উচ্ছ্বাস: দলের দ্বিতীয় গোলের পরে হেন্ডারসনের সঙ্গে সালাহ। রয়টার্স
ইপিএল
ওয়েস্ট হ্যাম ১ লিভারপুল ৩
চেলসি ২ বার্নলি ০
আর্সেনাল ০ ম্যান ইউ ০
মহম্মদ সালাহর সৌজন্যে লিভারপুল আবার লিভারপুলের মতোই খেলতে শুরু করেছে। টটেনহ্যামের পরে রবিবার বাইরের মাঠে য়ুর্গেন ক্লপের ক্লাব ওয়েস্ট হ্যাম ইউনাইটেডকে ৩-১ হারাল। অসম্ভব ভাল দু’টি গোল করলেন ‘মিশরের মেসি’ সালাহ। ৫৭ ও ৬৮ মিনিটে। অন্য গোলটি ৮৪ মিনিটে করেন জর্জিনিয়ো ওয়াইনালডাম। ৮৭ মিনিটে কর্নার থেকে একটি গোল শোধ করেন ওয়েস্ট হ্যামের ক্রেগ ডসন। এই জয়ের ফলে লিভারপুল উঠে এল পয়েন্ট টেবলের তিন নম্বরে। তাদের সংগ্রহ ২১ ম্যাচে ৪০। লিডস ইউনাইটেডের কাছে অপ্রত্যাশিত ভাবে ১-৩ হেরে লেস্টার সিটি নেমে গেল চতুর্থ স্থানে (২১ ম্যাচে ৩৯ পয়েন্ট)।
এ দিকে, নতুন ক্লাবের দায়িত্ব নিয়ে কিলিয়ান এমবাপেদের প্রাক্তন গুরু থোমাস তুহেল দ্বিতীয় ম্যাচেই জয়ের মুখ দেখলেন। রবিবার প্রিমিয়ার লিগে চেলসি ২-০ হারাল বার্নলিকে। গোল করলেন সেসার আথপিলিকোয়েতা (৪০ মিনিট) এবং মার্কোস আলোনসো (৮৪ মিনিট)। এই ম্যাচের পরে চেলসি পয়েন্ট টেবলে রয়েছে সাত নম্বরে। তাদের পয়েন্ট ২১ ম্যাচে ৩৩। ফ্র্যাঙ্ক ল্যাম্পার্ড বহিষ্কৃত হওয়ার পরে চেলসিতে ম্যানেজার হয়ে অভিষেক ম্যাচ ড্র করেন তুহেল। তিনি জানিয়েছিলেন, নতুন ক্লাবে ফুটবলারদের মধ্যে জয়ের ইচ্ছেটা ফিরিয়ে আনাই তাঁর একমাত্র লক্ষ্য। বার্নলিকে রবিবার হারিয়ে তিনি কথাও রাখলেন।
ম্যাচের পরে নেমারদের প্রাক্তন গুরু বলেছেন, “আমি আগেই বলেছিলাম, ধীরে ধীরে এই দলের খেলার দর্শনকে পাল্টে ফেলব। সেই জায়গা থেকে এ দিনের জয় আমার কাছে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে হয়েছে। এটা ফুটবলারদের মনোবলও নতুন ভাবে বাড়িয়ে দিল বলে আমি মনে করি।” তিনি আরও বলেছেন, “বার্নলি দল হিসেবে বেশ শক্তিশালী প্রতিপক্ষ, তবে আমাদের দল শুরু থেকেই ম্যাচ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছিল। দুই গোল হয়ে যাওয়ার পরেও কেউ গা ছাড়া মনোভাব দেখায়নি। ফুটবলারদের থেকে এই মানসিকতাই আমি আশা করি।” পরের ম্যাচে প্রতিপক্ষ জোসে মোরিনহোর টটেনহ্যাম। তা নিয়ে তুহেল বলেছেন, “অনেকেই এই বিষয় নিয়ে আমাকে প্রশ্ন করেছেন। আমার জবাব হল, সেই ম্যাচেও তিন পয়েন্ট নিশ্চিত করতে হবে দলকে।”
ফুটবল মহলে যাবতীয় আগ্রহ ছিল অবশ্য শনিবারের ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের ম্যাচ নিয়ে। লিগে খুব ভাল জায়গায় থাকতে থাকতে ঠিক আগের ম্যাচেই রেড ডেভিলস হেরে যায় শেফিল্ড ইউনাইটেডের কাছে। কিন্তু আর্সেনালকে হারিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে পারেননি পল পোগবারা। এই খেলা ০-০ ড্র হয়েছে। তার আগে ম্যাঞ্চেস্টার সিটি সেই শেফিল্ডকেই গ্যাব্রিয়েল জেসুসের গোলে ১-০ হারায়। ইপিএলের পয়েন্ট টেবলে পেপ গুয়ার্দিওলার ক্লাব এখন শীর্ষে। তাদের পয়েন্ট ২০ ম্যাচে ৪৪। ম্যান ইউয়ের পয়েন্ট ২১ ম্যাচে ৪১।
ম্যান ইউ বনাম আর্সেনাল খেলায় প্রথমার্ধে কেউই সে ভাবে ঝুঁকি নেয়নি। ৪৯ মিনিটে বরং আর্সেনালের উইঙ্গার উইলিয়ান গোলের সুযোগ নষ্ট করেন। ৫৬ মিনিটে সুযোগ নষ্ট করেন আলেকজান্দ্রে ল্যাকাজ়েটও। তার বাঁক খাওয়া ফ্রি-কিক পোস্টে লাগে। খুব ভাল খেলেছেন দাভিদ দা হিয়া। বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে তিনি ম্যান ইউয়ের ত্রাতা হয়ে ওঠেন। সে ভাবে দেখলে পোগবা, ব্রুনো ফের্নান্দেসরা গোলের পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পেরেছেন খুব কম। তবে খেলার একেবারে শেষ দিকে সহজ সুযোগ পেয়েছিলেন এডিনসন কাভানি। কিন্তু অ্যারন ওয়ান-বিসাকার সুন্দর একটি ক্রসে তিনি খুব কাছ থেকে বিশ্রী ভলি মেরে সুযোগ নষ্ট করেন। এ দিকে ম্যান ইউ বাইরের মাঠে টানা ১৮ ম্যাচ অপরাজিত থাকল। আর্সেনালও কিন্তু ক্রিসমাসের পরে কোনও ম্যাচে হারেনি। তাদের পয়েন্ট ২১ ম্যাচে ৩১।
ওয়ে গুন্নার সোলসার মনে করেন, ম্যান ইউ ফরোয়ার্ডদের গোল করার ব্যাপারে মরিয়া ভাবটা শনিবার ছিল না। ঘটনা হচ্ছে, শুধু আর্সেনাল ম্যাচে নয়, মার্কাস র্যাশফোর্ড, কাভানি, অ্যান্থনি মার্সিয়াল ও ফের্নান্দেস শেষ পাঁচ ম্যাচে মাত্র একটি গোল করেছেন। ‘‘সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে আর্সেনালকে হারাতে পারতাম। কিন্তু আমার ফরোয়ার্ডদের গোলের খিদেটা হঠাৎ যেন দেখা যাচ্ছে না। পরের ম্যাচগুলোর আগে এটাই ক্লাবে উদ্বেগের জায়গায়,’’ বলেছেন সোলসার। যোগ করেছেন, ‘‘দ্বিতীয়ার্ধে অনেক বেশি দাপট দেখানোর পরেও জিততে না পেরে খারাপ লাগছে।’’ পাশাপাশি আর্সেনালের ম্যানেজার মিকেল আর্তেতা বলেছেন, ‘‘ম্যান ইউয়ের বিরুদ্ধে ড্র আমার কাছে ভালই ফল। সুযোগ হাতছাড়া না হলে আমরাও জিততে পারতাম। তবে ঠাসা সূচির মধ্যেও ছেলেরা যে ভাবে খেলে যাচ্ছে তাতে আমি খুশি। দল ঠিক পথেই এগোচ্ছে।’’