স্বপ্নের ফাইনালের দিকে অস্ট্রেলীয় ওপেন

রাফার অপেক্ষায় রাজা রজার

গ্যালারিতে হাজির এক কিংবদন্তি দেখলেন কোর্টের মধ্যে আর এক কিংবদন্তির একের পর এক স্বপ্নের ব্যাকহ্যান্ড। রড লেভারের মুখে তখন মৃদু হাসি। হয়তো নিজের মনেই বলছেন, তাঁর নামাঙ্কিত কোর্টে তো ঠিক এ রকম টেনিসই হওয়ার কথা।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:২৫
Share:

ওয়ারিঙ্কাকে পাঁচ সেটের লড়াইয়ে হারিয়ে ফেডেরার। বৃহস্পতিবার মেলবোর্নে। ছবি: রয়টার্স।

গ্যালারিতে হাজির এক কিংবদন্তি দেখলেন কোর্টের মধ্যে আর এক কিংবদন্তির একের পর এক স্বপ্নের ব্যাকহ্যান্ড।

Advertisement

রড লেভারের মুখে তখন মৃদু হাসি। হয়তো নিজের মনেই বলছেন, তাঁর নামাঙ্কিত কোর্টে তো ঠিক এ রকম টেনিসই হওয়ার কথা।

আর হবে নাই বা কেন। কোর্টে যে তখন রাজা রজার। যে রাজা পাঁচ সেটের লড়াইয়ে হারিয়ে দিলেন চতুর্থ বাছাই স্ট্যান ওয়ারিঙ্কাকে।

Advertisement

জকোভিচ-মারের মতো তারকারা যখন আগেভাগেই শীতঘুমে চলে গিয়েছেন, অস্ট্রেলীয় ওপেনের ঐতিহ্য বহন করছে ফেডেরারের দু’হাত। চোট থেকে ফেরার পরে সবার ধারণা ছিল, আর নতুন কিছু দেওয়ার নেই এই কিংবদন্তির। যা দেখার দেখিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু কী ভুলটাই না ভেবেছিলেন সবাই।

“ফাইনালে নিজের সব কিছু নিংড়ে দিয়ে যাব।
তাতে যদি পরের পাঁচ মাস হাঁটতে নাও পারি, তাতেও ক্ষতি নেই।” —রজার ফেডেরার।

এঁর নাম তো ফেডেরার। যে পঁয়ত্রিশ বছরেও সমান সাবলীল। যে এখনও বিপক্ষকে শুধু দু’একটা সূক্ষ্ম টাচেই পর্যুদস্ত করতে পারেন। ওয়ারিঙ্কার সামনে তো সেই ফেডেরারকেই দেখা গেল। এক সময় যাঁর বিরুদ্ধে কোর্টে নামা মানে প্রতিপক্ষ আগে থেকেই তৈরি থাকত, কী ঘটতে চলেছে ভেবে। জানত, যতই তারা স্বপ্নের টেনিস খেলুক না কেন, দিনের শেষে ফেডেরারই শেষ হাসিটা হাসবেন।

বৃহস্পতিবার মেলবোর্ন দেখল সেই ভিন্টেজ ফেডেরারকে। যাঁর ব্যাকহ্যান্ড ও সার্ভিসের সামনে কোনও জবাব খুঁজে পেলেন না ওয়ারিঙ্কা। পাঁচ সেটের লড়াইয়ে ৭-৫, ৬-৩,১-৬,৪-৬, ও ৬-৩ জিতে অস্ট্রেলীয় ওপেনের ফাইনালে উঠলেন সুইৎজারল্যান্ডের সেই ‘বুড়ো।’

ম্যাচের ছবি দেখলে টের পাওয়া যাবে শুরুর থেকেই আক্রমণাত্মক টেনিস খেললেন রজার। প্রথম দু’সেটে রজারের থেকে চার বছরের ছোট ওয়ারিঙ্কা কোনও উত্তর খুঁজে পাননি। প্রতিটা রিটার্ন নিঁখুত। দুরন্ত সার্ভ। কোনও ব্রেক না খেয়ে ম্যাচের গতি নিজের নিয়ন্ত্রণে আনেন ফেডেরার।

তার পরে হাঁটুর সমস্যায় মেডিক্যাল ব্রেক নিয়ে ড্রেসিংরুমে ফেরেন ওয়ারিঙ্কা। কোর্টে ফেরার পর যেন নিজের ফেলে আসা ফর্মটাও যেন সঙ্গে করে নিয়ে আসেন। বুঝিয়ে দেন কেন তিনি চতুর্থ বাছাই। নিমেষে দু’বার ব্রেক করে তৃতীয় সেট ৬-১ জিতে বেরিয়ে যান স্ট্যান। চতুর্থ সেটও ৬-৪ জেতেন ওয়ারিঙ্কা। তার পর আবার মেডিক্যাল ব্রেকে যান ফেডেরার। রড লেভার এরিনার গ্যালারি তখন একটু আশঙ্কায় ছিল। হয়তো ভাবছিল, এই দিনটা শেষমেশ ফেডেরারের হবে কি না। পঞ্চম সেটেও ব্রেক করার মুখে ছিলেন ওয়ারিঙ্কা। কিন্তু উল্টে ব্রেক করেন ফেডেরার। যার পর আর ম্যাচে ফিরতে পারেননি ওয়ারিঙ্কা।

ম্যাচ শেষে টেনিস দুনিয়ায় আবার একটাই প্রার্থনা। ফাইনালে উঠুন রাফায়েল নাদাল। ফাইনালটা হোক সেই স্বপ্নের— রাফা বনাম রজারের।

আর ২০১০-এর পরে ফের অস্ট্রেলীয় ওপেন ফাইনালে উঠে রজার একটা কথাই বলছেন, ‘‘হ্যাঁ এখন বলতে পারি, এটা সত্যি। এত দিন আমাকে ফাইনাল নিয়ে প্রশ্ন করা হলে এড়িয়ে যেতাম। আজ বলব, ফাইনালে উঠেছি। আর ফাইনালে নিজের সব কিছু নিংড়ে দিয়ে যাব। তাতে যদি পরের পাঁচ মাস হাঁটতে নাও পারি, তাতেও ক্ষতি নেই।’’

কথাতেই পরিষ্কার আঠারো নম্বরে পৌঁছতে কতটা বদ্ধপরিকর ফেড-এক্স!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement