প্রীতি পাল। ছবি: এক্স।
প্যারালিম্পিক্সের ট্র্যাক ও ফিল্ড ইভেন্টে প্রথম বার পদক জিতল ভারত। শুক্রবার প্যারিসে ভারতকে ব্রোঞ্জ পদক এনে দিলেন প্রীতি পাল। উত্তরপ্রদেশের মেয়ে মহিলাদের ১০০ মিটার দৌড়ের টি-৩৫ বিভাগে ব্রোঞ্জ জিতলেন। ১৪.২১ সেকেন্ড সময় করে পদক জিতেছেন প্রীতি। সোনা জিতেছেন চিনের জিয়া ঝৌ (১৩.৫৮) এবং রুপো চিনেরই কিয়ানকিয়ান গুয়োর (১৩.৭৪)।
প্যারা-অ্যাথলিট হিসাবে প্রীতির জীবন অনুপ্রেরণার থেকে কম নয়। মিরাটে জন্ম তাঁর। ছোটবেলাতেই সেরিব্রাল পলসিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। যেখানে থাকতেন, সেখানকার চিকিৎসা ব্যবস্থা খুব একটা উন্নত ছিল না। ফলে প্রীতির জীবন আরও কঠিন হয়ে ওঠে। কিন্তু দৌড়ের প্রতি প্রীতির ভালবাসা একটুও কমেনি।
দৌড়ের জন্যই এক সময় দিল্লিতে চলে যান তিনি। সেখানে কোচ গজেন্দ্র সিংহের অধীনে কোচিং নিতে থাকেন তিনি। জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে প্রতি সপ্তাহে ৩৬ ঘণ্টা অনুশীলন করেন। প্রীতির দৃঢ়প্রতিজ্ঞ মনোভাব তাঁকে আরও সাফল্য এনে দিয়েছে। সকল বাধা অতিক্রম করে তিনি এগিয়ে গিয়েছেন। খেলো ইন্ডিয়া প্রকল্পের থেকেও সাফল্য পেয়েছে। ভারতের ভাল ভাল স্টেডিয়ামে অনুশীলনের সুযোগ পেয়েছেন। কোচ গজেন্দ্রর কথাও ভুললে চলবে না। প্রীতির টেকনিক ঠিক করা এবং তাঁকে আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছেন প্রতিনিয়ত।
২০২৪ সালের মে মাসে বিশ্ব প্যারা অ্যাথলিট চ্যাম্পিয়নশিপে টি৩৫ ২০০ মিটার ইভেন্টে ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন তিনি। সময় নিয়েছিলেন ৩০.৪৯ সেকেন্ড। এর ফলে প্যারালিম্পিক্সে সরাসরি সুযোগ পেয়ে যান। এর পর টি-৩৫ ১০০ মিটার ইভেন্টে ব্রোঞ্জ জেতেন। দু’টি ক্ষেত্রেই ভারতের প্রথম প্যারা স্প্রিন্টার হিসাবে এই কৃতিত্ব অর্জন করেন। তার আগে বেঙ্গালুরুতে ইন্ডিয়ান ওপেন প্যারা অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে দু’টি সোনা জিতেছিলেন তিনি।
খেলা ছাড়াও আঁকতে ভালবাসেন প্রীতি। মিরাটের চৌধুরি চরণ সিংহ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বনবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। কেন স্প্রিন্টে এসেছেন, সে সম্পর্কে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “প্রথম থেকেই দৌড় আমার খুব পছন্দের বিষয়। ফিটনেসের জন্য বেশি ভাল লাগত। আলাদা একটা অনুপ্রেরণা পেতাম।”