হুঙ্কার: রজার্স কাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে রাফায়েল নাদাল। এপি
লড়াইটা ছিল বিশ্বের পনেরো নম্বর বনাম বিশ্বের এক নম্বর টেনিস খেলোয়াড়ের। প্রত্যাশা অনুযায়ী এক নম্বরই জিতলেন। তবে কুড়ি বছর বয়সি প্রতিপক্ষ গ্রিসের স্টেফানোস তিতিপাসের বিরুদ্ধে ৩২ বছর বয়সি চ্যাম্পিয়ন রাফায়েল নাদালের জয় খুব সহজে আসেনি।
টরন্টোয় রজার্স কাপের ফাইনালে স্প্যানিশ তারকা ৬-২, ৭-৬ (৭-৪) জিতলেও গ্রিসের তরুণ খেলোয়াড় প্রচুর ভক্ত পেয়ে গেলেন তাঁর দুরন্ত দক্ষতা দেখিয়ে। প্রতিযোগিতায় ফাইনালে ওঠার পথে প্রথম দশে থাকা চার জন খেলোয়াড়কে হারিয়েছিলেন তিতিপাস। কানাডায় এই প্রতিযোগিতায় যিনি ২০০৮ সালের পরে প্রথম অবাছাই খেলোয়াড় হিসেবে ফাইনালে উঠেছিলেন। তবে শেষ রক্ষা করতে পারেননি। গ্রিসের এক নম্বর টেনিস তারকার ২০তম জন্মদিনের পার্টি নষ্ট করে দেন নাদাল তাঁকে স্ট্রেট সেটে হারিয়ে। নিশ্চিত করে ফেলেন খেলোয়াড় জীবনের ৮০নম্বর এটিপি ট্যুর খেতাব জয়।
নাদাল কতটা গুরুত্ব দিচ্ছিলেন টরন্টোয় জেতার ব্যাপারে সেটা ম্যাচের পরে তাঁর কথাতেই পরিষ্কার। ‘‘খুব পরিশ্রম করে জিতেছি এই খেতাব। আমি সব সময়ই বলি যখন তুমি সেরা টেনিস খেলছ, তখন জেতা অনেক সহজ। তাই যখন তুমি সেরা ছন্দে নেই, তখন চ্যাম্পিয়ন হওয়ার চেষ্টা করতে হয়। এটাই পার্থক্য গড়ে দেয়। বিশেষ করে এ রকম বড় মঞ্চে জয়। তাই এই জয়ের গুরুত্ব আমার কাছে বিরাট। সম্ভবত প্রতিযোগিতার সেরা ম্যাচ খেললাম ফাইনালে,’’ বলেন নাদাল।
আর তিতিপাস? এই হার থেকে তিনি কী শিখলেন? গ্রিক তরুণ বলে দেন, ‘‘বুঝতে পারলাম আমাকে আরও কত কত পরিশ্রম করতে হবে। নাদালের সঙ্গে আমার খেলার কি বিরাট পার্থক্য সেটা বুঝতে পারলাম। যে ভাবে নাদাল কোর্টে শারীরিক, মানসিক চাপ সামলায়, ভাবাই যায় না। দেখে কোনও চাপ রয়েছে বলে মনেই হয় না। সঙ্গে সে রকম ধৈর্য। আমাদের মতো সাধারণ এক জন খেলোয়াড় থেকে এ রকম টেনিসের দৈত্য হয়ে উঠেছে নাদাল। এই জায়গায় পৌঁছতে হলে আমাকে আরও অনেক পরিশ্রম করতে হবে।’’
ম্যাচে একটা ঘটনা নিয়েও হইচই ছড়াই সোশ্যাল মিডিয়ায়। দ্বিতীয় সেটে তিতিপাস ৩-৫ পিছিয়ে থাকার সময় তাঁর সার্ভিসের মাঝে এক দর্শক চেঁচিয়ে ওঠেন। তাঁর লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। আম্পায়ারকে আবেদন জানান তিতিপাস আবার সার্ভিস করতে দেওয়ার জন্য। কিন্তু চেয়ার আম্পায়ার রাজি হননি। এই সময় নাদাল এগিয়ে এসে আম্পায়ারকে বলেন, তিতিপাসকে ফের সার্ভিস করার সুযোগ দিন। নাদালের এই খেলোয়াড়সুলভ মানসিকতার প্রশংসা মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে।
তবে টরন্টোয় জিতলেও সিনসিনাটি মাস্টার্স থেকে নাম তুলে নিলেন নাদাল। যে প্রতিযোগিতা শুরু হচ্ছে সোমবার থেকে। নাদাল টুইটারে লিখেছেন, ‘‘খুব খারাপ লাগছে বলতে। তবে এ বছর আমি সিনসিনাটিতে খেলছি না। তার অন্য কোনও কারণ নেই। আমি আসলে বিশ্রাম নিতে চাইছি। যাতে তরতাজা থাকতে পারি।’’ এ দিকে, মনট্রিয়লে মেয়েদের ডব্লিউটিএ প্রতিযোগিতাতেও সিঙ্গলসে সেরা হলেন বিশ্বের এক নম্বর রোমানিয়ার সিমোনা হালেপ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্লোয়ান স্টিফেন্সকে তিনি তিন সেটের লড়াইয়ে হারান। ফল হালেপের পক্ষে ৭-৬ (৮-৬), ৩-৬, ৬-২। দু’ঘণ্টা ৪১ মিনিটের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই জিতে হালেপ বলেন, ‘‘গোটা প্রতিযোগিতায় কখনও হাল ছাড়িনি। শেষ পর্যন্ত লড়ে যাওয়ার পুরস্কার পেলাম।’’