টেনিস কিংবদন্তি রজার ফেডেরার
করোনা অতিমারির কারণে বাকিদের মতো তিনিও পরিবার নিয়ে সুইৎজারল্যান্ডে গৃহবন্দি হয়ে রয়েছেন। টেনিস কিংবদন্তি রজার ফেডেরার জানালেন, গত তিন মাস বাবা-মার সঙ্গে দেখা করতে পারেননি তিনি।
টেনিস জীবনের শুরু থেকে কোনও দিন ২০টি গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালিক এক সপ্তাহের বেশি বাবা, ৭৪ বছরের রবার্ট এবং মা, ৬৮ বছরের লিনেটকে ছেড়ে থাকেননি। তাঁদের হাত ধরেই টেনিসের হাতেখড়ি হয়েছিল ফেডেরারের। রবার্ট এখন রয়েছেন রজার ফেডেরার ফাউন্ডেশনের দায়িত্বে। সেখানে তিনি দুঃস্থ শিশুদের শিক্ষা এবং খেলাধুলোর প্রসারের বিষয়ের দেখভাল করেন।
‘মায়ামি লিভিং ম্যাগাজিন’-এ দেওয়া সাক্ষাৎকারে ফেডেরার বলেছেন, “গত ২৫ বছরে এত বেশি দিন বাড়িতে সময় কাটাইনি। বলা যায়, পাহাড়ের মাথায় থাকি বলে আমরা অনেকটাই সুরক্ষিত রয়েছি এবং সেখানে কাউকে আমরা দেখতেও পাই না।” আগামী শনিবার (৮ অগস্ট) ৩৯ বছরে পা রাখবেন এই টেনিস কিংবদন্তি। চলতি বছরে শেষবার তাঁকে দেখা গিয়েছিল বছরের শুরুতে অস্ট্রেলীয় ওপেন টেনিসের মঞ্চে। তবে সেমিফাইনালে বিশ্বের এক নম্বর তারকা নোভাক জোকোভিচের কাছে হেরে তিনি বিদায় নেন। গত মাসেই হাঁটুতে আবার অস্ত্রোপচারের কারণে রজার জানিয়ে দেন. চলতি মরসুমে তিনি আর কোর্টে ফিরবেন না। যে সিদ্ধান্তের পরে অনেকেই মনে করছেন, ফেডেরারের ২০টি গ্র্যান্ড স্ল্যামের রেকর্ড এই বছরেই স্পর্শ করে ফেলতে পারেন রাফায়েল নাদাল এবং নোভাক।
তবে তা নিয়ে আক্ষেপ নেই ফেডেরারের। তিনি বলেছেন, “নিয়ম মেনে চলার ব্যাপারে আমি বরাবর খুব কড়া। করোনার কারণে তিন মাস বাবা-মা’র সঙ্গে দেখা হয়নি। তবে এই সময়ে আমরা সন্তানদের যতটা ভাল শিক্ষা দেওয়া যায়, তার চেষ্টা করছি। কিন্তু এই বিচিত্র সময় আরও একটা শিক্ষা দিয়ে গেল আমাদের। পরিবার, বন্ধুবান্ধব, সুস্থ দেহ এবং আনন্দ যে জীবনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা আরও একবার উপলব্ধি করার সুযোগ দিল এই সময়।”
সম্প্রতি ইটালিতে গিয়ে দুই খুদে মেয়ে টেনিস খেলোয়াড়ের সঙ্গে দেখা করে আসেন ফেডেরার। সেই ভিডিয়োও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। গত এপ্রিলে করোনা সংক্রমণের সময় ইটালির দুই বন্ধু ভিত্তোরিয়া ওলিভেরি এবং কারোলা পেসিনা মুখোমুখি দুই বাড়ির ছাদে দাঁড়িয়ে টেনিস খেলছিল। লকডাউনে এই দুই খুদের দুর্দান্ত টেনিসের ভিডিয়ো দেখে অভিভূত হয়ে গিয়েছিলেন ফেডেরারও। তাই গত মাসে সেই দুই কন্যার সঙ্গে দেখা করতে আসেন।চোখের সামনে প্রিয় তারকাকে দেখতে পেয়ে বিস্মিত হয়ে যায় দুই মেয়ে। পরে তাদের পাস্তা পার্টিতে আমন্ত্রণ জানান ফেডেরার এবং বেশ কিছুক্ষণ ছাদে টেনিসও খেলেন। বলেছিলেন, “এত বছর ধরে টেনিস খেলছি ঠিকই, কিন্তু এমন ঘটনা এই প্রথমবার দেখলাম। ইচ্ছা আছে ওদের নাদালের অ্যাকাডেমিতে পাঠানোর।”