সতীর্থদের সঙ্গে সিমোন বাইলস (ডান দিক থেকে দ্বিতীয়)। ছবি: এক্স।
প্যারিসে সোনা জেতার হাতছানি সিমোন বাইলসের সামনে। অলিম্পিক্সের চতুর্থ দিনই পদক জেতার সুযোগ রয়েছে তাঁর। মঙ্গলবার জিমন্যাস্টিক্সে দলগত প্রতিযোগিতার ফাইনালে নামবেন বাইলস। যোগ্যতা অর্জন পর্বে সকলের উপরে শেষ করেছে আমেরিকার মহিলা দল। দাপট দেখিয়েছেন বাইলস। অলিম্পিক্সে নিজের অষ্টম পদক জেতার লক্ষ্যে মঙ্গলবার নামবেন তিনি।
আমেরিকার মহিলাদের দলে বাইলস ছাড়া রয়েছেন জেড ক্যারে, জর্ডন চিলেস, সুনিসা লি ও হেজ়লি রিভেরা। রবিবার যোগ্যতা অর্জন পর্বে ১৭২.২৯৬ স্কোর করে আমেরিকা। একমাত্র আনইভেন বার ছাড়া প্রতিটি ইভেন্টে শীর্ষে শেষ করে তারা। চারটি ইভেন্ট মিলিয়ে এক নম্বরে শেষ করে ফাইনালের যোগ্যতা অর্জন করেছে তারা। ফলে সোনা জেতার সবচেয়ে বড় দাবিদার বাইলসেরা।
জিমন্যাস্টিক্সে দলগত প্রতিযোগিতায় যোগ্যতা অর্জন পর্বে দাপট দেখিয়েছে আমেরিকা। চারটি আলাদা আলাদা বিভাগে সব মিলিয়ে তাদের পয়েন্ট ১৭২.২৯৬। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ইটালি (১৬৬.৮৬১)। তিন নম্বরে চিন (১৬৬.৬২৮)। ব্যক্তিগত স্কোরে সকলের উপরে বাইলস। তাঁর স্কোর ৫৯.৫৬৬। বাইলসের দলেরই সুনিসার স্কোর ৫৬.১৩২। তিন নম্বরে জর্ডন। তাঁর স্কোর ৫৬.০৬৫। কিন্তু তিনি অলরাউন্ড ফাইনালে উঠতে পারেননি। কারণ, সেই ইভেন্টে প্রতিটি দেশ থেকে দু’জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। বাইলসের সঙ্গে সেই ইভেন্টে দেখা যাবে সুনিসাকে।
তিন বছর আগে ছবিটা এ রকম ছিল না। টোকিয়োয় মহিলাদের দলগত ফাইনালের মাঝপথে সরে দাঁড়ান বাইলস। ব্যক্তিগত কয়েকটি ইভেন্টেও নামেননি তিনি। বাইলস জানিয়েছিলেন, ‘টুইস্টিস’ (জিমন্যাস্টেরা হাওয়ায় নিজের অবস্থান বুঝতে পারেন না। ফলে ল্যান্ডিংয়ে সমস্যা হয়। জিমন্যাস্টেরা এই সমস্যাকে এই নামেই ডাকেন)-এর সমস্যা হয়েছে তাঁর। রবিবার বাইলসকে দেখে মনে হল, সেই সমস্যা স্যেন নদীর জলে ছুড়ে ফেলে এসেছেন তিনি। প্রথমেই ব্যালান্স বিমে দাপট দেখালেন। বাইলসের রুটিনে কোনও ভুল চোখে পড়েনি। ১৪.৭৩৩ স্কোর করেন তিনি।
তার পরে ফ্লোর ইভেন্টে নামেন বাইলস। সেখানেই তাঁর পায়ে চোট লাগে। বাঁ পায়ের গোড়ালিতে টেপ বাঁধা ছিল। গোড়ালি কিছুটা ফুলেও ছিল। তাতে অবশ্য কোনও সমস্যা হয়নি বাইলসের। সেই অবস্থাতেই ফ্লোর ইভেন্টে ১৪.৬৬৬ স্কোর করেন তিনি। ফ্লোর থেকে বাইলস যখন বেরিয়ে আসছেন তখন তাঁর কাছে যান কোচ কেসিলে লান্ডি। ১৯৯৬ সালে ফ্রান্সের হয়ে অলিম্পিক্সে নেমেছিলেন তিনি। লান্ডিতে বাইলস জানান, ঠিক আছেন তিনি।
তৃতীয় ইভেন্ট ছিল ভল্ট। সেখানে তিনি কেমন করেন সে দিকেই নজর ছিল সকলের। বিশেষ করে যখন নিজের মার্কে তিনি যাচ্ছিলেন, তখন বেশ কিছু ক্ষণ খোঁড়াতে দেখা যায় তাঁকে। কিন্তু ফল্টের সময় সে সব উধাও। নিজের পরিচিত ইয়ুরচেঙ্কো ভল্ট দিতে দেখা যায় তাঁকে। তবে ল্যান্ডিংয়ের সময় একটু সমস্যা হয়। শরীরের ভারসাম্য ধরে রাখতে কয়েক পা পিছিয়ে যেতে হয় তাঁকে। ভল্ট ইভেন্টে ১৫.৮০০ স্কোর করেন বাইলস।
আমেরিকার জিমন্যাস্টের শেষ ইভেন্ট ছিল আনইভেন বার। সেখানে তিনি ১৪.৪৩৩ স্কোর করেন। চারটি ইভেন্ট শেষ হওয়ার পরে চওড়া হাসি দেখা যায় বাইলসের মুখে। ফাইনালে সেই ছন্দই ধরে রাখতে চান বাইলস। ২০১৬ রিয়ো অলিম্পিক্সে চারটি সোনা ও একটি ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন। ২০২১ টোকিয়োতে বেশ কয়েকটি ইভেন্ট থেকে নাম তুলে নেওয়ার পরেও একটি রুপো ও একটি ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন তিনি। এ বার প্যারিসে শুরুতেই সোনা জিততে চাইছেন বাইলস। মঙ্গলবারই সেই সুযোগ রয়েছে তাঁর।
জিমন্যাস্টিক্সে মহিলাদের দলগত প্রতিযোগিতার ফাইনাল শুরু হবে রাত ৯টা ৪৫ মিনিট থেকে। টেলিভিশনে খেলা দেখা যাবে স্পোর্টস ১৮ চ্যানেলে। ডিজিটাল মাধ্যমে জিয়ো সিনেমা অ্যাপে দেখা যাবে খেলা।