মনোযোগ: টিভির পর্দায় চলছে রিচার খেলা। সেদিকে চোখ। শিলিগুড়ি শহরে সোমবার। নিজস্ব চিত্র
ক্রিজে তখন রিচা। টেলিভিশনের পর্দার দিকে তাকিয়ে অনেক জোড়া চোখ। রিচা প্রথম বাউন্ডারিটা মারতেই সবাই একসঙ্গে চেঁচিয়ে উঠল ‘রিচা রিচা’ করে। সোমবার সন্ধেয় বাঘাযতীন অ্যাথলেটিক ক্লাবের ছবি। শহরের ওই ক্লাবেই ক্রিকেটে হাতেখড়ি রিচা ঘোষের। এ দিন খেলা দেখতে সেখানেই ভিড় জমিয়েছিল একাধিক ক্রীড়াপ্রেমী।
মহিলাদের টি২০ বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পাওয়ার পর থেকে তার খেলা দেখতে মুখিয়ে রয়েছেন শিলিগুড়িবাসী। প্রথম দিনের খেলায় প্রথম ১১ জনের দলে সুযোগ পায়নি রিচা। তাতেও আগ্রহ কমেনি শহরবাসীদের। সোমবার সেই প্রতীক্ষার অবসান হয়েছে। এ দিন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ৬ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ১৪ বলে ১৪ রান করেছে রিচা। ম্যাচ জিতেছে ভারতীয় দল। তাতেই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েছে শিলিগুড়ির ক্রীড়াপ্রেমীরা। এ দিন শিলিগুড়ি বিভিন্ন ক্লাবেই রিচার খেলা দেখতে ভিড় ছিল। অনেক ক্লাবের সামনে রিচার ছবি টাঙানো হয়েছে।
এ দিন ভারতীয় দলের অধিনায়ক হরমনপ্রীত সিংহ ম্যাচের পরে প্রচারমাধ্যমের সামনে রিচার প্রশংসা করে বলেন, ‘‘যে ভাবে শেফালি আর রিচা আজ ব্যাট করল, তা প্রমাণ করছে দলের সবাই দুরন্ত পারফরম্যান্স করতে মুখিয়ে।’’
রবিবার মেয়ের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছিল মানবেন্দ্র ঘোষের। তিনি জানান, রবিবারও জানা যায়নি রিচাকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে খেলানোর কথা। তিনি শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন মেয়ে এবং ভারতীয় দলকে। মেয়ে সুযোগ পেলে নিজের সেরাটা দেওয়ার কথা বলেছিল বলে জানান। এ দিন প্রয়োজনীয় কাজে মানবেন্দ্র ঘোষ বালুরঘাটে ছিলেন। আত্মীয়ের ফোনে জানতে পারেন রিচার খেলার কথা। মোবাইলে দেখেন মেয়ের খেলা। তখন রিচা দু’টি চার মেরেছে। তিনি বলেন, ‘‘ভারতীয় দলের জার্সিতে মেয়েকে ব্যাট হাতে মাঠে দেখার প্রতীক্ষার অবসান হল। বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পেয়েছে এটাই গর্বের। আরও বেশি গর্বের বিষয় যে দল জিতেছে। আরও ভাল খেললে বেশি ভাল লাগত।’’ আগামী ম্যাচগুলিতে রিচা আরও ভাল খেলবে বলে তাঁর আশা।
রিচার ছোটবেলার কোচ গোপাল সাহা জানান, বাংলা দলের হয়ে ওপেনিং থেকে দুই বা তিন নম্বরে খেলেছে অনেকবার। ৬ নম্বর্ও খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে রিচার। গোপাল বলেন, ‘‘আজকে ওকে যতটা ফিট দেখেছি তাতে মনে হয়েছে ও আগামী ম্যাচগুলিতে ভাল খেলবে। ওর হাতে ভাল শট রয়েছে। আগামী দিনে আরও বড় সাফল্য পাবে আশা করছি।’’
রিচার খেলা বাড়িতে বসে দেখেছেন শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদের সচিব অরূপরতন ঘোষ। বলেন, ‘‘রিচার খেলা যখন দেখছিলাম নিজেকে গর্বিত মনে হচ্ছিল।’’