কোচ পার্কের সঙ্গে সিন্ধু। ছবি পিটিআই
দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় কোচের পদ ছাড়ার পর বাড়ির সামনে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরির অফার ছিল। কিন্তু ভারত থেকে ফোনে ছোট্ট একটা বার্তা পাওয়ার পর সিদ্ধান্ত বদলে ফেলেন পার্ক তায়ে সাং। পাড়ি দেন অচেনা এক দেশে। প্রায় দু’বছর পর অবশেষে তাঁর স্বপ্নপূরণ হল।
অলিম্পিক্সের পদক ছিল তাঁর স্বপ্ন। খেলোয়াড় হিসেবে তা পূরণ করতে পারেননি। অল্পের জন্য ২০০৪ এথেন্স অলিম্পিক্সে ব্রোঞ্জ পাননি। কোচ হিসেবে সেই ইচ্ছেটা পূরণ করতে চেয়েছিলেন। তাই পিভি সিন্ধুর ডাকে সাড়া না দিয়ে পারেননি পার্ক। বিশ্ববিদ্যালয়ের আরামের চাকরি ছেড়ে ভারতে চলে আসেন। অতিমারিতে দেশে ফিরতে না পেরে চরম বিপদে পড়েন। কিন্তু কঠিন সময় কাটিয়ে ছাত্রীর সৌজন্যে সাফল্যের মুখ দেখলেন পার্ক। এক সাক্ষাৎকারে পার্ক বলেছেন, “আমার চার বছরের মেয়ে রোজ ফোনে বলে, বাবা তুমি কবে বাড়ি ফিরছ? মাঝে মাঝে খুব দুঃখ হয়। অতিমারিতে আমার এবং সিন্ধুর সময়টা খুব কঠিন গিয়েছে। দু’মাস অনুশীলনই করতে পারিনি। কিন্তু আক্রান্তের সংখ্যা কমতেই অনুশীলন চালু করি। কোরিয়া ফিরতে চাইনি। তাহলে সিন্ধুর অনুশীলন ব্যাহত হত।”
দীর্ঘদিন পরিবারের থেকে দূরে থাকার দুঃখ নিয়ে নাগাড়ে সিন্ধুকে অনুশীলন করিয়ে গিয়েছেন পার্ক। সিন্ধুর ডিফেন্স মজবুত করেছেন। সেই সম্পর্কে বলেছেন, “সিন্ধুর নিচ থেকে রিটার্ন মারার একটা প্রবণতা ছিল। আমি ওকে বলেছিলাম যে অন্তত এক সেন্টিমিটার উপর থেকে রিটার্ন করলে প্রতিপক্ষ সমস্যায় পড়বে। অলিম্পিক্সে সেটা কাজে লেগেছে।”
সিন্ধুকে কোচিং করানো ছাড়াও আরও দুটি স্বপ্নপূরণ হয়েছে পার্কের। ভারতীয় খাবারের প্রেমে পড়ে গিয়েছেন। লকডাউনের সময় নিজেই রান্না করে খেতেন। বাটার চিকেন, স্টার-ফ্রায়েড চিকেন, তন্দুরি চিকেন এখন তাঁর সবথেকে পছন্দের খাবার। এ ছাড়াও ইনস্টাগ্রামে ‘ফলোয়ার’-এর সংখ্যা বহুগুণ বেড়েছে তাঁর। টোকিয়োর বিমান ধরার আগে ফলোয়ারের সংখ্যা ছিল তিনশো মতো। এখন তাঁকে ফলো করেন ১৮ হাজার মানুষ। বেশিরভাগই তার মধ্যে ভারতীয়।