যে গতিতে মাঠে বল করেন, সেই গতিতে স্ত্রীর ‘মন ঘোরাতে’ পারছেন না! গত ২ বছর ধরেও বিরাট কোহলীর উপর থেকে স্ত্রীর নজর কিছুতেই নিজের দিকে ঘুরিয়ে আনতে পারছেন না পাক পেসার হাসান আলি!
খোদ পাক পেসারের স্ত্রীর প্রিয় ক্রিকেটার কি না বিরাট! এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানিয়েছেন হাসান-পত্নী।
হাসান-পত্নী, পাকিস্তানের এই ‘বৌমা’ আসলে মনেপ্রাণে ভারতীয়. নাম সামিয়া আলি। হরিয়ানার মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম সামিয়ার। তাঁর বাবা লিয়াকত আলি ছিলেন হরিয়ানা সরকারের অধীনস্ত সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক।
তবে হরিয়ানায় জন্ম হলেও গত ১৫ বছর সপরিবার তাঁরা ফরিদাবাদে থাকেন। ফরিদাবাদেই সামিয়ারা ৬ ভাইবোন একসঙ্গে বড় হয়েছেন।
স্কুলের গণ্ডি পেরনোর পর সামিয়া ফরিদাবাদের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করেন।
তার পর একটি বিমান সংস্থার ইঞ্জিনিয়ার হয়ে দুবাই চলে যান। সামিয়া কর্মসূত্রে দুবাইয়েই থাকতেন।
২৬ বছরের হাসান তখন পাকিস্তান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের উঠতি তারকা। ৩ বছরের আন্তর্জাতিক কেরিয়ারে তেমন সুযোগও পাননি। তার উপর পাকিস্তানি।
দুবাইয়ে একটি টুর্নামেন্ট খেলতে গিয়েছিলেন হাসান। তখনই এক বন্ধুর মারফত তাঁদের আলাপ। ২০১৯ সালে দুবাইয়েই একটি ছোট অনুষ্ঠান করে বিয়ে করেন তাঁরা। বিয়ের আগে ১ বছরের বন্ধুত্ব এবং প্রেম।
প্রথম দেখাতেই সামিয়াকে ভাল লেগে গিয়েছিল তাঁর। কিন্তু সামিয়া ক্রিকেট নিয়ে কোনও দিন কৌতূহলী ছিলেন না। তাই হাসানকেও তিনি চিনতেন না।
সামিয়ার নিরীহ মন ছুঁয়ে গিয়েছিল হাসানকে। তাঁদের প্রথম দিন থেকেই বন্ধুত্ব হয়ে যায়। ক্রমে মিশুকে এবং যত্নশীল হাসানকে ভাল লেগে যায় সামিয়ার।
১ বছরের বন্ধুত্ব এবং প্রেমের পরই তাঁরা নিজেদের পরিবারকে এই সম্পর্কের কথা জানান। যদিও সীমান্তের দু’পাড়ের দুই পরিবার কী ভাবে বিষয়টি নেবে তা নিয়ে যথেষ্ট ধন্দ্বে ছিলেন দু’জনেই।
হয়েছিল উল্টোটা। হাসানকে নিয়ে যেমন সামিয়ার পরিবারের কোনও আপত্তি ছিল না, তেমন সামিয়ার কথা জানা মাত্রই তাঁকে স্বাগত জানান হাসানের পরিবারও।
সীমান্তের দুই পাড়ের রাজনীতির সঙ্গে এই সম্পর্ক কখনও মিশিয়ে ফেলে না তাঁদের পরিবার। সামিয়ার পরিবার পাকিস্তানকে আলাদা দেশ বলে মনেও করেন না।
সে দেশে আজও তাঁর পরিবারের কিছু লোক থাকেন। এবং তাঁদের সঙ্গে নিত্য যোগাযোগও রাখেন সামিয়ার বাবা। দেশ ভাগের সময়ই তাঁরা পাকিস্তানে চলে গিয়েছিলেন।
২০১৯-এর ২০ অগস্ট তাঁদের বিয়ে হয়। বিযেতে অনেক ভারতীয় ক্রিকেটারও নিমন্ত্রিত ছিলেন। ওই বছরই একটি বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন হাসান। ভারতের ক্রিকেট ভক্তেরা কড়া সমালোচনা করেছিলেন তাঁর।
হাসান আসলে পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত এক র্যাম্প শো-এ মডেলিং করার সময় ওয়াঘা সীমান্তে পাক ‘বিটিং রিট্রিট’-এর মতো অঙ্গভঙ্গি করেছিলেন। তখন নতুন জামাইয়ের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন শ্বশুর (সামিয়ার বাবা)। হাসানের মনে ভারতীয় ক্রিকেটার এবং সর্বোপরি ভারতের প্রতি কতটা সম্মান রয়েছে তা জানিয়েছিলেন তিনি।
২০২১ সালের ৬ এপ্রিল অতিমারির মধ্যেই তাঁদের প্রথম সন্তানের জন্ম হয়। তার নাম রেখেছেন হেলেনা।