Paris Olympics 2024

‘সোনা জিতবই’, প্যারিসে ১০০ মিটারে নামার আগেই বলেছিলেন বিশ্বের দ্রুততম মানব নোয়া লাইলস

প্যারিসে পুরুষদের ১০০ মিটার দৌড়ে সোনা জিতেছেন নোয়া লাইলস। প্রতিযোগিতায় নামার অনেক আগেই আমেরিকার দৌড়বিদ ঘোষণা করে দিয়েছিলেন যে সোনা জিতবেন তিনি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০২৪ ০১:৩৩
Share:

উল্লাস নোয়া লাইলসের। ছবি: রয়টার্স।

প্যারিসে তাঁর দিকে নজর ছিল গোটা বিশ্বের। দ্রুততম মানব কি তিনি হতে পারবেন, সেই প্রশ্ন ঘুরছিল সকলের মনে। জবাব দিলেন নোয়া লাইলস। প্যারিসে পুরুষদের ১০০ মিটার দৌড়ে সোনা জিতেছেন তিনি। সময় নিলেন ৯.৭৯ সেকেন্ড।

Advertisement

প্রতিযোগিতায় নামার অনেক আগেই আমেরিকার দৌড়বিদ ঘোষণা করে দিয়েছিলেন যে সোনা জিতবেন তিনি। নিজের কথা রাখলেন তিনি। নোয়ার লড়াই ছিল জামাইকার কিশানে থম্পসনের বিরুদ্ধে। কিশানেকে ফোটো ফিনিশে হারিয়েছেন নোয়া।

বিশ্ব অ্যাথলেটিক্সে নজর কাড়লেও এর আগে পর্যন্ত অলিম্পিক্সে তেমন কিছু ভাল পারফর্ম করেননি নোয়া। ২০২১ সালে টোকিয়োয় ২০০ মিটার প্রতিযোগিতায় ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন তিনি। তার পরে আরও উন্নতি করেন তিনি। ২০১৮, ২০১৯ ও ২০২২ সালে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে ২০০ মিটারে সোনা জেতেন তিনি। ২০২৩ সালে ত্রিমুকুট দখল করেন। ১০০ মিটার, ২০০ মিটার ও ৪০০X৪ মিটারে সোনা জেতেন নোয়া। ২০১৫ সালে জামাইকার উসেইন বোল্ট যা করেছিলেন, সেটাই ২০২৩ সালে করে দেখান নোয়া। তার পরেই প্যারিসে সোনা জেতার অন্যতম দাবিদার হয়ে ওঠেন তিনি।

Advertisement

বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের পরে নোয়া জানিয়ে দিয়েছিলেন, তিনিই বিশ্বের দ্রুততম মানব। অলিম্পিক্সেও সোনা জিতবেন তিনি। নোয়া বলেছিলেন, “আমিই বিশ্বের দ্রুততম। সকলেই জানে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ ও অলিম্পিক্সে সোনা জিতলে তাকেই বিশ্বের দ্রুততম বলা হয়। আমি একটা করেছি। আর একটাও করব।”

বরাবরই স্পষ্টবক্তা নোয়া। নিজেকে সেরা বলতে এক বারও ভাবেন না। কারণ, তিনি মনে করেন, নিজেকে সেরা বললে তবেই সেই মানসিকতা নিয়ে খেলা সম্ভব। বার বার সেই মানসিকতা নিয়ে কথা বলেছেন নোয়া। এ বারও অলিম্পিক্সের আগে তিনি বলেন, “আপনাকে ভাবতে হবে যে আপনিই ঈশ্বর। যত বার দৌড়তে নামবেন তত বার নিজেকে সেরা ভাবতে হবে। আমি কাউকে নিজের আদর্শ মনে করি না। নিজের উপর বিশ্বাস আছে। আমি মানসিক ভাবে শক্তিশালী। সে ভাবেই নিজেকে তৈরি করেছি।”

প্যারিসে নামার আগে নোয়া জানিয়েছিলেন, চারটি সোনা জিতে ফিরতে চান তিনি। ব্যক্তিগত ভাবে দু’টি সোনার পাশাপাশি দলগত প্রতিযোগিতাতেও জোড়া সোনার দিকে নজর ছিল তাঁর। নোয়া বলেন, “আমি ১০০ ও ২০০ মিটারে সোনা জিতব। তার পরে দুটো রিলে রেসেও সোনা জিততে চাই। রেকর্ড ভাঙতে চাই।”

তারই প্রথম ধাপ করে দেখালেন নোয়া। ১০০ মিটারে এল সোনা। এ বার বাকিগুলোর দিকে নজর দেবেন তিনি।

তবে এই জায়গায় আসতে লড়াই করতে হয়েছিল নোয়াকে। ছোট থেকে শ্বাসকষ্টের সমস্যা ছিল তাঁর। সেই কারণেই তাঁর বাবা-মা তাঁকে কোচিংয়ে ভর্তি করিয়ে দেন। উদ্দেশ্য ছিল, খেলাধুলো করলে শ্বাসকষ্টের সমস্যা মিটবে। তবে তিনি যে সেই সমস্যা কাটিয়ে অলিম্পিক্সে দেশের হয়ে লড়বেন তা ভাবেননি তাঁরা। শুধু শ্বাসকষ্টের সমস্যা নয়, মানসিক সমস্যার বিরদ্ধেও লড়তে হয়েছিল তাঁকে।

২০২০ সালের অগস্ট মাসে সমাজমাধ্যমে নোয়া জানান, তিনি মানসিক অবসাদ মেটাতে ওষুধ খাচ্ছেন। তার পরেই নিজের জীবনের পাতা সকলের সামনে খুলে দেন নোয়া। তিনি জানান, অনেক ছোট থেকেই এই সমস্যার মোকাবিলা করতে হত তাঁকে। নোয়া বলেন, “৯ বছর বয়স থেকে আমি মানসিক অবসাদের ওষুধ খেতাম। ছোটবেলায় অনেক সমস্যার মোকাবিলা করতে হয়েছে। মাঝে মাঝে অবসাদে পড়তাম। কিন্তু হাল ছাড়িনি। এখনও মনোবিদের সঙ্গে কথা বলি। ওষুধ খাই।”

বোল্ট, জোহান ব্লেকদের উত্তরসূরি নোয়া। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে আমেরিকার হয়ে ছ’টি সোনা জিতেছেন। এ বার অলিম্পিক্সে নেমেছেন। একটি সোনা জেতা হয়ে গিয়েছে।এখনও তিনটি ইভেন্টে নামবেন। দেশকে বিশ্ব অ্যাথলেটিক্সের মানচিত্রে তুলে ধরার দৌড় শুরু করেছেন তিনি। থামতে চাইছেন না নোয়া।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement