রানি রামপাল —ফাইল চিত্র।
দল থেকে বাদ পড়ার এক মাস পর মুখ খুললেন রানি রামপাল। ২০২১ সালে টোকিয়ো অলিম্পিক্সে ভারতের মেয়েদের হকি দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ভারত চতুর্থ হয়েছিল। সেই রানিই এখন দলের বাইরে। তাঁকে অনূর্ধ্ব-১৭ দলের কোচ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি নিজে এখনও খেলতে চান। তাই কোচ হয়ে একেবারেই খুশি হতে পারছেন না রানি। বাদ পড়া প্রসঙ্গে কোচ এবং নির্বাচকদের দিকে আঙুল তুলেছেন তিনি।
অলিম্পিক্সে সফল হলেও ২০২২ সালে কমনওয়েলথ গেমস এবং হকি বিশ্বকাপে দলে নেওয়া হয়নি রানিকে। তাঁকে অনূর্ধ্ব-১৭ মেয়েদের হকি দলের কোচ করায় আগামী দিনে আর খেলতে দেখা যাবে কি না তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। রানি বলেন, “শেষ দু’বছরে আমার সঙ্গে যা হয়েছে, তা ঠিক নয়। চোট সারিয়ে ফিরেছিলাম। জাতীয় প্রতিযোগিতায় সব থেকে বেশি গোল ছিল আমার। কিন্তু দলেই নেওয়া হল না আমাকে। কেন নেওয়া হল না সেটা বলতে পারবে কোচ এবং নির্বাচকেরা। আমি এর উত্তর জানি না। তবে আমি এখনই অবসর নিচ্ছি না। খেলোয়াড় হিসাবে আমার এখনও অনেক কিছু করার আছে।”
রানির নেতৃত্বে অলিম্পিক্সে চতুর্থ হয়েছিল ভারত। সেটাই অলিম্পিক্সে ভারতের মহিলা হকি দলের সেরা সাফল্য। সেই সময় দলের কোচ ছিলেন শোয়ার্ড মারিন। সহকারী ছিলেন জানেক স্কোপমান। অলিম্পিক্সের পরেই দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেন মারিন। তাঁর জায়গায় স্কোপমান এখন ভারতের মহিলা হকি দলের প্রধান কোচের দায়িত্ব নিয়েছেন। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই দলে বিভাজন হচ্ছে বলে শোনা গিয়েছে। রানিকে দলের মধ্যে একঘরে করে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছিল। সেই সময় চোটও পেয়েছিলেন রানি। তবে জাতীয় প্রতিযোগিতায় প্রচুর গোল করে ফিরে এসেছিলেন তিনি। হরিয়ানার হয়ে ১৮টি গোল করেছিলেন তিনি।
রানিকে সরিয়ে অধিনায়ক করা হয় গোলরক্ষক সবিতা পুনিয়াকে। রানি বলেন, “আমি হাল ছাড়তে শিখিনি। ছাড়তে হলে তো আমি অলিম্পিক্সের পরেই ছেড়ে দিতাম। অনূর্ধ্ব-১৭ দলের কোচ হয়েছি কারণ এটা দীর্ঘমেয়াদি নয়। ৪৫ দিনের একটা ক্যাম্প হবে। সেটার দায়িত্ব নিয়েছি। যদিও আগামী দিনে আরও বেশি দিনের ক্যাম্প হতে পারে।”
রানিকে যেমন মেয়েদের দলের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তেমনই ছেলেদের দলের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সর্দার সিংহকে। একটি সাংবাদিক বৈঠকে হকি ইন্ডিয়ার প্রেসিডেন্ট দিলীপ তিরকে এই ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, “রানি দলে নেই এটা আমরা জানি। কোচ এবং নির্বাচকদের প্রশ্নও করা হয়েছে এই নিয়ে। রানির মতো এক জন খেলোয়াড়কে কেন দলে নেওয়া হয়নি, সেটা জানতে চাওয়া হয়েছে। তবে দল গঠনে কখনই বোর্ডের কোনও কর্তা থাকে না। এটা কোচ এবং নির্বাচকদের দায়িত্ব। রানির সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। ওর মনখারাপ ছিল। রানির সঙ্গে কথা বলার পরই এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ওকে।”
সর্দার অবসর নেন ২০১৯ সালে। তিনি অনূর্ধ্ব-১৭ দলের কোচের দায়িত্বের সঙ্গে সিনিয়র দলের নির্বাচকের দায়িত্বও পালন করবেন।