উৎফুল্ল: ম্যাচ জিতে নাদালের উচ্ছ্বাস। সোমবার।
বারো মাস আগে এখানেই রাজার মুকুট পরেছিলেন তিনি। ফাইনাল জিতেছিলেন দুরন্ত প্রত্যাবর্তনে। সোমবার সেই মেলবোর্ন পার্কেই ব্রিটেনের জ্যাক ড্র্যাপারকে হারিয়ে অস্ট্রেলীয় ওপেনে এ বারের অভিযান দারুণ ভাবে শুরু করলেন রাফায়েল নাদাল। প্রথম রাউন্ডে জিতলেন ৭-৫, ২-৬, ৬-৪, ৬-১ ফলে।
তবে ম্যাচ চলাকালীন ঘটে গেল চাঞ্চল্যকর ঘটনাও। হঠাৎই র্যাকেট খুঁজে পাচ্ছিলেন না রাফা। এক সময় র্যাকেট খুঁজতে খুঁজতে তাঁকে বলতেও শোনা যায়, ‘‘আমার র্যাকেট পাচ্ছি না। বলবয় নিয়ে গিয়েছে।’’ অবশ্য খারাপ কিছু ইঙ্গিত করেননি। বোঝাতে চেয়েছিলেন, বলবয় হয়তো ভুল করেই র্যাকেট নিয়ে গিয়েছে। কিছু ক্ষণ পরেই সেই র্যাকেট ফিরে পান নাদাল এবং মেলবোর্ন পার্কে প্রথম রাউন্ডের ম্যাচে প্রতিপক্ষ দারুণ লড়াই করলেও চার সেটে ম্যাচ জেতেন। পরের রাউন্ডে নাদালের প্রতিপক্ষ ম্যাকেঞ্জি ম্যাকডোনাল্ড। যিনি এ দিন পাঁচ সেটের রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে হারান আমেরিকার ব্রেন্ডন নাকাশিমাকে।
যদিও গত বারের চ্যাম্পিয়ন নাদালের শিরোপা ধরে রাখার পথে বড় বাধা ধরা হচ্ছে নোভাক জোকোভিচকেই। গত বার কোভিড প্রতিষেধক নিতে না চাওয়া নোভাককে মেলবোর্ন থেকে চলে যেতে হয়েছিল কোর্টে না নেমেই। এ বারে তিনি ফিরছেন এবং আজ, মঙ্গলবারই প্রথম রাউন্ডের ম্যাচ। এখন থেকেই উন্মাদনা শুরু হয়ে গিয়েছে রাফা বনাম নোভাক সম্ভাব্য ট্রফির দ্বৈরথ নিয়ে।
প্রথম রাউন্ডে জিতে নাদাল বলে দিলেন, ‘‘এই জয় আমার দরকার ছিল। প্রথম রাউন্ডেই এত কঠিন প্রতিপক্ষ আর হয় না। ড্র্যাপারের বয়স কম, সফল হওয়ার আগুন রয়েছে। আমার মনে হয় খুব উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ ওর জন্য অপেক্ষা করছে।’’ রড লেভার এরিনায় উপস্থিত দর্শকেরা নিশ্চয়ই কেউ দ্বিমত হবেন না। ড্র্যাপার সত্যিই খুব চাপে ফেলে দিয়েছিলেন নাদালকে। পেশিতে টান ধরতে শুরু করায় তীব্রতা হারাতে থাকেন তিনি। পরে বললেনও শারীরিক সমস্যার কথা। ‘‘প্রথমে পায়ে টান লাগছিল। তার পর সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি, বুকের পাঁজরেও টান ধরছিল,’’ বললেন ড্র্যাপার। যোগ করলেন, ‘‘যখন এ রকম সমস্যা হয়, ধরে নিতে হয় ম্যাচ শেষ।’’
প্রথম সেট থেকেই ছেড়ে কথা বলছিলেন না ড্র্যাপার। তার পরে ঘটল নাদালের র্যাকেট হারানোর রহস্য। দ্বিতীয় সেটে প্রথমে ৪-০ এগিয়ে যান ড্র্যাপার। জিতে নেন সেটও। তৃতীয় সেটে নাদাল প্রতিপক্ষের সার্ভিস ভেঙে এগিয়ে যান ৪-১। এই সময় দীর্ঘ র্যালিগুলি জিতছিলেন রাফাই। এই সময় থেকেই টান ধরা শুরু হয় ড্র্যাপারের। বার বার তাঁকে শুশ্রূষা করাতে হচ্ছিল। রীতিমতো সংগ্রাম করছিলেন তিনি। নাদাল ততই নির্মম ভঙ্গিতে এগিয়ে চলেন।