ডেভিড রবার্টসন। ফাইল ছবি
লক্ষ লক্ষ টাকার চাকরি, বিলাসবহুল জীবনযাত্রা ছেড়ে তিনি বছর চারেক আগে পাড়ি দিয়েছিলেন উপত্যকায়। দীর্ঘ প্রচেষ্টা এবং কঠিন চড়াই-উতরাই পেরনোর পর অবশেষে বড় সম্মান পেলেন ডেভিড রবার্টসন। আই লিগের ক্লাব রিয়াল কাশ্মীরের কোচকে ব্রিটিশ এম্পায়ার পদক দিয়ে সম্মান জানাল ব্রিটেনের রাজপরিবার।
তাদের তরফে জানানো হয়েছে, কাশ্মীরে ফুটবলের উন্নতি এবং যুদ্ধকবলিত এলাকার মানুষ এবং ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের মধ্যে ফুটবলের প্রসার ঘটানোর জন্যেই এই পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। ২০১৪-র বন্যায় কার্যত বিধ্বস্ত হয়ে গিয়েছিল শ্রীনগর। ঘুরে দাঁড়ানোর পর সেখানে তরুণদের নিয়ে ফুটবল ক্লাব খোলেন ব্যবসায়ী সন্দীপ ছাত্তু এবং স্থানীয় সংবাদপত্রের সম্পাদক শামিম মেহরাজ। ২০১৭-১৮ মরসুমে দ্বিতীয় ডিভিশন জিতে ২০১৮-য় তারা আই লিগের যোগ্যতা অর্জন করে। উপত্যকা থেকে সেই প্রথম কোনও ক্লাব আই লিগে অংশগ্রহণ করে।
প্রথমবারেই তারা তৃতীয় স্থান অধিকার করেছিল। গত তিন মরসুমে প্রতিবারই তাদের খেলতে দেখা গিয়েছে। স্কটল্যান্ডের কোচ রবার্টসন এবং তাঁর ক্লাবকে নিয়ে তথ্যচিত্র তৈরি করেছে বিবিসি, যা ইতিমধ্যেই ঐতিহ্যশালী বাফটা পুরস্কার পেয়েছে। ব্রিটিশ রাজপরিবারের পুরস্কার পেয়ে রবার্টসন বলেছেন, “কাশ্মীরে আমার কাজের জন্য এই পুরস্কার পেয়ে আমি সম্মানিত, গর্বিত। কাশ্মীরে প্রতিটি মিনিট আমি উপভোগ করেছি। মনে হয় যেন কাশ্মীর আমার দ্বিতীয় বাড়ি।”
একইসঙ্গে প্রথম আই লিগে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে খেলা ম্যাচের কথা মনে পড়ে গিয়েছে রবার্টসনের। বলেছেন, “মাঠে সেদিন ২০ হাজার দর্শক। পুরুষ, মহিলা, বাচ্চা, প্রবীণ সবাই এসেছিল। সবার মুখ ছিল হাসি। একসময় যাঁরা গোলাগুলির ভয়ে বাড়ি থেকে বেরোতে ভয় পেত, তাঁদের মুখে ওই হাসি ছিল সব থেকে বড় প্রাপ্তি। দ্বিতীয় ডিভিশনে খেলার সময় কেউ আমাদের চিনত না।”
মালিক ছাত্তু জানালেন, তাঁদের দেখাদেখি কাশ্মীরে ফুটবলের জনপ্রিয়তা ব্যপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন প্রায় দু’ডজন ক্লাব রয়েছে কাশ্মীরে।