সদ্য টি-টোয়েন্টি সিরিজে নিউজিল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করেছে ভারত। এ বার, সামনে অন্য লড়াই। তিন ম্যাচের একদিনের সিরিজ এত একপেশে হবে বলে মনে করছে না ক্রিকেটমহল। যদিও ৫-০ জয়ের আত্মবিশ্বাস বুধবার হ্যামিল্টনে সঙ্গী হবে টিম ইন্ডিয়ার। মানসিক ভাবে তাই অনেক এগিয়েই একদিনের সিরিজ শুরু করবে বিরাট কোহালির দল। কেমন হতে পারে ভারতের প্রথম এগারো, দেখে নেওয়া যাক।
শিখর ধওয়ন না থাকায় পৃথ্বী শ-র অভিষেক হতে পারে এই ম্যাচে। অধিনায়ক কোহালি এর আভাস আগেই দিয়েছিলেন। ২০ বছর বয়সি নিউজিল্যান্ডে ভারত এ দলের হয়ে খেলেছেন। এক ম্যাচে ১৫০ রানও করেছেন। তাঁর কাছে জাতীয় দলে ফেরার এটা দারুণ সুযোগ।
রোহিত শর্মার জায়গায় একদিনের সিরিজের দলে এসেছেন ময়াঙ্ক আগরওয়াল। এখনও একদিনের ক্রিকেটে দেশের প্রতিনিধিত্ব করেননি। বুধবার তাই ওপেনিংয়ে জোড়া অভিষেক হচ্ছে ভারতের। ২৮ বছর বয়সি ময়াঙ্ক টেস্টে দলের নিয়মিত ওপেনার। এ বার তাঁর সামনে ৫০ ওভারের ফরম্যাটে নিজেকে চেনানোর সুযোগ।
বিরাট কোহালিকে বলা হয় চেজমাস্টার। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে চার টি-টোয়েন্টিতে তাঁর ব্যাটে অবশ্য বড় রান আসেনি। সর্বাধিক ৪৫। একবারও পঞ্চাশের গণ্ডি পার করতে পারেননি। ফলে, একদিনের সিরিজে বড় রানে পৌঁছতে তাঁর মরিয়া থাকারই কথা। ব্যাটসম্যান কোহালি বড় রান না পেলেও ক্যাপ্টেন কোহালি কিন্তু ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন টি-২০ সিরিজে।
ব্যাটিং অর্ডারের চার নম্বর জায়গা আপাতত শ্রেয়াস আইয়ার নিজের করে নিয়েছেন। তাঁর ব্যাটিংয়ে দেখা যাচ্ছে ধারাবাহিকতা। দেখা যাচ্ছে পরিণত মানসিকতাও। টি-টোয়েন্টি সিরিজে দরকারে বড় শট নিয়েছেন ২৫ বছর বয়সি। আবার খুচরো রান নিয়ে সচল রেখেছেন স্কোরবোর্ড। সবচেয়ে জরুরি হল, চার নম্বরে নির্ভরতা জোগাচ্ছেন দলকে।
স্বপ্নের ফর্মে রয়েছেন লোকেশ রাহুল। টি-টোয়েন্টি সিরিজে হয়েছেন সেরা। করেছেন দুই দল মিলিয়ে সবচেয়ে বেশি রান। উইকেটের পিছনেও থেকেছেন বিশ্বস্ত। তাঁকে পাঁচ নম্বরে ধাতস্থ হয়ে ওঠার সুযোগ দিতে চাইছে দল। কোহালি সেটা বার বার বলছেনও। শেষ পর্যন্ত ক্রিজে থেকে স্লগ ওভারে ঝড় তোলার দায়িত্ব থাকছে তাঁর উপরে।
মণীশ পাণ্ডে ছয় নম্বরে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন টি-টোয়েন্টি সিরিজে। বুঝিয়েছেন যে ছয়ে নেমে দলকে টানার ক্ষমতা রয়েছে তাঁর। একদিনের সিরিজেও সেই ভূমিকায় তাঁকে দেখতে চাইছে দল। ৩০ বছর বয়সি দীর্ঘদিন কাটিয়েছেন রিজার্ভ বেঞ্চে। সেই যন্ত্রণা তাঁর খেলার মধ্যে পরিষ্কারও। এখনও পর্যন্ত ২৫ একদিনের ম্যাচে ৩৪.৬১ গড়ে ৪৫০ রান করেছেন তিনি।
রবীন্দ্র জাডেজা হলেন দলের থ্রি-ডি ক্রিকেটার। ৩১ বছর বয়সির বাঁ-হাতি স্পিন রান আটকানোয় দক্ষ। চলনসই ব্যাটিং করেন তিনি। প্রয়োজনে নিতে পারেন বড় শট। আর ফিল্ডিংয়ে তিনি বিশ্বের সেরাদের মধ্যে পড়েন। টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম তিন ম্যচে তিনি খেলেছেন। ভারতের শেষ একদিনের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে বল হাতেও সাফল্য পেয়েছেন।
কুলদীপ যাদব পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে খেলেননি। যুজবেন্দ্র চহালকে খেলানো হয়েছিল। একদিনের সিরিজে তাই সুযোগ পেতেই পারেন ২৫ বছর বয়সি। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে জানুয়ারিতে ঘরের মাঠে তিন ম্যাচের একদিনের সিরিজেও খেলেছিলেন তিনি। এখনও পর্যন্ত ৫৯ একদিনের ম্যাচে ১০২ উইকেট নিয়েছেন তিনি।
মহম্মদ শামিকে সদ্য এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা পেসার হিসেবে চিহ্নিত করেছেন শোয়েব আখতার। নিউজিল্যান্ডে তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে ২৯ বছর বয়সির দুরন্ত ওভারই টাই করেছিল ম্যাচ। জানুয়ারিতে ভারতের শেষ একদিনের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে চার উইকেট নিয়েছিলেন শামি।
নবদীপ সাইনি দ্রুত উঠে আসছেন। দুরন্ত গতির সঙ্গে নিশানায় অভ্রান্ত থাকা তাঁর বৈশিষ্ট। ২৭ বছর বয়সি নিউজিল্যান্ডে টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ দুই ম্যাচে নিজেকে প্রমাণও করেছেন। বিশেষ করে ডেথ ওভারে তিনি নজর কেড়েছেন। এখনও পর্যন্ত তিনটি একদিনের ম্যাচ খেলেছেন নবদীপ। নিয়েছেন পাঁচ উইকেট।
জশপ্রীত বুমরা এখন তিন ফরম্যাটেই বিশ্বের সেরা বোলারদের মধ্যে পড়েন। ২৬ বছর বয়সি সদ্য শেষ টি-টোয়েন্টিতে জিতিয়েছেন ভারতকে। চার ওভারে ১২ রানে নিয়েছেন তিন উইকেট। ডেথ ওভারে তাঁকে সামলানো কত কঠিন, তা টি-টোয়েন্টি সিরিজে বুঝেছেন কিউয়িরা। সেই মেজাজেই একদিনের সিরিজে তাঁকে দেখতে চাইছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা।