কুস্তিগির বিনেশ ফোগট (বাঁ দিকে) ও বজরং পুনিয়া। —ফাইল চিত্র
এশিয়ান গেমসের ট্রায়ালের আগে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন প্রতিবাদী কুস্তিগিরেরা। হরিয়ানার সোনপতে স্পোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার (সাই) কমপ্লেক্সে প্রস্তুতি শুরু করেছেন বিনেশ ফোগট, সঙ্গীতা ফোগটেরা। সাইয়ের অন্য একটি কেন্দ্রে প্রস্তুতি নিচ্ছেন বজরং পুনিয়া। তবে সাক্ষী মালিক এখনও প্রস্তুতি শুরু করেননি।
ভারতীয় কুস্তি সংস্তার প্রধান ব্রিজভূষণ শরণ সিংহের বিরুদ্ধে যে কুস্তিগিরেরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম বিনেশ। তাঁর সঙ্গেই সোনপতে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন গীতা ফোগট। কমনওয়েলথ গেমসে সোনাজয়ী এই কুস্তিগির অনেক দিন আখড়ার বাইরে ছিলেন। সন্তান হওয়ার পরে আবার কুস্তিতে ফিরেছেন তিনি।
সাইয়ের এক আধিকারিক সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘‘প্রতিবাদী কুস্তিগিরেরা অনেক দিন আখড়া থেকে দূরে ছিলেন। তাই তাঁদের পুরোদমে প্রস্তুতি শুরু করতে একটু সময় লাগবে। প্রথমে জিমে বেশি সময় দিচ্ছেন তাঁরা। ধীরে ধীরে আখড়ায় অনুশীলন শুরু করবেন কুস্তিগিরেরা।’’
প্রথমে ঠিক ছিল জুন মাসের শেষে এশিয়ান গেমসের ট্রায়াল হবে। কয়েক দিন আগে কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রকের কাছে কুস্তিগিরেরা আবেদন করেন, ট্রায়াল পিছিয়ে অগস্ট মাসে করা হোক। কারণ, জুন মাসে ট্রায়াল হলে প্রস্তুতির পর্যাপ্ত সময় পাবেন না তাঁরা। তার পরেই অলিম্পিক্স কাউন্সিল অফ এশিয়ার কাছে ভারতীয় অলিম্পিক্স সংস্থা আবেদন করেছে, ভারতীয় কুস্তিগিরদের নাম জমা দেওয়ার জন্য অন্তত ১০ অগস্ট পর্যন্ত সময় দেওয়া হোক। আগের নির্দেশ অনুযায়ী, ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে ভারতীয় কুস্তিগিরদের নাম জমা দিতে হত। তার আগে ট্রায়াল শেষ হবে না বলেই এই আবেদন করেছেন ভারতীয় কুস্তি সংস্থা।
গত ২৩ এপ্রিল থেকে ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে দিল্লির যন্তর মন্তরে ধর্না শুরু করেন বজরং, সাক্ষী, বিনেশের মতো কুস্তিগিরেরা। বার বার আবেদনের পরেও সরকার তাঁদের কথা না শোনায় গত ২৮ মে নতুন সংসদ ভবন অভিযান করেন সাক্ষীরা। সেই সময় দিল্লি পুলিশ তাঁদের জোর করে আটক করে। এই ঘটনার পরে দেশের হয়ে জেতা সব পদক হরিদ্বারে গঙ্গায় ভাসিয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন কুস্তিগিরেরা। কিন্তু কৃষকনেতাদের হস্তক্ষেপে হরিদ্বারে গিয়েও ফিরে আসেন সাক্ষীরা। তাঁরা ৫ জুন পর্যন্ত সময়সীমা দেন কেন্দ্রকে।
এর পরেই পদক্ষেপ করে কেন্দ্র। কুস্তিগিরদের সঙ্গে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর। বৈঠকে পাঁচটি দাবি করেন কুস্তিগিরেরা। তার মধ্যে কয়েকটি দাবি মেনে নেয় কেন্দ্র। আশ্বাস দেওয়া হয় যে ১৫ জুনের মধ্যে তদন্ত শেষ করা হবে। এই আশ্বাস পেয়ে আন্দোলন স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেন কুস্তিগিরেরা। গত ১৫ জুন ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে ১৫০০ পাতার চার্জশিট জমা দিয়েছে দিল্লি পুলিশ। দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে গিয়ে ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করে। চার্জশিটে ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪ (জোর করে মহিলার শ্লীলতাহানির চেষ্টা), ৩৫৪এ (অশালীন মন্তব্য), ৩৫৪ডি (উত্যক্ত করা) ধারায় অভিযোগ করা হয়েছে। এই ধারাগুলির মধ্যে ৩৫৪ জামিনঅযোগ্য। তবে বাকি দু’টি ধারা জামিনযোগ্য। ২২ জুন রয়েছে সেই মামলার পরবর্তী শুনানি।