ভরসা: ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টিতে ব্যস্ত ‘নাইট’ প্যাট কামিন্স। ছবি: রয়টার্স
ইংল্যান্ড সফর শেষ করে আর ১২ দিন পরেই আইপিএল খেলতে মরুদেশে পা দিচ্ছেন তিনি। কলকাতা নাইট রাইডার্সের অন্যতম সেরা অস্ত্র প্যাট কামিন্স। শনিবার দুপুরে সাউদাম্পটন থেকে ভিডিয়ো কনফারেন্সে আনন্দবাজার-সহ বিশ্বের নানা সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তর দিলেন অস্ট্রেলীয় পেসার। ইংল্যান্ড সফরের পরেই প্রায় দু’মাসের আইপিএল। কী ভাবে দেখছেন এই চ্যালেঞ্জকে? কামিন্স বললেন, ‘‘গত দু’বছর আমি লাল বলের ক্রিকেটই বেশি খেলেছি। এ বছর টানা সাদা বলের ক্রিকেট আছে। এই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে আমি তৈরি।’’
ইংল্যান্ডের হাল্কা স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ থেকে গিয়ে পড়তে হবে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির গরমে। যেখানকার পিচ মন্থর হবে বলেই ধরে নেওয়া হচ্ছে। আইপিএলের জন্য কী হবে তাঁর কৌশল? টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর বোলারের জবাব, ‘‘সাদা বলের ক্রিকেটের জন্য অন্য ভাবে নিজেকে তৈরি করতে হয়। আমিও সে ভাবে তৈরি হচ্ছি। মন্থর উইকেটের জন্য বোলিংয়ে বৈচিত্র প্রয়োজন। ইয়র্কার, স্লো ডেলিভারি, এগুলো খুব কাজে লাগে। আমিও এগুলোই কাজে লাগাতে চাই।’’
এ বারের নিলামে কামিন্সই ছিলেন সব চেয়ে দামি ক্রিকেটার। তাঁকে সাড়ে ১৫ কোটি টাকায় কিনেছে কেকেআর। নাইট সমর্থকদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, ‘‘তৈরি থাকো সবাই। দারুণ একটা উত্তেজক সময় আসছে।’’ তার পরেই যোগ করছেন, ‘‘সত্যি কথা বলতে কী, মাস ছয়েক আগেও ভাবিনি এ বারের আইপিএল আদৌ হবে বলে। আইপিএলে খেলার জন্য আমি মুখিয়ে আছি।’’ আগেও তিনি ছিলেন নাইট শিবিরে। বলছেন, ‘‘কেকেআরের সঙ্গে আমি দারুণ সময় কাটিয়েছি। নাইটদের ক্রিকেটার এবং সাপোর্ট স্টাফের সঙ্গে আমার
সম্পর্কটা খুবই ভাল।’’
মহেন্দ্র সিংহ ধোনির চেন্নাই সুপার কিংসের ১৩ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সুদর্শন পেসারের কথাবার্তা শুনে অবশ্য মনে হল না, তিনি আদৌ চিন্তিত। বলে দিলেন, ‘‘যখন সই করেছি, তখনই তো জানি আইপিএল কত দীর্ঘ একটা প্রতিযোগিতা। আর আমরা লম্বা সফরে অভ্যস্ত। তবে হ্যাঁ, এ বার অবশ্যই পরিস্থিতিটা অন্য রকম।’’ যোগ করলেন, ‘‘নিরাপত্তা নিয়ে আমার কোনও চিন্তা নেই। আমি তো ইংল্যান্ডে দেখছি, কী ভাবে ক্রিকেটার, সাপোর্ট স্টাফ এবং বাকিদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সামান্য কোনও খুঁত চোখে পড়েনি। আমি নিশ্চিত, আইপিএলেও জৈব সুরক্ষা বলয় নিয়ে উদ্বেগের কিছু থাকবে না।’’
আমিরশাহিতে এ বার ক্রিকেটারদের বড় চিন্তা গরম। বিশেষ করে পেস বোলারদের। কী ভাবে সামলাবেন এই গরমের চ্যালেঞ্জকে? কামিন্স বলছেন, ‘‘সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে খেলার অভিজ্ঞতা আছে আমার। ওখানকার গরমটা রীতিমতো দুঃস্বপ্ন। তবে দেখা যাক এ বার কী অবস্থা দাঁড়ায়। একবার ওখানে গিয়ে পৌঁছলে বুঝতে পারব।’’
ইংল্যান্ডের সঙ্গে সিরিজ শেষ হবে ১৬ তারিখ। তার পরে পাড়ি জমাবেন আবু ধাবি। আইপিএলে এ বার মানসিক চাপ বেশি থাকতে পারে কি না জানতে চাওয়ায় কামিন্স বলছেন, ‘‘যখনই আমরা বাইরে যাই, সেটা একটা মানসিক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। বন্ধু, স্ত্রী, পরিবার— সবাইকে দেশে রেখে যাই। তবে এ বার অবশ্যই পরিস্থিতি অন্য। পারিপার্শ্বিক ব্যাপারের উপরে আমাদের বেশি নজর রাখতে হবে।’’
প্রায় ছ’মাস ক্রিকেট থেকে দূরে রয়েছেন। গত কাল ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার পরে কামিন্সের মন্তব্য, ‘‘মাস দু’য়েক আগেও চিন্তিত ছিলাম, মাঠে নামার পরে কী হবে। গত কাল ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে বল করে বুঝলাম, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য আমি পুরোপুরি তৈরি।’’ আজ, রবিবার, আবার দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে অইন মর্গ্যানদের বিরুদ্ধে নামবেন কামিন্স। করোনা পরিস্থিতিতে মানসিক চ্যালেঞ্জ নিয়ে তিনি বলছেন, ‘‘অস্ট্রেলিয়া দলের সঙ্গে থাকলে ব্যাপারটা এক রকমের। সেখানে নিজের প্রিয় কুড়ি জনের সঙ্গে সব সময় দেখা হচ্ছে। আবার অন্য ক্ষেত্রে পরিস্থিতি অন্য রকমের হয়। কেউ হয়তো ব্যলকনিতে গিয়ে কফি খায়, কেউ বই পরে। কেউ বা সকালে জগিং করতে যায়। কারও পছন্দ হয়তো যোগ বা ধ্যান। মোদ্দা ব্যাপারটা হল, পরিস্থিতির মোকাবিলায় সকলেরই নিজের-নিজের একটা কৌশল থাকে।’’
ইংল্যান্ড সিরিজ শেষেই মিশন আইপিএল। শাহরুখ খানের নাইট শুধু একটা জিনিসই চান— ‘‘পরিস্থিতি বদলে গেলেও আশা করব ক্রিকেট বদলাবে না।’’