জয়ী: দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠার পথে ফেডেরার এবং নাদাল।ছবি: এএফপি
যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে দুই কিংবদন্তির অভিযান শুরুর দিন হঠাৎ করে আলোচনায় উঠে এল আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামের ছাদ।
বৃষ্টি হলে গত বছর থেকেই আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়াম ঢেকে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু একবার কোর্ট ঢেকে দেওয়ার পরে আবদ্ধ অবস্থায় ভিতরের আওয়াজ অনেক বেড়ে যায়। যা নিয়েই নিজের প্রথম ম্যাচ হওয়ার পরে অভিযোগ জানিয়ে গেলেন রাফায়েল নাদাল। যিনি প্রথম রাউন্ডে সার্বিয়ার দুসান লাজোভিচ-কে হারালেন ৭-৬, ৬-২, ৬-২।
কিন্তু এই ১৫ কোটি ডলারের কৃত্রিম ছাদ না থাকলে আবার বুধবার রজার ফেডেরারের ম্যাচও দেখা হত না নিউ ইয়র্কের দর্শকদের। গত বছর যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে খেলেননি ফেডেরার। তাই এই ‘ইন্ডোর’ স্টেডিয়ামে খেলার অভিজ্ঞতা হয়নি তাঁর। প্রথম বার খেলার পরে কী মনে হচ্ছে? ফ্রান্সেস তিয়াফো-কে পাঁচ সেটের লড়াইয়ে হারিয়ে উঠে ফেডেরার আবার বলছেন, ‘‘দারুণ একটা অভিজ্ঞতা হল। দর্শকদের আওয়াজটা খুব জোরদার হচ্ছিল। আগে এ রকম অভিজ্ঞতা হয়নি আমার।’’
প্রথম রাউন্ডে জিতেও সমস্যায় রাফা-রজার ৩৬ বছর বয়সি সুইস মহাতারকা প্রথম সেট হেরে গেলেও শেষ পর্যন্ত জেতেন ৪-৬, ৬-২, ৬-১, ১-৬, ৬-৪। ম্যাচের পরে ফেডেরার স্বীকার করে নিয়েছেন, চোটটা তাঁকে চিন্তায় রেখেছিল। তবে এও যোগ করছেন, প্রথম রাউন্ডে এ রকম হাড্ডাহাড্ডি একটা লড়াই তাঁকে পরের ম্যাচগুলোর জন্য তৈরি করে দিয়েছে। ফেডেরার বলেন, ‘‘প্রথম দিকে আমার মাথায় পিঠের চোটের ব্যাপারটা ছিল। তার পর সেটা ভুলে যাই।’’
কিন্তু আপনার কি মনে হয় বাকি ম্যাচগুলোয় এই চোট ভোগাতে পারে? যার জবাবে ১৯টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ী ফেডেরার বলেন, ‘‘আমি যদি ভয় পেতাম যে এই চোটটা ক্রমশ বাড়বে, তা হলে এই টুর্নামেন্টে নামতামই না। আমি বিশ্বাস করি, আমার শরীর এই ধকল নিতে পারবে। আমি প্রতি ম্যাচে উন্নতি করতে পারব।’’ প্রথম রাউন্ডের পরে তিনি যে এখন কতটা আত্মবিশ্বাসী, সেটা বলছিলেন ফেডেরার— ‘‘আমি যে রকম চেয়েছিলাম, এখানে আসার আগে প্রস্তুতিটা সে রকম হয়নি। কিন্তু এই ম্যাচটা জিতে আমি এখন ভীষণ আত্মবিশ্বাসী। শারীরিক ভাবে এবং মানসিক ভাবে।’’
নাদাল আবার জিতে উঠে একের পর এক অভিযোগ করছেন। স্টেডিয়ামের আওয়াজ নিয়ে তিনি যেমন বলেছেন, তেমনই আবার তাঁর ক্ষোভের মুখে পড়েছেন অ্যান্ডি মারেও। টুর্নামেন্ট থেকে হঠাৎ করে সরে যাওয়ার জন্য তিনি যে সময়টা বেছেছেন, সেটা একেবারেই পছন্দ হয়নি নাদালের। স্প্যানিশ মহাতারকা বলেছেন, ‘‘মারের সরে যাওয়ার সময়টা অদ্ভুত। চোট থাকলে অনেকে ড্র ঘোষণার আগে সরে যায়। আবার কেউ কেউ টুর্নামেন্ট শুরু হওয়ার দিন হয়তো সরে গেল। কিন্তু যে দিন ড্র ঘোষণা হল, তার পরের দিনই কেউ সরে যায় না। যেমন মারে গেল। ওর সিদ্ধান্তে আমি বেশ অবাক।’’ নাদাল আরও বলেন, ‘‘মারে যখন এখানে প্র্যাকটিস করছিল, তখন আমি নিশ্চিত ছিলাম ও খেলবে। না হলে শুধু শুধু প্র্যাকটিস করবে কেন? কিন্তু ও ড্রয়ের পর দিন (শনিবার) না খেলার সিদ্ধান্ত নিল। সবাই তো শেষ পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে যায় খেলার। না পারলে রবিবার রাতে বা সোমবার সকালে সরে যায়। সে জন্যই মারের সিদ্ধান্তে আমি অবাক হয়েছি।’’
ঘটনা হল, ড্র হওয়ার আগে যদি মারে সরে যেতেন, তা হলে ফেডেরার বাছাই তালিকায় দু’নম্বরে উঠে আসতেন এবং তিনি আর নাদাল এক অর্ধে থাকতেন না। এবং সে ক্ষেত্রে সেমিফাইনালে দু’জনের দেখা হওয়া সম্ভব হতো না। নাদাল এর আগেও বলেছেন, সেমিফাইনালে তিনি ফেডেরারকে চান না। কিন্তু এখন যা পরিস্থিতি, দুই কিংবদন্তি আর কয়েকটা ম্যাচ জিতলেই পরস্পরের মুখে পড়বেন।
এক দিকে যখন এই দুই কিংবন্তি সাড়া ফেলেছেন তাঁদের প্রথম রাউন্ডের ম্যাচ জিতে, তখন টেনিসের ‘গ্ল্যামার কুইন’ তৈরি হচ্ছেন তাঁর দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচের জন্য। এ বার মারিয়া শারাপোভার প্রতিদ্বন্দ্বী তিমিয়া ব্যাবোস। হাঙ্গেরির তরুণীর বিরুদ্ধে আপাতত শারাপোভাকেই ফেভারিট বলছে টেনিস দুনিয়া।