মুগ্ধ: বুমরার আগ্রাসী মনোভাবে অভিভূত পাঠান। ফাইল চিত্র
ভারতীয় টেস্ট ইতিহাসে বিদেশে হ্যাটট্রিকের রেকর্ড এত দিন ছিল ইরফান পাঠানের দখলে। শনিবার সাবাইনা পার্কে ড্যারেন ব্র্যাভো, শ্যামর ব্রুকস ও রস্টন চেজকে টানা তিন বলে ফিরিয়ে পাঠানের রেকর্ডে ভাগ বসালেন যশপ্রীত বুমরা। ১২.১ ওভারে ২৭ রান দিয়ে ছয় উইকেট তাঁর ঝুলিতে। ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যানদের বিরুদ্ধে তরুণ পেসারের দাপট দেখে পাঠান বিস্মিত এবং মুগ্ধ। তাঁর বলতে কোনও দ্বিধা নেই, ‘‘ভারতীয় টেস্ট ইতিহাসের সেরা পেসার হয়ে ওঠার ক্ষমতা বুমরার মধ্যে রয়েছে।’’
২০০১ সালে কলকাতায় অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্টে হরভজন সিংহ হ্যাটট্রিক করার পরে অনেকেরই মনে হয়েছিল এই রেকর্ড ভাঙা অসম্ভব। ঠিক পাঁচ বছর পরে করাচিতে, সিরিজের তৃতীয় টেস্টের প্রথম ওভারের শেষ তিন বলে সেই ধারণা ভেঙে দেন পাঠান। তাঁর সুইং সামলাতে না পেরে সলমন বাট, ইউনুস খান ও মহম্মদ ইউসুফ শূন্য রানে প্যাভিলিয়নমুখী হন। বুমরাও ক্যারিবিয়ান শিবিরে ভাঙন ধরালেন সেই সুইং দিয়েই। রবিবার বিশাখাপত্তনম থেকে ফোনে জম্মু ও কাশ্মীরের কোচ ও ক্রিকেটার পাঠান বলছেন, ‘‘ইংল্যান্ড বা অস্ট্রেলিয়া সফরে বুমরাকে দেখতাম সুইংয়ের চেয়েও বেশি নির্ভর করত ‘সিম মুভমেন্টে’। ক্যারিবিয়ান সফরে দেখলাম দু’দিকে সমান ভাবে সুইং করাতে শুরু করেছে। অ্যাকশন দেখে বোঝার কোনও উপায় নেই কোন দিকে বল নড়বে। কব্জির অপূর্ব ব্যবহার দেখতে পেলাম। গতির সঙ্গে সুইং মিশিয়েই ও এত ভয়ঙ্কর।’’
কেন বুমরাকে ভারতীয় টেস্ট ইতিহাসের সেরা হওয়ার দাবিদার হিসেবে দেখছেন পাঠান? বাঁ-হাতি পেসারের উত্তর, ‘‘একজন পেসার তখনই সফল, যখন বিপক্ষ তাকে ভয় পেতে শুরু করে। বুমরা কিন্তু বিশ্বক্রিকেটের ত্রাস হয়ে উঠেছে। বিশ্বকাপেও দেখেছি, ও বল করলে ব্যাটসম্যানেরা আক্রমণ করার সাহস পাচ্ছিল না। টেস্টে কিন্তু রান করার তাড়া থাকে না। সেখানেও বুমরার বিরুদ্ধে কেউ খেলতে চাইছে না। ব্র্যাভো যে ভঙ্গিতে আউট হয়েছে, তা দেখেই বলে দেওয়া যায় যে, ও ভয় পেয়েছিল। বাইরে বেরিয়ে যাওয়া বল ডিফেন্ড করার সময় পা বাড়াতেই দ্বিধায় পড়ে গেল ও।’’
টেস্ট হ্যাটট্রিকের সঙ্গে ওয়ান ডে হ্যাটট্রিকের আদৌ কোনও পার্থক্য রয়েছে? ইরফান বলে দেন, ‘‘যে কোনও ফর্ম্যাটেই হ্যাটট্রিকের অনুভূতিটা অসাধারণ। তবে টেস্টে হ্যাটট্রিক করা কিছুটা হলেও কঠিন। ব্যাটসম্যানদের মধ্যে রান করার কোনও তাড়া থাকে না। সুতরাং, ব্যাটসম্যানকে প্রথম বলে ফেরাতে হলে বোলারের কৃতিত্বই আসল। ওয়ান ডে-তে রান করার চাপ থাকে, তখন কিন্তু ব্যাটসম্যানের ভুল করার সুযোগ তৈরি হয় বেশি।’’
বুমরার সাফল্যে উচ্ছ্বসিত হরভজন সিংহও। সংবাদ সংস্থাকে তিনি বলেন, ‘‘বুমরা কিন্তু এই হ্যাটট্রিকের জন্য চিরকৃতজ্ঞ থাকবে বিরাটের কাছে। বিরাট ডিআরএস না নিলে হ্যাটট্রিকও হত না বুমরার। আমিও হ্যাটট্রিকের জন্য সদগোপান রমেশের প্রতি কৃতজ্ঞ। ফরোয়ার্ড শর্ট লেগে দাঁড়িয়ে দুরন্ত ক্যাচ নিয়ে আমার স্বপ্নপূরণ হতে সাহায্য করেছিল রমেশ।’’