প্রত্যয়ী: খেলার মাঝেই চলছে শুশ্রুষা। চোট নিয়েই জয় নোভাকের। এপি
যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে গত বারের চ্যাম্পিয়ন তিনি। কিন্তু শুরুতেই কিছুটা দুশ্চিন্তা তৈরি হয়ে গেল নোভাক জোকোভিচকে নিয়ে। ভারতীয় সময় বৃহস্পতিবার সকালে আর্জেন্টিনার খুয়ান ইগনেসিয়ো লোনডেরোকে ৬-৪, ৭-৬ (৭-৩), ৬-১ হারিয়ে তৃতীয় রাউন্ডে উঠলেও কাঁধের চোটে বিব্রত হতে হল তাঁকে।
ম্যাচের মধ্যে তিন বার শুশ্রুষা নিতে হয়েছে জোকোভিচকে। পরে তিনি বলেন, ‘‘অবশ্যই আমার অসুবিধে হচ্ছিল। বিশেষ করে সার্ভ করার সময় এবং ব্যাকহ্যান্ড শট নিতে গিয়ে অস্বস্তিতে পড়ছিলাম।’’ কেরিয়ারে আর কখনও কাঁধের জন্য এমন মারাত্মক অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে বলে মনে করতে পারছেন না সার্বিয়ান তারকা। সেই কারণে আরও বেশি করে চিন্তা বেড়েছে তাঁকে নিয়ে। এমনও বললেন যে, ‘‘আমার তো একটা সময়ে সন্দেহ হচ্ছিল, ম্যাচটা শেষই করতে পারব কি না। খুবই খুশি হয়েছি যে, শেষ করতে পেরেছি।’’
পরের রাউন্ডে সার্বিয়ারই দুসান লাজোভিচের সঙ্গে খেলা পড়তে পারে জোকোভিচের, যদি দুসান হারাতে পারেন আমেরিকার ডেনিস কুডলাকে। বৃষ্টির জন্য ফ্লাশিং মেডোজে তৃতীয় দিনে অনেক খেলাই বিঘ্নিত হয়েছে। দুসানের ম্যাচও তার মধ্যে ছিল। আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামে বন্ধ ছাদের নীচে যে আটটি ম্যাচ ছিল, সেগুলোই শুধু শেষ করা গিয়েছে। জোকোভিচের ম্যাচ তার মধ্যে অন্যতম। ৩২ বছরের জোকোভিচ এ বারও চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দৌড়ে এক নম্বর ফেভারিট। ফ্লাশিং মেডোজে তিন বারের বিজয়ী তিনি। মাঝে তাঁর ফর্ম নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হলেও শেষ পাঁচটি গ্র্যান্ড স্ল্যামের চারটিই তিনি জিতেছেন বলে নিউ ইয়র্কেও তাঁকেই সবাই এগিয়ে রাখছিল। তবে কাঁধের চোটের খবরে কিছুটা হলেও সংশয় তৈরি হবে। দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচ খেলার সময় বেশ জোরদার ম্যাসাজই দরকার হয়ে পড়েছিল তাঁর। প্রথম সেটে ৩-৩ অবস্থায় প্রথম ‘মেডিক্যাল টাইমআউট’ নেন তিনি। প্রথম সেট জেতার পরে ফের ট্রেনারকে ডেকে নেন। কাঁধের চোট নিয়ে বিব্রত থাকলেও হতাশা প্রকাশ করতে দেখা যায়নি জোকোভিচকে। বরং ঠান্ডা মাথায় ম্যাচ বার করে নেন। ম্যাচের পরে অবশ্য তিনি স্বীকার করেছেন, ‘‘আমি ভাগ্যবান যে স্ট্রেট সেটে জিততে পেরেছি। বিরতিতে নিয়মের মধ্যে থেকে আমি শুশ্রুষা নিয়েছি।’’ তার পরেই যোগ করছেন, ‘‘গ্র্যান্ড স্ল্যামে ভাল ব্যাপার হচ্ছে, দু’টো ম্যাচের মাঝে এক দিন বিশ্রাম পাওয়া যায়। আমি আশা করছি, সমস্যা কাটিয়ে কোর্টে ফিরতে পারব।’’
মেয়েদের বিভাগে উদ্বেগ কাটিয়ে তৃতীয় রাউন্ডে পৌঁছেছেন সেরিনা উইলিয়ামস। আমেরিকার ‘ওয়াইল্ড কার্ড’ ক্যাথরিন ম্যাকনালির বিরুদ্ধে প্রথম সেট হেরে গিয়েছিলেন তিনি। ক্যাথরিনের বয়স ১৭ বছর। তিনি জন্মানোর আগেই সেরিনা জিতে গিয়েছিলেন প্রথম যুক্তরাষ্ট্র ওপেন খেতাব। আর একটু হলে খুদে প্রতিপক্ষই বিরাট অঘটন ঘটিয়ে দিচ্ছিলেন ফ্লাশিং মেডোজে। শেষ পর্যন্ত ৫-৭, ৬-৩, ৬-১ ফলে জিতে সেরিনা রেকর্ড ২৪তম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতার আশা বাঁচিয়ে রেখেছেন। ‘‘দারুণ খেলেছে। একদম ভয়ডরহীন মেয়েটা। ওর কোনও কিছু হারানোর ছিল না। ঠিক সেই মনোভাব নিয়েই খেলেছে,’’ ক্যাথরিন সম্পর্কে বলেন সেরিনা।
প্রায় হারিয়ে যেতে বসা সার্ভ ও ভলি টেনিসকে হাতিয়ার করে সেরিনাকে কোণঠাসা করে ফেলেছিলেন ক্যাথরিন। একটা সময়ে নিজের র্যাকেটের দিকে তাকিয়ে সেরিনা চেঁচিয়ে ওঠেন, ‘‘কেন বার বার মিস করছ?’’ শেষ পর্যন্ত অবশ্য ছ’বার যুক্তরাষ্ট্র ওপেন বিজয়ী অঘটন ঘটতে দেননি। ‘‘আজ রাতে আমি রক্ষা পেয়ে গিয়েছি,’’ বলে যান সেরিনা, ‘‘কিন্তু নিজের খেলায় একেবারেই খুশি হতে পারিনি।’’ ও দিকে, সেরিনার দিদি ভিনাস উইলিয়ামস অন্য এক কাণ্ড ঘটান। এলিনা সোয়াইতোলিনার কাছে হেরে বিদায় নেওয়ার ম্যাচের মধ্যেই তিনি কফি অর্ডার করেন। ভিড় ঠাসা স্ট্যান্ড থেকে তাঁর কফি পৌছে দিতে সময় লেগে যায়। এর আগে সিনসিনাটি মাস্টার্সেও এ ভাবে খেলার মাঝে কফি চেয়েছিলেন তিনি।