সোনা জয়ের পর নোয়া লাইলস। ছবি: রয়টার্স।
অলিম্পিক্সে পুরুষদের ১০০ মিটারে সোনা জিতলেন নোয়া লাইলস। হয়ে গেলেন বিশ্বের দ্রুততম মানব। সময় নিলেন ৯.৭৯ সেকেন্ড। রবিবার প্যারিসের স্তাদ দ্য ফ্রাঁস দেখল এই গ্রহের সবচেয়ে দ্রুত মানুষকে। এমন দৌড় শেষ কবে দেখা গিয়েছে তা অনেকেই মনে করতে পারছেন না। ফটো ফিনিশে দ্বিতীয় হলেন কিশানে থমসন, যিনি সোনা জয়ের আর এক দাবিদার ছিলেন। তাঁর সময়ও ৯.৭৯ সেকেন্ড। বিজয়ী নির্ণয় করতে এক সেকেন্ডকে ১০০০ ভাগে ভাগ করা হয়। সেখানেই ভগ্নাংশের হিসাবে .০০৫ সেকেন্ড কম সময় নেওয়ায় বিজয়ী নোয়া। ৯.৮১ সেকেন্ড সময় করে ব্রোঞ্জ পেলেন আমেরিকারই ফ্রেড কার্লি।
২০০৮ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত অলিম্পিক্সে একচ্ছত্র্য দাপট ছিল জামাইকার। বলা ভাল উসাইন বোল্টের। অলিম্পিক্সে টানা তিন বার সোনা জিতেছিলেন তিনি। টোকিয়ো অলিম্পিক্সের আগে বোল্ট অবসর নিয়েছিলেন। জামাইকারও কেউ প্রথম তিনে শেষ করতে পারেননি। কিন্তু প্যারিস অলিম্পিক্সের আগে আশা তৈরি হয়েছিল কিশানেকে নিয়ে। বছরের সেরা সময় ছিল তাঁরই। পাশাপাশি অবলিক সেভিলও আশা জুগিয়েছিলেন। প্রথম রাউন্ড এবং হিটে নিজের নামের প্রতি সুবিচার করেছিলেন কিশানে। ফাইনালে আর একটু হলেই সোনা উঠতে পারত তাঁর গলায়। তা হল না।
দীর্ঘ দিন পর আমেরিকা ১০০ মিটারে পেল সোনা জয়ী। ২০০৪ সালে জাস্টিন গ্যাটলিন শেষ বার সোনা জিতেছিলেন। তার পরে পেলেন নোয়া। ১৮৯৬ সালে অলিম্পিক্স শুরু হওয়ার পর থেকে প্রথম তিন বার সোনা জিতেছিল আমেরিকাই। ১০০ মিটারে ১৬টি সোনা রয়েছে আমেরিকার। এই দাপট বিশ্বের আর কোনও দেশের নেই। মাঝে জামাইকার কাছে পিছিয়ে পড়েছিল তারা। সেই দাপট আবার ফেরালেন নোয়া।
যে কোনও অলিম্পিক্সেই পুরুষদের ১০০ মিটার দৌড় নিয়ে আগ্রহ বেশি থাকে। প্যারিসও তার ব্যতিক্রম নয়। দিনের বাকি অ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতা আগেই শেষ হয়ে গিয়েছিল। এই ইভেন্টের আগে স্টেডিয়ামের সব আলো নিভিয়ে দেওয়া হয়। এর পর প্রায় মিনিট দুয়েক ধরে চলে লেজ়ারের খেলা। গোটা স্টেডিয়াম কানায় কানায় পূর্ণ। ফুটছিলেন সমর্থকেরা।
স্টেডিয়ামের লাউডস্পিকারে নোয়ার নাম ঘোষণা করা হতেই বেরিয়ে এলেন তিনি। দর্শকদের দিকে তাকিয়ে হাত তুলে চিৎকার করতে লাগলেন। আসলে নিজেকেই নিজে তাতাচ্ছিলেন তিনি। কারণ, এ ধরনের ইভেন্টে প্রতিযোগীর মানসিক অবস্থা পার্থক্য গড়ে দিতে পারে। একই কাজ করেন কিশানেও।
ট্র্যাকে দাঁড়িয়েও অনবরত লাফিয়ে যাচ্ছিলেন নোয়া। তাঁর চোখেমুখে অন্য রকমের আত্মবিশ্বাস লক্ষ করা যাচ্ছিল। প্রথম রাউন্ড এবং সেমিফাইনালে সে ভাবে মন কাড়তে পারেননি। কিন্তু আসল কাজটা করে গেলেন ফাইনালেই।