বজরং পুনিয়া এবং সাক্ষী মালিক । —ফাইল চিত্র।
সর্বভারতীয় কুস্তি সংস্থার সভাপতি ব্রিজভূষণ শরণ সিংহের বিরুদ্ধে দেশের কুস্তিগিরদের একাংশের অভিযোগ কি কিছুটা লঘু হয়ে গিয়েছে? সাক্ষী মালিক, বজরং পুনিয়ারা কি কিছুটা কোণঠাসা? তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন সাক্ষী।
নাবালিকা কুস্তিগিরের বাবা আদালতে নিজের অভিযোগের বয়ান বদল করেছেন। ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন প্রথমে। পরে তিনি জানিয়েছেন, মেয়ের প্রতি বঞ্চনার সুরাহা না পেয়ে রাগের মাথায় হেনস্থার অভিযোগ করেছিলেন। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে পসকো আইনে মামলা রুজু হয়েছিল। পরে তিনি আদালতে গিয়ে অভিযোগ বদল করায় বিজেপি সাংসদকে পসকো আইন অভিযুক্ত করা যাচ্ছে না।
ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে নাবালিকা কুস্তিগিরের বাবার অভিযোগ বদল নিয়ে সাক্ষী বলেছেন, ‘‘প্রথম বার নাবালিকা কুস্তিগির ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে যে অভিযোগ করেছিল, তার ভিত্তিতে ব্রিজভূষণকে তখনই গ্রেফতার করা হলে বয়ান বদল করত না। শুধু তাই নয়, অন্য মেয়েরাও সাহস করে এগিয়ে এসে অভিযোগ জানাতে পারত। যত দূর জানি বয়ান বদলের জন্য চাপ দেওয়া হয়েছে। হুমকি দেওয়া হয়েছে। এখন সবটাই আদালত বিচার করবে।’’ চাপ থাকলেও অভিযোগ বদল করা ভুল হয়েছে বলেও মনে করছেন সাক্ষীরা। আক্ষেপ থাকলেও লড়াই ছাড়তে চান না তাঁরা।
নাবালিকা কুস্তিগিরের বাবা অভিযোগ পরিবর্তন করার পর থেকেই বজরং, সাক্ষীরা চাপ এবং হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করছেন। প্রতিবাদী কুস্তিগিরদের দাবি, ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে অভিযোগ লঘু করতেই হুমকি দেওয়া হয়েছে। যদিও কে বা কারা হুমকি দিচ্ছেন তা বলেননি প্রতিবাদীরা। দিল্লি পুলিশের তদন্তকারীরা ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে চার্জশিটে কী কী অভিযোগ এনেছেন, তা খতিয়ে দেখছেন প্রতিবাদীদের আইনজীবীরা। তাঁদের পক্ষে আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন বিনেশ ফোগট। সাক্ষী বলেছেন, ‘‘আমরা আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলছি। চার্জশিট খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তার পর আমরা পরবর্তী পদক্ষেপের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব।’’
আপনারা কি আশাবাদী? ৩০ বছরের অলিম্পিক্স পদকজয়ী বলেছেন, ‘‘আইনজীবীরা যদি খতিয়ে দেখে বলেন ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে দেওয়া চার্জশিট যথেষ্ট শক্তিশালী এবং আদালতে লড়াই করলে সুবিচারের আশা রয়েছে, তা হলে ঠিক আছে। শুনানির পর আদালত ব্রিজভূষণকে গ্রেফতার করার নির্দেশ দিলে মহিলা কুস্তিগিরেরা বিচার পাবে। অনেকেই ব্রিজভূষণের হেনস্থার শিকার।’’
কেন্দ্রীয় সরকারের আশ্বাস মতো ১৫ জুন ১০০০ পাতার চার্জশিট আদালতে পেশ করা হয়েছে ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে। ১৫০ জন সাক্ষীর বয়ান নথিভুক্ত করেছে দিল্লি পুলিশ। ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া পসকো ধারায় মামলা খারিজ করার আর্জি জানিয়েছে দিল্লি পুলিশ। তাদের বক্তব্য, এই অভিযোগের পক্ষে কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
অন্য দিকে, কুস্তিগিরদের বিরুদ্ধে করা এফআইআর তুলে নিতে পারে দিল্লি পুলিশ। গত ২৮ মে নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধনের দিন প্রতিবাদী কুস্তিগিরেরা পদযাত্রা করার চেষ্টা করায় তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছিল পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনভঙ্গ এবং অশান্তি তৈরির চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছিল।