ডেভিড ওয়ার্নার।—ছবি এএফপি।
তিনি নিজে শনিবার ব্রায়ান লারার অপরাজিত চারশো রানের রেকর্ড ভাঙার সামনে চলে এসেছিলেন। কিন্তু তার আগেই ইনিংস ডিক্লেয়ার করে অস্ট্রেলিয়া। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অ্যাডিলেড টেস্টে ডেভিড ওয়ার্নারকে থেমে যেতে হয় অপরাজিত ৩৩৫ রানে। ওয়ার্নার পারেননি। আর কারও পক্ষে কি কোনও দিন সম্ভব হবে টেস্টে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলা? লারাকে টপকে যাওয়া?
স্বয়ং ওয়ার্নার মনে করেন, এক জনের পক্ষে লারার এই রেকর্ড ভাঙা সম্ভব। তিনি ভারতের রোহিত শর্মা। ট্রিপল সেঞ্চুরি করে উঠে সাংবাদিকদের ওয়ার্নার বলেন, ‘‘আমাকে যদি কোনও এক জনের নাম করতে বলেন, তা হলে রোহিত শর্মার কথা বলব। হ্যাঁ, রোহিতই।’’
সীমিত ওভারের ক্রিকেটে দারুণ সাফল্য পাওয়া রোহিত প্রথম দিকে টেস্ট ক্রিকেটে নিজেকে সেই উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারেননি। যদিও ওপেনার হিসেবে টেস্টে ফেরার পরে কয়েক মাস আগে জোড়া সেঞ্চুরি করে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ম্যান অব দ্য সিরিজ হয়েছিলেন। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে অনেক দিন আগে থেকেই রোহিতকে বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান বলে ধরা হয়। ওয়ান ডে ক্রিকেটে তিনিই একমাত্র ব্যাটসম্যান যাঁর তিনটে ডাবল সেঞ্চুরি আছে।
২০০৪ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্টে অপরাজিত চারশো রান করেছিলেন লারা। যে রেকর্ড এখনও অক্ষত। কী ভাবে এই কঠিন লক্ষ্যে পৌঁছনো সম্ভব? ওয়ার্নার বলেছেন, ‘‘এটা নির্ভর করে ব্যাটসম্যানের উপরে। এমনিতে বাউন্ডারি বড় হয়। আর অতটা সময় ব্যাট করতে হলে ক্লান্ত হয়ে যেতেই হবে ব্যাটসম্যানকে। তখন বাউন্ডারিতে বল পাঠানো বেশ কঠিন হয়ে যায়। আমি তো এতটাই ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম যে, দুই রান নেওয়া শুরু করি। বুঝতে পারছিলাম, বাউন্ডারিতে বল পাঠানোর শক্তি আর নেই। কেউ যদি লারার এই রেকর্ড ভাঙে, তবে রোহিতই হবে বলে আমার ধারণা।’’
শুধু রোহিতই নন, আরও এক জন ভারতীয় ওপেনারের কথা বলেছেন ওয়ার্নার। তিনি বীরেন্দ্র সহবাগ। একটা সময় সহবাগের দিল্লির হয়ে আইপিএলে খেলেছিলেন ওয়ার্নার। তখন এমন একটা কথা বলেছিলেন সহবাগ, যা ওয়ার্নারের পক্ষেও বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়েছিল। কিন্তু বীরুর পরামর্শ ভুলতে পারেননি তিনি।
কী বলেছিলেন সহবাগ? ওয়ার্নার বলেছেন, ‘‘দিল্লির হয়ে আইপিএল খেলার সময় সহবাগ আমাকে বলেছিল, ‘টি-টোয়েন্টির চেয়ে ভাল টেস্ট ব্যাটসম্যান হবে তুমি।’ আমি বিশ্বাসই করতে পারিনি। বলেছিলাম, কী বলছ! আমি তো কয়েকটা প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছি মাত্র! তখন সহবাগ আমাকে এমন একটা কথা বলে, যা আমি ভুলতে পারিনি।’’
কী ছিল সহবাগ-মন্ত্র? ওয়ার্নারের স্মৃতিচারণ, ‘‘সহবাগ বলেছিল, ‘টেস্টে ওরা স্লিপ রাখবে, গালি রাখবে। কিন্তু কভার ফাঁকা থাকবে। মিডউইকেট নিজের জায়গায় থাকবে। মিডঅফ, মিডঅন বাউন্ডারি লাইনে থাকবে না। ফলে শুরুতে দ্রুত রান করার প্রচুর সুযোগ পাবে তুমি। তার পরে সারা দিন ধরে ব্যাট করো।’ সহবাগের এই কথাগুলো কখনও ভুলিনি।’’ কোনও সন্দেহ নেই, তাঁর দেখানো পথে হেঁটে টেস্টেও শ্রেষ্ঠত্ব এখন প্রমাণ করে চলেছেন ওয়ার্নার।