দুরন্ত: অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে বিধ্বংসী ফর্মে রাফায়েল নাদাল। বুধবার মেলবোর্ন পার্কে। ছবি: এএফপি
রাফায়েল নাদাল যে রকম কলার তুলে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের দ্বিতীয় সপ্তাহের দিকে এগোচ্ছেন, তাতে মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক, অন্য তারকাদের সবচেয়ে কড়া চ্যালেঞ্জ তিনিই ছুড়ে দেবেন।
বিশ্বসেরা তারকার বিরুদ্ধে বুধবার কোর্টে নেমেছিলেন আর্জেন্তিনার লিওনার্দো মেয়ার। তৃতীয় সেট টাইব্রেকারে যাওয়ার আগে তাঁকে প্রায় দম নিতেই দেননি নাদাল। রড লেভার এরিনায় যাঁরা এ দিন বিধ্বংসী নাদালকে দেখার আশা নিয়ে এসেছিলেন, তাঁরা হাসিমুখেই ফিরে গিয়েছেন নাদালের দাপুটে জয় দেখে। যদিও গত বছরের রানার আপ জেতার পরে বলেন, ‘‘আমার বিপক্ষ কিন্তু বেশ বিপজ্জনক ছিল’’, কিন্তু সারা ম্যাচে একবারও তা মনে হয়নি। ৬-৩, ৬-৪-এর পরে তৃতীয় সেট টাই ব্রেকারে ৭-৪-এ জিতে নেন স্প্যানিশ তারকা।
নাদাল যতটা সহজে তৃতীয় রাউন্ডে উঠলেন মেয়েদের দু’নম্বর তারকা ক্যারোলিন ওজনিয়াকির দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে তৃতীয় রাউন্ডে যাওয়ার রাস্তা অতটা সহজ হয়নি এ দিন। ডেনিশ তারকা প্রথম সেটে হারেন। আর শেষ সেটে দু’বার ম্যাচ পয়েন্ট বাঁচিয়ে ১-৫ অবস্থা থেকে উঠে এসে শেষ পর্যন্ত ৭-৫ করেন বিশ্বের ১১৯ নম্বর খেলোয়া়ড়ের বিরুদ্ধে। দ্বিতীয় সেট ৬-২ জিতে নেন তিনি। ম্যাচ জেতার পরে ওজনিয়াকি নিজেই বলেন, ‘‘আমি নিজেই জানি না, কী করে ম্যাচে ফিরলাম।’’ বছরের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যামের মেয়েদের সিঙ্গলসে প্রথম দিন থেকেই তারকারা হোঁচট খাচ্ছেন। এ দিন শুধু ওজনিয়াকি নন, চতুর্থ বাছাই এলিনা স্বিতোলিনাও প্রথম সেট হারার পরে ম্যাচ জেতেন চেক ক্যাটরিনা সিনিয়াকোভার বিরুদ্ধে।
নাদালের হাঁটু নিয়ে অনেকেই চিন্তায় থাকলেও প্রথম দু’রাউন্ডে তাঁকে দেখে কিন্তু মনেই হয়নি তেমন কোনও চোট সারিয়ে কোর্টে নেমেছেন তিনি। ছাইরঙা টি-শার্ট ও গোলাপি শর্টসে রীতিমতো উজ্জীবিত লেগেছে তাঁকে। ম্যাচের পরে কিছুটা মজা করেই বলেন, ‘‘এটা আমার আর আমার পরিবারের খুব পছন্দের টুর্নামেন্ট। আশা করি এই টুর্নামেন্টে আরও কিছু বেশি সময় টিকে থাকতে পারব।’’ পরের রাউন্ডে তাঁকে ২৮ নম্বর বাছাই দামির জুমহুরের বিরুদ্ধে নামতে হবে। এ দিন তিনি আবার বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে নীচের দিকে থাকা খেলোয়াড়দের জন্য এটিপি-র আয়ের বাড়তি লভ্যাংশ দাবি করে নতুন এই বিতর্কে যোগ দিলেন। এর আগে নোভাক জকোভিচও খেলোয়াড়দের আয় বাড়ানোর দাবি করেছিলেন। পরে তিনি অবশ্য তা অস্বীকার করেন।
ফরাসি ওপেন চ্যাম্পিয়ন ও মেয়েদের সপ্তম বাছাই ইয়েলেনা ওস্তাপেঙ্কোও এ দিন দ্বিতীয় রাউন্ডের বাধা পেরিয়েছেন সহজেই। গত বছরের উইম্বলডন রানার্স ও ছেলেদের ষষ্ঠ বাছাই ক্রোয়েশিয়ার মারিন সিলিচও তৃতীয় রাউন্ডে উঠেছেন।
মেলবোর্নের গরমের শিকার প্রতি বছরই অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে কেউ না কেউ হয়ে থাকে। এ বার সেই তালিকায় এক নম্বর অভিজ্ঞ ফরাসি তারকা জাইল সিমোন, যিনি ২-৬, ০-৩ অবস্থায় কোর্ট ছেড়ে চলে যান যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের সেমিফাইনালিস্ট পাবলো কারেনো বুস্টার বিরুদ্ধে।
এ দিনের সেরা লড়াইটা অবশ্য হয় টুর্নামেন্টের প্রাক্তন রানার আপ জো উইলফ্রেজ সোঁগা ও কানাডার তরুণ ডেনিস শাপোভালভের মধ্যে, যা পাঁচ সেটে গড়ানোর পরে সোঁগা জেতেন।
মেয়েদের সিঙ্গলসের সেরা অঘটনের নায়িকা সুইস মহিলা তারকা বেলিন্ডা বেনচিচ দ্বিতীয় রাউন্ড থেকেই বিদায় নিলেন এ দিন। এই ঘটনায় মনে হচ্ছে বেলিন্ডা এই টুর্নামেন্টে নেমেছিলেন শুধু প্রথম রাউন্ডে ভিনাস উইলিয়ামসকে হারিয়ে অঘটন ঘটানোর জন্যই।