আমেরিকার নোয়া লাইলস। ছবি: রয়টার্স।
অলিম্পিক্সের গেমস ভিলেজে তিনি ছদ্মবেশে ঘুরে বেড়ান। বাকিদের নজর এড়াতে চোখে সানগ্লাস, মাথায় টুপি এবং কখনও-সখনও মুখে মাস্ক পরে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায় তাঁকে। কিন্তু ট্র্যাকে নামলে তাঁকে চিনতে অসুবিধা হয় না কারও। সেই নোয়া লাইলস কিছুটা হতাশই করলেন পুরুষদের ১০০ মিটারের প্রথম রাউন্ডে। তার পরে দোষ দিলেন নিজেকেই। প্রথম রাউন্ডে নজর কাড়লেন নোয়ার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কিশান থমসন এবং লুই হিঞ্চলিফ।
দৌড় শেষের পর নোয়া বলেছেন, “প্রত্যেকেই এখানে নিজেদের প্রমাণ করতে এসেছে। অলিম্পিক্সের মতো প্রতিযোগিতাকে কিছুটা ছোট করে দেখার ফল পেলাম। আমার কাছে আজকের ফল একটা শিক্ষা। কেউ যখন ট্র্যাকের লাইনে দাঁড়ায়, তখন সে নিজের সেরাটা দিতেই নামে। আজকের মতো ভুল আর কখনও হবে না। আমিও সেরাটা দিতে তৈরি।”
স্টার্টিং ব্লকে দাঁড়িয়ে মজা করতে দেখা যাচ্ছিল নোয়াকে। কখনও ক্যামেরার দিকে পোজ় দিচ্ছেন, কখনও আমেরিকার পতাকার রঙে রাঙানো নখ দেখাচ্ছেন, কখনও অদৃশ্য প্রতিদ্বন্দ্বীর উদ্দেশে ঘুষি ছুড়ছেন। কিন্তু দৌড়ের সময় নিজস্ব ছন্দ দেখা গেল না। হিটে দ্বিতীয় স্থানে শেষ করলেন। সময় নিয়েছেন ১০.০৪ সেকেন্ড।
শনিবারের আটটি হিটে সবার আগে শেষ করেছেন দু’জন। আমেরিকার কেনেথ বেদনারেক এবং ফ্রেড কার্লে ৯.৯৭ সেকেন্ড সময় করেছেন। দু’জনেই নোয়াকে হারানোর চেষ্টায় রয়েছেন। এ ছাড়া হিঞ্চলিফ (৯.৯৯), নাইজেরিয়ার কাইনসোলা আজায়ি (১০.০২), লাইলসের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী থমসন (১০.০০), গত বারের অলিম্পিক্সে সোনাজয়ী মার্সেল জ্যাকবসও (১০.০৫) সোনা জয়ের দৌড়ে রয়েছেন।
হিটে দ্বিতীয় স্থানে শেষ করায় সেমিফাইনালে পছন্দের লেন পাবেন না নোয়া। দৌড়ের পরে বলেছেন, “আমি আমার প্রতিদ্বন্দ্বীদের নিশ্চিত ভাবেই ছোট করে দেখেছি। কাউকেই খুব বেশি গুরুত্ব দিতে চাইনি। কিন্তু ওরা প্রমাণ করে দিয়েছে যে প্রত্যেকে আমাকে টক্কর দিতে পারে। বুঝতে পেরেছি এই কাজ আর করা চলবে না। আমি প্রতিজ্ঞা করলাম।”
গত বছর ১০০ মিটারে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় অলিম্পিক্সেও সোনার দাবিদার নোয়া। তবে তাঁর মতে, অলিম্পিক্স অনেক কঠিন প্রতিযোগিতা। বলেছেন, “তখন প্রমাণ করতেই হত আমি বিশ্বের দ্রুততমদের একজন। এখন সকলে সেটা জানি। আমার নিজেরও লক্ষ্য শুধু সোনাই।”
নোয়া যেখানে চাপে রয়েছেন, সেখানে অনেক ফুরফুরে থমসন। শেষ ২০ মিটারে তিনি জগিং করে শেষ করলেন। নিখুঁত ১০ সেকেন্ডে দৌড় শেষ করেছেন। থমসনের হিট শুরু হতে কিছুটা দেরি হয়। কারণ তার আগে ব্রিটেনের স্প্রিন্টার জেরেমিয়া আজু ফল্স স্টার্ট করেছিলেন। রিপ্লে দেখে স্বপক্ষে আবেদন করেন আধিকারিকদের কাছে। তার পরে ট্র্যাক ছাড়েন।
এই প্রতিযোগিতায় বাকি দুই দৌড়বিদ কেনিয়ার ফার্দিনান্দ ওমানিয়ালা ১০.০৮ সেকেন্ড এবং জামাইকার অবলিক সেভিল ৯.৯৯ সেকেন্ডে শেষ করেছেন। গত বারের চ্যাম্পিয়ন জ্যাকবস জানান, স্টার্টিং ব্লকে তাঁকে কোনও পোকা কামড়েছে। তবে দৌড়ে প্রভাব পড়েনি। পরে বলেন, “শুরুতে কিছু ভুল করেছি। ফলে যে গতিতে শুরু করতে চেয়েছিলাম তা পারিনি।”