বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যানদের অনেকের বিরুদ্ধেই খেলেছেন ওয়াসিম আক্রম। ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা পেসার তিনি। পাকিস্তানের প্রাক্তন অধিনায়ক নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই বেছে নিলেন সর্বকালের সেরা পাঁচ ব্যাটসম্যানকে। আর সেই বাছাই জন্ম দিচ্ছে বিতর্ক। কারণ, তাতে সচিনের স্থান হয়েছে পাঁচ নম্বরে, তালিকার তলানিতে। যা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। শুরু হয়েছে বিতর্কও।
আক্রমের তালিকায় এক নম্বর ব্যাটসম্যান হলেন ভিভিয়ান রিচার্ডস। মুখে চুইংগাম নিয়ে ব্যাট করতেন। আর চুইংগাম চিবিয়ে ফেলার মতোই অনায়াস ভঙ্গিতে দাপট দেখাতেন। বোলারদের শাসন করতেন রাজার ভঙ্গিতে। যা আত্মবিশ্বাস শুষে নিত বোলারদের।
১২১ টেস্টে ৫০.২৩ গড়ে ৮৫৪০ রান করেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রাক্তন অধিনায়ক। রয়েছে ২৪ সেঞ্চুরি, ৪৫ হাফসেঞ্চুরি। সর্বাধিক ২৯১। ওয়ানডে ক্রিকেটে ১৮৭ ম্যাচে ৪৭ গড়ে করেছেন ৬৭২১ রান। শতরানের সংখ্যা ১১, হাফ-সেঞ্চুরির সংখ্যা ৪৫। সর্বাধিক অপরাজিত ১৮৯। স্ট্রাইক রেট ৯০.২০।
আক্রমের সেরা ব্যাটসম্যানের তালিকায় দুইয়ে আছেন মার্টিন ক্রো। নিউজিল্যান্ডের প্রাক্তন অধিনায়ক ব্যাট হাতে অনেক কীর্তির মালিক। চোটের জন্য কেরিয়ারে বাধা না পড়লে তাঁর পরিসংখ্যান অনেক বেশি ঝলমলে দেখাত। কিন্তু তার পরও আক্রমের মনে উজ্জ্বল তাঁর ব্যাটিং-দক্ষতা।
৭৭ টেস্টে ৪৫.৩৬ গড়ে ৫৪৪৪ রান করেছিলেন জেফ ক্রোর ভাই। যাতে ছিল ১৭ সেঞ্চুরি, ১৮ হাফ-সেঞ্চুরি। সর্বাধিক ২৯৯। ৫০ ওভারের ফরম্যাটে ১৪৩ ম্যাচে ৩৮.৫৫ গড়ে করেছিলেন ৪৭০৪ রান। এর মধ্যে চার সেঞ্চুরি ও ৩৪ হাফ-সেঞ্চুরি রয়েছে। সর্বাধিক নট আউট ১০৭। স্ট্রাইক রেট ৭২.৬৩।
এই তালিকায় তিনে আছেন ব্রায়ান লারা। অনেকের মতে, বাঁহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে সর্বকালের সেরার মুকুট ত্রিনিদাদের রাজপুত্রেরই প্রাপ্য। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে অনেক স্মরণীয় জয় উপহার দিয়েছেন তিনি। দুরন্ত ব্যাটিংয়ে জিতেছেন ক্রিকেটপ্রেমীদের হৃদয়। যার মধ্যে আক্রমও পড়ছেন।
১৩১ টেস্টে ৫২.৮৮ গড়ে ১১৯৫৩ রান করেছেন লারা। ৩৪ সেঞ্চুরি ও ৪৮ হাফ-সেঞ্চুরির মালিক তিনি। সর্বাধিক অপরাজিত ৪০০। যা টেস্টে এখনও রেকর্ড। ২৯৯ একদিনের ম্যাচে ৪০.৪৮ গড়ে করেছেন ১০৪০৫ রান। ১৯ শতরান, ৬৩ অর্ধশতরান করেছেন তিনি। সর্বাধিক ১৬৯। স্ট্রাইক রেট ৭৯.৫১।
আক্রমের তালিকায় চারে রয়েছেন পাকিস্তানের প্রাক্তন অধিনায়ক ইনজামাম উল হক। পেসারদের বিরুদ্ধে ছিলেন বরাবর স্বচ্ছন্দ। সেই দেশের সেরা ব্যাটসম্যানদের মধ্যে অবশ্যই থাকবেন তিনি। শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবেই নন, অধিনায়ক হিসেবেও দেশকে ভরসা জুগিয়েছিলেন তিনি।
১২০ টেস্টে ৪৯.৬০ গড়ে ৮৮৩০ রান করেছেন ইনজামাম। ২৫ সেঞ্চুরি ও ৪৬ হাফ-সেঞ্চুরির মালিক তিনি। সর্বাধিক ৩২৯। ৩৭৮ একদিনের ম্যাচে ৩৯.৫২ গড়ে তিনি করেছেন ১১৭৩৯ রান। যার মধ্যে রয়েছে ১০ সেঞ্চুরি ও ৮৩ হাফ-সেঞ্চুরি। সর্বাধিক অপরাজিত ১৩৭। স্ট্রাইক রেট ৭৪.২৪।
আক্রমের তালিকায় সবার শেষে রয়েছেন সচিন তেন্ডুলকর। ‘গড অফ ক্রিকেট’ বলে চিহ্নিত মুম্বইকরের এত পরে থাকা জন্ম দিয়েছে বিতর্কের। মাস্টার ব্লাস্টার সচিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে রয়েছে অজস্র রেকর্ড, অগুন্তি কীর্তি। তাই ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে তাঁর অবস্থান নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
পরিসংখ্যানে সবার চেয়ে এগিয়ে সচিন। ২০০ টেস্টে ৫৩.৭৮ গড়ে ১৫৯২১ রান করেছেন তিনি। শতরানের সংখ্যা ৫১, হাফ-সেঞ্চুরির সংখ্যা ৬৮। সর্বাধিক অপরাজিত ২৪৮। একদিনের ক্রিকেটে ৪৬৩ ম্যাচে ৪৪.৮৩ গড়ে করেছেন ১৮৪২৬ রান। ৪৯ শতরান ও ৯৬ অর্ধশতরানের মালিক তিনি। প্রথম ব্যক্তি হিসেবে ওয়ানডে ক্রিকেটে করেছেন ডাবল সেঞ্চুরি।