আকর্ষণ: মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে শিশুদের একটি ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতায় র্যাকেট হাতে পরিচিত কোর্টে নেমে পড়লেন পি ভি সিন্ধু। পিটিআই
বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জেতায় আগামী দিনে তাঁর কাজ আরও কঠিন হল বলে মনে করেন পি ভি সিন্ধু। ভারতীয় তারকার বক্তব্য, এখন অন্য সবাই তাঁকে হারাতে বিশেষ ভাবে চেষ্টা করবেন। তাই জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে তাঁকে ক্রমাগত নতুন কিছু করতে হবে বলে জানালেন সিন্ধু।
মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে সিন্ধু বলেন, ‘‘এখন চাপ বেড়ে গেল। দায়িত্বও। ভাল করে জানি যে বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপের পরে সবাই আমাকে আলাদা চোখে দেখবে এবং সেই মতো নিজেদের তৈরি করবে।’’ ভারতের সর্বকালের অন্যতম সেরা ব্যাডমিন্টন তারকার আরও কথা, ‘‘এখন তো আরও পরিশ্রম করতে হবে। নিজের খেলার অনেক জায়গায় বদল আনতে হবে। নতুন-নতুন রণকৌশল নিয়ে কোর্টে নামতে হবে। সবাই খেলা দেখছে। সবাই জেনে যাচ্ছে, কী ভাবে খেলি। তাই এখন যত বার নামব তত বার নতুন স্ট্র্যাটেজিতে খেলতে হবে।’’
২৪ বছরের ভারতীয় তারকা স্বীকার করেন, বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে সোনার জন্য তাঁকে বহু দিন অপেক্ষা করতে হয়েছে। শেষ পর্যন্ত সফল হন কঠোর পরিশ্রমের জন্যে। সেই সঙ্গে তাঁর জন্য বছরের পর বছর অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন তাঁরা বাবা-মা। ‘‘পাঁচ বছর ধরে এই সোনাটা জিততে চেয়েছি। প্রতি বার হেরে যেতাম। মাঝেমাঝে মন খারাপ হত। তবু লড়াই থামাইনি। পরিশ্রম করে গিয়েছি। বাবা-মা আমার জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন,’’ বলেন বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে সোনাজয়ী একমাত্র ভারতীয়। যোগ করেন, ‘‘আমার ব্যাডমিন্টন জীবনে কোচদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম কোচ ছিলেন মেহবুব আলি। আর ১০ বছর বয়স থেকে গোপীস্যরের অধীনে রয়েছি।’’
সিন্ধু এর পরে খেলবেন ছাংঝৌয়ে চিন ওপেন (১৭-২২ সেপ্টেম্বর) এবং ইঞ্চিয়নে কোরিয়া ওপেনে (২৪-২৯ সেপ্টেম্বর)। বলেছেন, ‘‘এই মুহূর্তে চিন ওপেন আর কোরিয়া ওপেনের জন্য তৈরি হচ্ছি। কয়েক দিনের মধ্যে বিদেশে চলে যাব। এই দু’জায়গায় ভাল কিছু করা আপাতত লক্ষ্য। চেষ্টা করব নিজের সেরাটা দেওয়ার।’’ আরও বলেন, ‘‘বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে সোনা আরও ভাল খেলতে উৎসাহিত করবে। আত্মবিশ্বাস বাড়াবে। অলিম্পিক্সের আগে অনেক টুর্নামেন্ট আছে। তাই নিজেকে চাপে না ফেলে সব জায়গায় ১০০ ভাগ দেব।’’
সিন্ধুকে প্রশ্ন করা হয় সুইৎজ়ারল্যান্ডে বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল নজোমি ওকুহারার সঙ্গে খেলতে হওয়ায় আলাদা চাপে ছিলেন কি না। জবাব, ‘‘ফাইনালের জন্য আলাদা চাপ ছিল না। বরং কোয়ার্টার ফাইনালে তাই জু-র সঙ্গে লড়াইটার আগে ছিল। সেটা আমার খেলা অন্যতম সেরা ম্যাচ। ওকুহারার সঙ্গে ফাইনাল বলে অনেকে ভেবেছিলেন, ২০১৭-র পুনরাবৃত্তি হবে (সে বার সিন্ধু ফাইনালে হারেন)। কিন্তু অতীতকে মাথায় রাখিনি। জানতাম আর একটা নতুন ম্যাচ খেলব। তা ছাড়া আমরা পরস্পরকে ভাল ভাবে জানি। নিজেদের মধ্যে অনেক ম্যাচ খেলেছি। তাই এই ফাইনালের জন্য বিশেষ রণকৌশল ছিল না।’’
জাতীয় কোচ পুল্লেলা গোপী চন্দ সম্প্রতি মন্তব্য করেন যে ভারতে কোচের জন্য যথেষ্ট বিনিয়োগ করা হয় না। সিন্ধুও এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত। তাঁর কথা, চ্যাম্পিয়ন তৈরি করতে সেরা দক্ষতার কোচদের আনতে হবে। জোর দেন ভারতীয় কোচদের আরও উন্নত ও প্রশিক্ষিত করার পক্ষে। এ দিনও ওঠে সিন্ধুর নতুন দক্ষিণ কোরীয় কোচ কিম জি হিউন প্রসঙ্গ এবং ভারতীয় তারকা আবার জানান, কোরীয় কোচ তাঁর খেলা আরও ধারাল করেছেন। সিন্ধু এসেছিলেন জুনিয়র ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়নশিপের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে। সেখানে বলেন, ‘‘এই ধরনের টুর্নামেন্ট ছোটদের দারুণ উৎসাহিত করে। দিন-দিন প্রতিযোগীর সংখ্যা বাড়ছে। প্রতিভাও রয়েছে। ওদের উন্নতি নিশ্চিত করতে জুনিয়র স্তরে আরও টুর্নামেন্টের দরকার।’’