East Bengal

ডার্বি ঘিরে উত্তাপ বাড়ছে শহরে, উৎকণ্ঠার আবহে প্রস্তুতিতে মগ্ন কিবু

সবুজ-মেরুন অন্দরমহলের পরিস্থিতিও খুব একট স্বস্তিদায়ক নয়। রবিবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে আই লিগের ডার্বি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২০ ০৬:৩১
Share:

মহড়া: ডার্বির আগে ফ্রান গঞ্জালেসদের প্রস্তুতি চলছে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

এটিকের সঙ্গে ঐতিহাসিক সংযুক্তিকরণকে কেন্দ্র করে মোহনবাগান সমর্থকদের একাংশ ক্ষোভে ফুটছে। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। তাঁদের অভিযোগ, ১৩০ বছরের পুরনো ক্লাবের সম্মান, ঐতিহ্য ও সমর্থকদের আবেগকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে গাঁটছড়া বাঁধা হয়েছে। কেউ কেউ লিখেছেন, ১৮৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত মোহনবাগানের মৃত্যু হল ২০২০ সালের ১৬ জানুয়ারি। কারও মতে, তাঁদের প্রিয় ক্লাবকে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

এটিকের অন্যতম অংশীদার ও বোর্ড প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় শুক্রবার বলেছেন, ‘‘খেলা এখন অনেক বেশি পেশাদার হয়ে গিয়েছে। এটাই ভবিষ্যৎ। ম্যাঞ্চেস্টারের মতো বড় ক্লাবও এ রকম পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। সফল হবে কি না তা সময়ই বলবে। কিন্তু এটাই ভবিষ্যৎ।’’ কিন্তু কিংবদন্তি ফুটবলার ও প্রাক্তন কোচ প্রদীপ কুমার (পিকে) বন্দ্যোপাধ্যায় একেবারেই মেনে নিতে পারছেন না এই সংযুক্তিকরণ। আনন্দবাজারকে তিনি বললেন, ‘‘মোহনবাগানের ইতিহাসে অত্যন্ত লজ্জাজনক ঘটনা। এই ক্লাব কর্তাদের অবশ্য সবুজ-মেরুন জার্সির মূল্য বোঝার ক্ষমতা নেই।’’

সবুজ-মেরুন অন্দরমহলের পরিস্থিতিও খুব একট স্বস্তিদায়ক নয়। রবিবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে আই লিগের ডার্বি। তার আগে এটিকের সঙ্গে সংযুক্তিকরণের খবরে ভবিষ্যৎ নিয়ে উৎকণ্ঠিত হয়ে পড়েছেন ফুটবলারেরা। ডার্বির আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে পরিস্থিতি সামলাতে আসরে নেমেছেন দুই শীর্ষ কর্তা। শুক্রবার দুপুরে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন সংলগ্ন মাঠে অনুশীলন শুরুর আগে ড্রেসিংরুমে ফুটবলারদের সঙ্গে কথা বলেন মোহনবাগানের সহ-সচিব ও অর্থ সচিব। সবুজ-মেরুন অন্দরমহলের খবর, ফুটবলারদের তাঁরা আশ্বস্ত করে বলেছেন, উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনও কারণ নেই। সকলেরই ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত। ফুটবলারদের মধ্যে কেউ কেউ প্রশ্ন করেছিলেন, আগামী মরসুমে তাঁদের নিয়ে কী ভাবছেন ক্লাব কর্তারা? জানা গিয়েছে, সরাসরি কোনও উত্তর দেননি দুই কর্তা। তাঁরা আশ্বস্ত করেছেন এই বলে যে, ভাল খেললে কোনও ফুটবলারেরই ক্লাবের অভাব হবে না। উদ্বিগ্ন ফুটবলারেরা শুধু নন, কোচ কিবু ভিকুনাও। হাসিখুশি স্পেনীয় কোচ এ দিন থমথমে মুখে ডার্বির প্রস্তুতি সেরেছেন। আগামী মরসুমে তাঁর যে থাকার সম্ভাবনাও কার্যত নেই।

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে ব্যতিক্রম একমাত্র ফ্রান গঞ্জালেস। স্পেনীয় মিডফিল্ডারের সব সময়ের সঙ্গী এই মুহূর্তে ইমানল ইবারোন্দোর বিখ্যাত বই ‘লা প্রিমেরা বেস কুলা পেগে কন লা ইসকিয়েদা’। ইমানল নিজেও ফুটবলার ছিলেন। খেলতেন রক্ষণে। কিন্তু বিশ্বফুটবলে তিনি বিখ্যাত মনোবিদ হিসেবে। ইমানলের নামই হয়ে গিয়েছে ‘মেন্টাল গুরু’।

মনোবিদ হওয়ার প্রথাগত কোনও শিক্ষা নেই ইমানলের। কিন্তু মানুষের মনস্তত্ত্ব খুব ভাল বুঝতে পারেন। মেক্সিকো জাতীয় ফুটবল দলের সাফল্যের অন্যতম কারিগর মনে করা হয় তাঁকে। ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড, রিয়াল মাদ্রিদের প্রাক্তন তারকা হাভিয়ার হার্নান্দেস (চিচারিতো) বলেছিলেন, ‘‘আমরা যা করতে চাই, তা কখনওই অসম্ভব নয়। সব বাধা অতিক্রম করার ক্ষমতা আমাদের রয়েছে। এই বিশ্বাস ইমানল আমাদের মধ্যে সঞ্চারিত করেছেন।’’

মোহনবাগান দলে ফ্রানই এখন ইমানলের ভূমিকায়। অনুশীলনের পরে প্রিয় লেখকের বই হাতে নিয়ে বলছিলেন, ‘‘মাঠে নেমে কী ভাবে গোটা দলকে নেতৃত্ব দিতে হয়। সতীর্থদের উদ্বুদ্ধ করতে হয়, সেটাই শেখার চেষ্টা করছি এই বইটা পড়ে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement