তৃপ্ত: ১২তম ফরাসি ওপেনের ট্রফি হাতে নাদাল। ফাইল চিত্র
রাফায়েল নাদাল বললেন, ‘‘রজার ফেডেরারের রেকর্ড নিয়ে আমি কোনও ঘোরের মধ্যে থাকি না। এটা নিয়ে কোনও চাপ নেই। তবে অবশ্যই সেটা প্রেরণা, যা আমাকে ভাল খেলতে উদ্বুদ্ধ করে।’’
ফরাসি ওপেনে একটানা অবিশ্বাস্য রকম সফল নাদাল আরও বলেছেন, ‘‘প্রতিবেশীর বাড়ি আপনার বাড়ির থেকে বড় হতেই পারে। অথবা তার টিভি বা বাগান। কিন্তু তার জন্য আপনি হতাশ হতে পারেন না। আমি অন্তত জীবনকে এই চোখে দেখি না।’’ এখানেই না থেমে স্পেনীয় মহাতারকা যোগ করেছেন, ‘‘যদি আপনি জানতে চান যে, আমিও ওই রকম বাড়ি বা টিভি চাই কি না, তাহলে অবশ্যই বলব, চাই। রজারের রেকর্ডের ব্যাপারটাও আমার কাছে সে রকমই। কিন্তু যদি বলেন, সেটা আমার টেনিস জীবনের একমাত্র লক্ষ্য কি না, তা হলে কিন্তু বলব কখনওই না। আমি কিন্তু এই সব নজিরের কথা ভেবে রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠি না। বা রজারের রেকর্ডের কথা ভেবেই অনুশীলন করি না, ম্যাচ খেলি না। টেনিস খেলাটা আমার কাছে কখনওই এ রকম নয়।’’
রজারের মতোই টেনিস জীবনে রাফার নজিরও কম নয়। যা নিয়ে ফরাসি ওপেনের রাজা মন্তব্য করেছেন, ‘‘আমার জীবনে এতদিনে যা যা হয়েছে বা হচ্ছে, তার জন্য নিজেকে সত্যিই ভাগ্যবান মনে করি। যদি খেলা ছাড়ার পরে দেখি, আরও কয়েকটা গ্র্যান্ড স্ল্যাম আমি জিতেছি এবং রজারের খুব কাছেই আছি আমি, তা হলে তো নিজেকে আরও ভাগ্যবান মনে করব। এবং সেটা সত্যিই আমার কাছে অবিশ্বাস্য কিছু হবে।’’ সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘‘আসলে টেনিসটা উপভোগ করতে চাই। যতদিন সেটা করব ততদিন নিজের মতো খেলে যাওয়াই লক্ষ্য। তবে অবশ্যই নিজেকে সেরা জায়গায় রেখে সেরাদের সঙ্গে লড়াই করাই আমার স্বপ্ন।’’
এই মরসুমেই অস্ট্রেলীয় ওপেনের ফাইনালে নাদাল বিশ্রী ভাবে হেরে যান নোভাক জোকোভিচের কাছে। তার পরে দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে এই মরসুমে প্রথম ট্রফি জেতেন রোমে। এবং যথারীতি ফরাসি ওপেনে তিনিই শেষ হাসি হেসেছেন। অবশ্য এই মরসুমেও চোট তাঁকে ভুগিয়েছে। মার্চে ইন্ডিয়ান ওয়েলসে ডান হাঁটুর চোটের জন্য ফেডেরারকে ম্যাচ ছেড়ে দেন। যা নিয়ে নাদাল বলেছেন, ‘‘চোট আঘাত থাকবেই। তবে আমি কিন্তু সব সময় নিজের মানসিক অবস্থা নিয়ে বেশি ভাবি এবং মনোযোগ দিই। এটা ঘটনা যে বারবার চোট ফিরে এলে মানসিক ভাবে যে কোনও মানুষের মতোই দুর্বল হয়ে পড়ি। যে কারণে মন্টি কার্লো ও বার্সেলোনায় এ বার আমার অভিজ্ঞতা ভাল নয়। তখন শরীরের এমন অবস্থা ছিল যে সত্যিই আমার আর খেলতে ভাল লাগছিল না।’’
নাদালকে মনে করানো হয়, বার্সেলোনা ওপেনের কথা। কেন তিনি প্রথম রাউন্ডে বিশ্বের ৬৩ নম্বর আর্জেন্টিনার লিয়োনার্দো মায়ারের বিরুদ্ধে প্রচুর লড়াই করে জিতে নিজেকে হোটেলে বন্দি করে রেখেছিলেন? নাদাল জবাব দিয়েছেন, ‘‘আসলে তখন আমি বোঝার চেষ্টা করছিলাম, আমার নিজের মধ্যে কোথায়, কেন এবং কী সমস্যা হচ্ছে। তখন মনে হয়েছিল কিছু দিন না খেললে হয়তো ব্যাপারটা ঠিক হয়ে যাবে। অথবা আমার মনোভাবে বদল আনাটা জরুরি।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘শেষ পর্যন্ত কিন্তু আমি নিজেকে ফিরে পেয়েছি। সেটা প্যারিসে প্রমাণ হয়েছে।’’