধরা বা সোজা মারতে কাউকে দেখিনি। ও কিন্তু কোনও বল মিড উইকেট দিয়ে মারে না। ও সব বল মারে বোলারের দিকে বা কভারের দিকে। শাহিদ আমার দেখা এক অবিশ্বাস্য প্রতিভা। ওর সমবয়সিদের চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে ক্রিকেট ব্যাট হাতে। ছ’-সাত বছরের বাচ্চারাও এ রকম সোজা ব্যাটে খেলতে পারে না।’’