রবীন্দ্র সরোবরে রোয়িং। ফাইল চিত্র
রোয়িং করতে গিয়ে রবীন্দ্র সরোবরে দুই স্কুল ছাত্রের মৃত্যুতে নড়চড়ে বসছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং প্রশাসন। মঙ্গলবার তিনটি ক্লাব নিজেদের মধ্যে বৈঠকে বসেছিল। বৃহস্পতিবার কলকাতার পুলিশ কমিশনার এবং কেএমডিএ-র সঙ্গে বৈঠকে বসবে ক্লাবগুলি। মঙ্গলবার সন্ধেবেলা বৈঠকে বসে ক্যালকাটা রোয়িং ক্লাব, বেঙ্গল রোয়িং ক্লাব ও লেক ক্লাবের প্রতিনিধিরা। সেখানে আলোচনা হয়েছে, কী ভাবে এই দুর্ঘটনা এড়ানো যায়। লেক ক্লাবের যুগ্ম সচিব দেবু দত্ত বললেন, ‘‘আমাদের সবারই মনে হয়েছে, যথাযথ রেসকিউ বোট দরকার। পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে বলে সরোবরে ডিজেল বা পেট্রলের বোট ব্যবহার করায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্তু রেসকিউ বোট ছাড়া কোনও ভাবেই এই ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব নয়। আমরা বৃহস্পতিবারের মিটিংয়ে সেই দাবিই জানাব।’’
তাঁর অনুমান, হয়তো ব্যাটারি চালিত বোট ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া হবে। সেটা হলে আখেরে কোনও লাভ হবে না জানিয়ে দেবু দত্তর বক্তব্য, ‘‘সে ক্ষেত্রে দেখতে হবে সেই বোটের গতি কত হতে পারে। কারণ রেসকিউ বোট হিসেবে যদি খুব কম গতির বোট দেওয়া হয়, তা হলে তো কোনও লাভ হবে না। যথাযথ রেসকিউ বোট দরকার। এ দিনের বৈঠকে আমরা সবাই এ ব্যাপারে একমত। এটা নিছক দুর্ঘটনা। ফলে বোটের ব্যবস্থা করা ছাড়া আমাদের আর বিশেষ কিছু করার নেই।’’
বৃহস্পতিবার বিকেলে তিনটি ক্লাবের প্রতিনিধিদের ডেকেছেন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। সেখানে কেএমডিএ-র প্রতিনিধিরাও থাকবেন। ক্লাবগুলির তরফে দেবু দত্ত ছাড়াও সেখানে থাকবেন ক্যালকাটা রোয়িং ক্লাবের সচিব চন্দন রায় চৌধুরিও।
মঙ্গলবারের বৈঠকের আগে প্রয়াত দুই স্কুলছাত্র পুষ্পেন সাধুখাঁ ও সৌরদীপ চট্টোপাধ্যায়ের স্মরণে নীরবতা পালন করা হয়। লেক ক্লাবে গিয়ে দেখা গেল, দুই ছাত্রের প্রতিকৃতিতে মালা দেওয়া হয়েছে। তিনটি ক্লাবের পরিবেশই থমথমে।
গত শনিবার রোয়িং করার সময় কালবৈশাখীর কবলে পড়ে মৃত্যু দুই কিশোরের। বিকেল সওয়া পাঁচটা নাগাদ ঝড়ের মধ্যে নৌকার নিয়ন্ত্রণ হারায় সওয়ার পাঁচ কিশোর। তিন জন সাঁতরে পাড়ে আসতে পারলেও দু’জনের কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। ১৪ বছরের পুষ্পেন সাধুখাঁ নামে এক কিশোরকে নিকটবর্তী বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। অন্য কিশোর সৌরদীপ চট্টোপাধ্যায়কে এসএসকেএম হাসপাতালে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।