(বাঁ দিকে) সমরেশ জং, মনু ভাকের। —ফাইল ছবি।
মনু ভাকের এবং সরবজ্যোৎ সিংহের অলিম্পিক্স পদক জয়ের নেপথ্যে রয়েছেন সমরেশ জং। প্রাক্তন শুটার এখন জাতীয় দলের পিস্তল শুটিং কোচ। প্যারিসে মনু এবং সরবজ্যোতের সাফল্যে সমরেশ যখন উচ্ছ্বসিত, তখনই তাঁর জীবনে নেমে এসেছে বিপদ। দেশে ফিরে ঘরছাড়া হতে হচ্ছে প্রাক্তন শুটারকে।
দিল্লির খাইবার পাস এলাকার বাসিন্দা সমরেশের বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছে উচ্ছেদের নোটিস। কেন্দ্রের আবাসন এবং নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের অধীনস্থ ভূমি এবং উন্নয়ন বিভাগ জানিয়েছে, খাইবার পাস এলাকার বেশ কিছু বাড়ি দু’দিন পর থেকে ভাঙার কাজ শুরু হবে। সেই তালিকায় রয়েছে সিআইএসএফ আধিকারিক সমরেশের বাড়িও। জানানো হয়েছে, খাইবার পাস এলাকার সব জমি প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সম্পত্তি। সেখানে যে কোনও নির্মাণ বেআইনি।
বাড়ি ভাঙার নোটিস পেয়ে হতভম্ব হয়ে গিয়েছেন সমরেশ। তিনি বলেছেন, ‘‘এটা সরকারের পরিকল্পনা। আমার এ ব্যাপারে কিছুই জানা নেই। সরকার গোটা কলোনিকে বেআইনি ঘোষণা করেছে। আমরা গত ৭৫ বছর ধরে খাইবার পাস কলোনিতে বসবাস করছি। ১৯৫০ সালে আমাদের বাড়ি তৈরি হয়েছিল। সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে গিয়েছিলাম। আমার আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছে।’’
খাইবার পাস কলোনির সমস্ত বাসিন্দাকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বাড়ি খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে সমরেশ বলেছেন, ‘‘আমাদের কিছু সময় দেওয়া হোক। আজকে জানানো হল আর কালকের মধ্যে বাড়ি খালি করে দিয়ে চলে যেতে হবে, এটা সম্ভব নয়।’’ ২০০৮ সালে বেজিং অলিম্পিক্সে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করা সমরেশ আরও বলেছেন, ‘‘বাড়ি খালি করার জন্য অন্তত দু’মাস সময় দেওয়া হোক।’’
প্যারিস থেকে দেশে ফেরার পর বৃহস্পতিবার রাতেই বাড়ি ছাড়ার নোটিস পেয়েছেন সমরেশ। তার পর সমাজমাধ্যমে তিনি লেখেন, ‘‘অলিম্পিক্সে জোড়া পদক জয়ের আনন্দ নিয়ে সবে বাড়ি ফিরেছি। ভারতীয় দলের অন্যতম কোচ আমি। এমন সাফল্যের পর বাড়ি ফিরেই মন ভেঙে গেল। আমার বাড়ি এবং এলাকার সব নির্মাণ দু’দিন পরে ভেঙে দেওয়া হবে।’’
২০০৬ সালের কমনওয়েলথ গেমসে ভারতের সফলতম খেলোয়াড় ছিলেন সমরেশ। সে বার পাঁচটি সোনা, একটি রুপো এবং একটি ব্রোঞ্জ পদক জিতেছিলেন প্রাক্তন শুটার। ২০০২ সালের কমনওয়েলথ গেমসেও দু’টি সোনা জিতেছিলেন। সে বছরই পেয়েছিলেন অর্জুন পুরস্কার।