প্রত্যয়ী: ফল নিয়ে না ভেবে নিজের সেরাটা দিতে চান সিন্ধু। ফাইল চিত্র
কয়েক বছর আগের ঘটনা। টানা সাত ফাইনালে হারের পরে পি ভি সিন্ধুর মানসিক শক্তি নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছিলেন সমালোচকেরা। তাঁদের ব্যাখ্যা ছিল, সাফল্য ছিনিয়ে নেওয়ার মতো জেদ তাঁর নেই। তা ছাড়া ফাইনালে খেলার একটা আতঙ্কই তাঁকে লক্ষ্যচ্যুত করে দিচ্ছে বারবার।
কিন্তু তিনি নিজে কি সত্যিই তাই মনে করেন? অনলাইন চ্যাট সেশনে সিন্ধু বলেছেন, “লোকে কেন এটা বোঝেন না, যে কোনও প্রতিযোগিতার ফাইনালে ওঠাও একটা বড় প্রাপ্তি।” আরও বলেছেন, “আপনি কোনও প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে সরাসরি ফাইনালে খেলতে পারবেন না। তার জন্য অনেকগুলো ম্যাচ খেলতে হবে। এটা কেন বোঝেন না, সব প্রতিযোগিতায় জেতা যায় না।”
১৬ বছর বয়সে ২০১২ লন্ডন অলিম্পিক্সে সোনাজয়ী, লি সুয়েরুই-কে চিন মাস্টার্সের কোয়ার্টার ফাইনালে হারিয়ে চমক। তার পরে ধাপে ধাপে বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে দুটি ব্রোঞ্জ, দুটি রুপো এবং একটি সোনা। এবং চার বছর আগে রিয়ো অলিম্পিক্সের মঞ্চে রুপো জয়। এই প্রবল চাপ কী করে সামলেছেন? সিন্ধুর জবাব, “আমার জীবনকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। রিয়োর আগে এবং রিয়োর পরে। অলিম্পিক্সে রুপো জয়ের পরে সকলের প্রত্যাশা রকেটের গতিতে উপরে উঠতে থাকে। সমস্ত প্রতিযোগিতায় একই ধারাবাহিকতা নিয়ে খেলা কঠিন, তবে তা ধরে রাখতেই কঠোর অনুশীলন করতে হয়। পরে অনুভব করেছি, সব ম্যাচে ১০০ শতাংশ শক্তি উজাড় করে দিলেও সাফল্য আসে না। তাই ফল নিয়ে না ভেবে নিজের সেরা খেলাটা সব সময় খেলে যেতে হবে।”
চোটের ধাক্কাও সামলাতে হয়েছে তাঁকে। সিন্ধু বলেছেন, “২০১৫ সালে স্ট্রেস ফ্র্যাকচার হয়েছিল। তখনও রিয়ো অলিম্পিক্সে যোগ্যতা অর্জন পর্বের ম্যাচ বাকি ছিল। বাবাকে বলি, একটা ব্যথা অনুভব করছি। এক্স-রে করে ব্যাপারটা ধরা পড়েছিল। মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ি। তার পরেও ২২টি প্রতিযোগিতায় অংশ নিই এবং রিয়ো অলিম্পিক্সের ছাড়পত্র আদায় করি। এই ব্যাপারগুলোকে নিয়েই চলতে হয়।”
করোনার কারণে তিনিও গৃহবন্দি। তবে সিন্ধু জানাচ্ছেন, এই ফাঁকে অনেক নতুন জিনিসও আয়ত্ত করেছেন। বলেছেন, “ছবি আঁকা শিখছি। রান্নার সঙ্গে কেক তৈরি করার পদ্ধতিও রপ্ত করেছি। এর আগে তো সারা বছর ব্যাডমিন্টন খেলতে হত। এ সব করার মতো সুযোগ বা সময় আদৌ পেতাম না।” যদিও তারই সঙ্গে সিন্ধু মনে করছেন, করোনা পরবর্তী ব্যাডমিন্টনে অনেক পরিবর্তন আসতে চলেছে। বলেছেন, “সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলতে হবে। একজন খেলোয়াড় হিসেবে ফাঁকা স্টেডিয়ামে খেলার সঙ্গে অভ্যস্ত হতে হবে। চারপাশে একটা শূন্যতা কাজ করবে, তবে তারই সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে আমাদের এগোতে হবে।”