সংশয় কাটিয়ে স্বমূর্তিতে মহারণের দিকে ফেদাল

যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের দ্বিতীয় সপ্তাহে এসে পুরনো ছন্দ ফিরে পেয়েছে ‘ফেদাল’। যার জন্য রজার বনাম রাফা লড়াইয়ের চেহারাটা ক্রমে স্পষ্ট হয়ে উঠছে। শনিবার যেমন তৃতীয় রাউন্ডের বাধা টপকে গেলেন দু’জনেই।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৪:৪৭
Share:

যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে সেমিফাইনালে মুখোমুখি হওয়ার দিকে ফেডেরার ও নাদাল। ছবি: এএফপি

ঠিক সাত দিন পরে যুক্তরাষ্ট্র ওপেন ফাইনাল। কিন্তু ১০ সেপ্টেম্বর নয়, গোটা টেনিস দুনিয়া তাকিয়ে আছে অন্য আর একটা তারিখের দিকে। ৮ সেপ্টেম্বর। যে দিন ফ্লাশিং মেডোজে প্রথম মুখোমুখি হতে পারেন টেনিস গ্রহের দুই কিংবদন্তি— রজার ফেডেরার এবং রাফায়েল নাদাল।

Advertisement

কারণ, যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের দ্বিতীয় সপ্তাহে এসে পুরনো ছন্দ ফিরে পেয়েছে ‘ফেদাল’। যার জন্য রজার বনাম রাফা লড়াইয়ের চেহারাটা ক্রমে স্পষ্ট হয়ে উঠছে। শনিবার যেমন তৃতীয় রাউন্ডের বাধা টপকে গেলেন দু’জনেই। লিওনার্দো মেয়ারকে ৬-৭, ৬-৩, ৬-১, ৬-৪ হারালেন নাদাল। অন্য আর এক লড়াইয়ে স্ট্রেট সেটেই জিতলেন ফেডেরার। ফেলিসিয়ানো লোপেজকে তিনি হারালেন ৬-৩, ৬-৩, ৭-৫।

প্রথম সপ্তাহটা দুই মহাতারকার কাছে খুব একটা সহজ ছিল না। কিন্তু টুর্নামেন্ট যত এগিয়েছে, ততই ছন্দে ফিরছেন ফেডেরার-নাদাল। আগ্রাসী এবং আক্রমণাত্মক হয়ে উঠছেন দু’জনে।

Advertisement

নাদাল বনাম মেয়ার লড়াইয়ে দ্বিতীয় সেটে ১৩টা ব্রেক পয়েন্ট পেয়েছিলেন নাদাল। কিন্তু কাজে লাগাতে পারেননি। কিন্তু ১৪ নম্বর ব্রেক পয়েন্টে এসে নাদালের ফোরহ্যান্ড রিটার্ন সামলাতে পারেননি মেয়ার। দ্বিতীয় সেটে ৪-৩ এগিয়ে গিয়ে মুষ্টিবদ্ধ হাত চার বার বুকে চাপড়ালেন নাদাল। হুঙ্কার দিলেন, ‘ভামোস’।

চাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার প্রতিক্রিয়া কি? ম্যাচ জেতার পরে নাদাল স্বীকার করে নিলেন, ‘‘অবশ্যই চাপ থাকে এ সব ক্ষেত্রে। এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন আপনি, কিন্তু কাজে লাগাতে পারছেন না, এই অবস্থায় চাপটা বাড়া স্বাভাবিক।’’ তবে নাদাল আশা করছেন, এই ম্যাচের শেষ তিন সেট তাঁর বাকি যাত্রাপথকে মসৃণ করে তুলবে। ‘‘এই ধরনের ম্যাচ কিন্তু দরকার আছে। তাতে আপনি পুরো তৈরি হয়ে যাবেন পরের রাউন্ডগুলোর জন্য। আমি এখন দ্বিতীয় সপ্তাহে পৌঁছে গিয়েছি। সেটাই বড় ব্যাপার নয় কী?’’

ফেডেরারের ক্ষেত্রেও কি ছবিটা বদলাচ্ছে স্ল্যামের দ্বিতীয় সপ্তাহে এসে? ইঙ্গিতটা সে রকমই। প্রথম দু’টো ম্যাচ পাঁচ সেটে জেতার পরে রবিবার তিন সেটের জয়ে স্বমহিমায় পাওয়া গেল সুইস কিংবদন্তিকে। পাঁচ বারের যুক্তরাষ্ট্র ওপেন চ্যাম্পিয়ন বলছেন, ‘‘নিজের ফর্মে আমি খুশি। কোর্টে নেমে বাড়তি এনার্জি পাচ্ছি। এটাই আমাকে স্বস্তি দিচ্ছে। আমি ভেবেছিলাম, দু’টো পাঁচ সেটের লড়াইয়ের পরে ক্লান্ত হয়ে পড়ব। কোর্টে নিজের সেরাটা দিতে সমস্যা হবে। কিন্তু সেটা হয়নি।’’

টেনিস বিশেষজ্ঞদের মুখে এখন একটাই কথা। ফেডেরার-নাদালের হয়তো যুক্তরাষ্ট্র ওপেন খেতাব দরকার আছে, কিন্তু তার চেয়েও বেশি যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের দরকার এই দু’জনকে। নিউ ইয়র্ক অন্তত একবার কোর্টে মুখোমুখি দেখতে চায় এই মহারথীকে। আর দু’টো ম্যাচ জিতলেই যে মহারণ বাস্তব হয়ে যাবে। তবে নাদালের সামনে রাস্তাটা মোটামুটি সহজ হলেও ফেডেরারের লড়াইটা কিন্তু কঠিন। নাদালকে পরের রাউন্ডে খেলতে হবে আলেক্সান্ডার ডলগোপোলভের বিরুদ্ধে। কোয়ার্টার ফাইনালের সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারেন ডেভিড গফিন বা গেইল মঁফিস। অন্য দিকে, ফেডেরার তাঁর রাস্তায় প্রথমে পাচ্ছেন ফিলিপ কহলশ্রেইবার-কে। কিন্তু পরে তাঁর সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারেন ২৪ নম্বর বাছাই হুয়ান মার্টিন দেল পোত্রো বা ছ’নম্বর বাছাই ডমিনিক থিয়েম। তবে ‘ফেদাল’ যে ভাবে ছুটছে, সেমিফাইনালে দেখা না হওয়াটাই অঘটন হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement