তৃপ্ত: রবিবার দলকে জিতিয়ে জাডেজা, সঙ্গী শার্দূল। ফাইল চিত্র
গত এক বছরে আস্তে আস্তে নিজেকে ভারতীয় ওয়ান ডে দলের অপরিহার্য ক্রিকেটার হিসেবে তুলে ধরেছেন রবীন্দ্র জাডেজা। এতটাই যে বিরাট কোহালি পর্যন্ত কটকে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারানোর পরে বলে দিয়েছেন, ‘‘আমি আউট হওয়ার পরেও জাডেজা উইকেটে ছিল। ওর আত্মবিশ্বাস দেখে আমার টেনশন কমে যায়।’’ শেষ পর্যন্ত ৩১ বলে অপরাজিত ৩৯ রান করে, ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে মাঠ ছাড়েন জাডেজা।
ম্যাচের পরে এই অলরাউন্ডার বলেছেন, ‘‘আমার নিজের কাছে প্রমাণ করার ছিল যে, ওয়ান ডে ক্রিকেটটা এখনও খেলতে পারি। বিশ্বের আর কারও কাছে কিছু প্রমাণ করার জন্য আমি খেলি না।’’ এর আগে ইংল্যান্ডে বিশ্বকাপ চলার সময় প্রাক্তন ভারতীয় ব্যাটসম্যান সঞ্জয় মঞ্জরেকর মন্তব্য করেছিলেন, জাডেজা এক জন সাধারণ মানের ক্রিকেটার। যার পরে সেমিফাইনালে নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৫৯ বলে ৭৭ রান করে ভারতকে প্রায় জিতিয়ে দিয়েছিলেন জাডেজা।
বছরের শুরুতেও জাডেজা ওয়ান ডে দলের নিয়মিত সদস্য ছিলেন না। কিন্তু সেই ছবিটা বদলে গিয়েছে। এখন জাডেজার জন্য ‘কুল-চা’ জুটিকেও ভেঙে দিতে হয়েছে ভারতকে। হয় যুজবেন্দ্র চহাল না হয় কুলদীপ যাদব, দুই রিস্ট স্পিনারের মধ্যে এক জনকে খেলানো সম্ভব হচ্ছে। অন্য স্পিনারের জায়গাটা নিয়ে নিয়েছেন জাডেজা। সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘‘এই বছরে আমি বেশি ওয়ান ডে খেলার সুযোগ পাইনি। তাই যখনই সুযোগ পেয়েছি, ব্যাট, বল বা ফিল্ডিংয়ে সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি।’’ এই বছর ভারতের ২৮টি ম্যাচের মধ্যে ১৫টি খেলেছেন এই
বাঁ-হাতি স্পিনার অলরাউন্ডার।
জাডেজার ফর্মে খুশি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের নতুন প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও। সৌরভ টুইট করেছেন, ‘‘আরও একটা জয় ভারতের। অভিনন্দন। চাপের মুখে দারুণ ব্যাটিং...জাডেজা ব্যাট হাতে খুব উন্নতি করেছে যেটা
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’’
রবিবার রাতে কটকে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে চার উইকেটে হারিয়ে সিরিজ জিতে নেয় ভারত। নিজের ইনিংসটা নিয়ে জাডেজা বলেছেন, ‘‘এই ইনিংসটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সিরিজ ফয়সালার ম্যাচ ছিল এখানে। ব্যাট করার পক্ষে উইকেট আদর্শ ছিল। আমরা শুধু বলের মান অনুযায়ী ব্যাট করে গিয়েছি।’’
জাডেজা সঙ্গী হিসেবে পেয়ে গিয়েছিলেন শার্দূল ঠাকুরকেও। এই পেসার ছয় বলে ১৭ রান করে জাডেজার কাজটা সহজ করে দেন তিনি। এই পেসারের ব্যাটিংয়ে খুশি কোহালি এ দিন শার্দূলের সঙ্গে ছবি টুইট করে মরাঠিতে লেখেন, ‘‘তু মানলা রে ঠাকুর!’’ যার বাংলা করলে দাঁড়ায়, ‘‘দারুণ করেছিস ঠাকুর!’’
তাঁর সঙ্গে শার্দূলের জুটি নিয়ে জাডেজা বলেছেন, ‘‘আমরা জানতাম, শেষ বল পর্যন্ত উইকেটে থাকলে ম্যাচ জিতে যাব। আমি আর বিরাট উইকেটে জমে গিয়েছিলাম। বিরাট বলেছিল, ম্যাচটা শেষ করে ফিরবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আউট হয়ে গেল। বিরাট আমাকে বলে যায়, নিজের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে। কোনও বোকামি না করতে।’’
বাংলাদেশ এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে পরপর সীমিত ওভারের সিরিজ জয়ের মধ্যেও একটা সমস্যা দেখা যাচ্ছে। ভারতের ফিল্ডিং। বেশ কিছু সহজ ক্যাচ ফেলেছেন ভারতীয় ফিল্ডাররা। যা নিয়ে জাডেজা বলছেন, ‘‘জানি, সিরিজে প্রচুর ক্যাচ পড়েছে। আমাদের ফিল্ডিংয়ের যা মান, তাতে এই ধরনের ক্যাচ পড়া উচিত হয়নি। তবে কৃত্রিম আলো আর শিশিরের কারণে ফিল্ডারদের একটু সমস্যা হয়ে থাকে।’’ তবে জাডেজা আশ্বস্ত করছেন, ‘‘আমাদের দলটা তরুণ। পরের সিরিজ থেকে আমরা ক্যাচ নেওয়ার উপরে বেশি জোর দেব।’’