এতদিন ভারতের মাটিতে ভারতের বিরুদ্ধে তিনটি ফরম্যাটের একটিতেও জিততে পারেনি বাংলাদেশ। রবিবার রাজধানীতে ভারতকে হারিয়ে ইতিহাস তৈরি করলেন মুশফিকুর রহিমরা। দিল্লির মাঠে ঠিক কোন জায়গায় রোহিত শর্মাদের মাত দিল বাংলাদেশ? দেখে নেওয়া যাক বাংলাদেশের জয়ের কারণ।
টি টোয়েন্টি ক্রিকেটে শুরু থেকেই রানের ফোয়ারা ছোটে। প্রথম বল থেকেই ব্যাটসম্যানরা আক্রমণের রাস্তায় হাঁটতে শুরু করেন। রবিবাসরীয় অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে শুরু থেকেই ভারতীয় ব্যাটিংকে কেমন যেন গুটিয়ে থাকতে দেখা গেল। টি টোয়েন্টি ক্রিকেট মানে গতিশীল এক খেলা। ভারতীয়দের শরীরী ভাষাতেও সেই গতি দেখা যায়নি। ২০ ওভারে ১৪৯ রান কঠিন কোনও টার্গেট একেবারেই নয় আজকের দিনে। এত কম রান তুলে তাই শুরুতেই ম্যাচটা হেরে গেল ভারত।
ভারতের এই ব্যাটিং লাইন আপের অভিজ্ঞতা কম। টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য পরীক্ষা নিরীক্ষা করছে ভারতীয় দল। অনেক তরুণ মুখের ভিড় এই দলে। রোহিত শর্মা দ্রুত ফিরে যাওয়ায় ভারতের বড় স্কোর করার স্বপ্নও তাই শেষ হয়ে যায়।
শিখর ধবন দলের হাল ধরেছিলেন। কিন্তু সে ভাবে রানের গতি বাড়াতে পারেননি তিনি। ঋষভ পন্থের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে যাওয়ায় ভারত ধাক্কা খায়।
শ্রেয়াস আইয়ার, ঋষভ পন্থ, শিবম দুবেদের সামনে সুযোগ ছিল কিছু করে দেখানোর। কিন্তু, তাঁরা ব্যর্থ হন সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে।
ভারত রান তাড়া করায় দক্ষ। শুরুতে ব্যাট করে রান আটকে রাখার ক্ষেত্রে দুর্বলতা রয়েছে তাদের। বিশ্বকাপের আগে এ দিকেই জোর দিচ্ছে ভারতীয় দল। ১৪৮ রান করে সেই রান আটকে রাখতে পারেনি ভারতীয় দল। এই রান ধরে রাখতে হলে শুরু থেকেই উইকেট তুলতে হত। সেটাই পারেনি ভারত।
আফিফ, বিপ্লব, শফিউল ইসলামের মতো বোলাররা ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের পরীক্ষা নিলেন। শাকিব, মাশরাফি, তামিমরা না থাকলেও ভারতের ব্যাটসম্যানদের খোলস থেকে বেরোতেই দিল না বাংলাদেশের বোলিং।
বাংলাদেশের ইনিংসের সময়ে রিভিউ নিতে ভুল করে ভারত। যুজবেন্দ্র চহালের দুটো ডেলিভারি মুশফিকুর রহিমের প্যাডে লাগার পরেও রিভিউ নেয়নি ভারত। দুই ক্ষেত্রেই ভুল করেন পন্থ। রিপ্লেতে দেখা যায় ওই দু’বারই মুশফিক আউট ছিলেন।
ভারতের ফিল্ডিংয়ে ধার ছিল না। খেলার মোক্ষম সময়ে মুশফিকুরের ক্যাচ ছেড়ে দেন ক্রুণাল পাণ্ড্য। আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি বাংলাদেশকে।
বোলিং বিভাগেও রক্তাল্পতা দেখা গিয়েছে ভারতের। ১২ বলে ২২ রান দরকার এই অবস্থায় বল করতে এসে খলিল আহমেদ একাই ম্যাচটা তুলে দেন বাংলাদেশের হাতে। পর পর চার বলে চারটি চার মেরে মুশফিকুর ম্যাচের দখল নিয়ে নেন।
মুশফিকুর রহিম অসাধারণ হয়ে উঠেছিলেন রাজধানীতে। মাঠের বাইরের ঘটনায় বড়সড় ধাক্কা খাওয়ার পরে এই বাংলাদেশ দলে মুশফিকই সিনিয়র। বহু ম্যাচ তিনি একাই বের করে দিয়েছেন। রবিবার সেটাই দেখা গেল। শেষ পর্যন্ত টিকে থেকে ৪৩ বলে ৬০ রান করে বাংলাদেশকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়লেন মুশফিকুর।