অপ্রতিরোধ্য: সাংহাই মাস্টার্সের ফাইনালে রাফায়েল নাদালকে হারিয়ে রজার ফেডেরার। রবিবার। ছবি: এপি।
টেনিসের ক্লাসিকো লড়াইয়ে ফের রজার রাজ।
সাংহাই মাস্টার্সের ফাইনালে রাফায়েল নাদালকে স্ট্রেট সেটে উড়িয়ে দিয়ে চলতি মরসুমে চারে চার করে ফেললেন রজার ফেডেরার। জিতলেন শেষ পাঁচ সাক্ষাতে নাদালের বিরুদ্ধে। ফল ৬-৪, ৬-৩। অস্ট্রেলিয়া ওপেন, ইন্ডিয়ান ওয়েলস, মায়ামি মাস্টার্সের পরে সাংহাই ফের দেখল বিশ্বের এক নম্বরের বিরুদ্ধে সুইস মহাতারকার প্রবল দাপট।
ক’দিন আগে লেভার কাপে নাদাল ও ফেডেরার জুটি বেঁধে খেললেও গোটা বিশ্ব তাঁদের প্রতিদ্বন্দ্বী বলেই চেনে। যে প্রতিদ্বন্দ্বিতার আঁচ ফের পাওয়া গেল সাংহাইয়ে।
প্রায় দাঁড় করিয়েই হারালেন ফেডেরার নাদালকে। প্রথম সেটের পরিসংখ্যান দেখাচ্ছে ফেডেরার বা নাদাল কেউই এক মিটারও দৌড়ননি। তাঁর কারণ ফেডেরারের অনবদ্য সার্ভিস। প্রথম ও দ্বিতীয় দুটি সার্ভিসেই সাফল্য ৮৩ শতাংশ। যার অর্থ, নাদালকে সার্ভিস গেমে নড়তে দেননি ফেডেরার। আবার নাদালকে তাঁর সার্ভিস ভাঙারও সুযোগ দেননি সুইস তারকা।
সান্ত্বনা: ফাইনালের পরে এক ফ্রেমে রজার-রাফা। ছবি: এএফপি।
তবে কোর্টে এমন তুমুল লড়াই হলেও তাঁদের পারস্পরিক শ্রদ্ধার জায়গাটা যে একই রকম রয়েছে, ফের দেখা গেল ম্যাচের পরে। নাদালকে টানা পাঁচবার হারানোর রহস্য জানতে চাইতেই ফেডেরার হেসে ফেলে বলেন, ‘‘ ওর বিরুদ্ধে ক্লে কোর্টে কিন্তু খেলিনি এ বার।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘গত বছর এই টুর্নামেন্টে নামতে পারিনি চোটের জন্য। তাই এ বার ফিরে এসে ভাল লাগছে। তাও এমন একটা স্টেডিয়ামে যেটা কয়েক বছর আগে আমি নিজেই উদ্বোধন করেছি। আর রাফা তোমার সঙ্গে এই কোর্টটা ভাগাভাগি করে দারুণ লাগল। আশা করি এ রকম সুযোগ সামনে আরও আসবে।’’
আরও পড়ুন: স্ট্রেট সেটে নাদালকে উড়িয়ে দিলেন ফেডেরার
ফেডেরার মনে করেন ক্লে কোর্টে না নামাটাই কাজে এসেছে খুব এ মরসুমে। তিনি বলেন, ‘‘গোটা ক্লে কোর্ট মরসুমটাই এড়িয়ে গিয়েছি। সেটাই সাহায্য করছে। বড় র্যাকেট হেড নিয়ে নামছি। খুব বেশি স্লাইস করছি না। বেসলাইনেই বেশি থাকার চেষ্টা করছি।’’ আর নাদাল বলেন, ‘‘রজারকে অভিনন্দন দুরন্ত একটা বছর কাটানোর জন্য। আজ দুর্ধর্ষ খেলেছো ম্যাচে। দারুণ কাটল গত দু’সপ্তাহ।’’
শুধু নাদালকে হারানোই নয়, স্প্যানিশ তারকার বিশ্বের এক নম্বরের সিংহাসনে থেকে মরসুম শেষ করার আশাকেও রীতিমতো চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছেন ফেডেরার। যদিও ফে়ডেরারের থেকে নাদাল এখনও ১৯৫০ র্যাঙ্কিং পয়েন্টে এগিয়ে, তবে প্যারিস আর বাসেল ওপেনে জিতলে ১৫০০ পয়েন্ট নিয়ে ব্যবধানটা কমানোর সুযোগ থাকছে ফেডেরারের সামনে। সে ক্ষেত্রে নভেম্বরের মাঝামাঝি লন্ডনে ওয়ার্ল্ড ট্যুর ফাইনালসে বিশ্বের এক নম্বরের সিংহাসনে কে বসবে সেই ফয়সালা গড়াতে পারে।
ফেডেরার অবশ্য বলছেন এক নম্বরে থেকে মরসুম শেষ করার কথা তিনি ভাবছেন না। ‘‘ফিট থাকার ব্যাপারটাকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি এখন। বেশি ফোকাস করছি লন্ডনে। ওখানে জিততে চাই। যদি এ ভাবে খেলতে পারি, হয়তো এক নম্বরের খুব কাছাকাছি থেকে মরসুম শেষ করতে পারব,’’ বলে দেন বিশ্বের দু’নম্বর।