মেঘনা সিংহ। ছবি: টুইটার থেকে
ছোটবেলায় মেয়ের ক্রিকেটের প্রতি ভালবাসা লক্ষ্য করেছিলেন মা-বাবা। যাচাই করতে চেয়েছিলেন কতটা আগ্রহ রয়েছে। রোজ ভোর চারটের সময় ঘুম থেকে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া হত অনুশীলনে। বাড়ি থেকে ২৪ কিলোমিটার দূরে উত্তরপ্রদেশের নেহরু স্টেডিয়ামে বাবার সঙ্গে অনুশীলন করতে যেতেন মেঘনা সিংহ।
বিকেলবেলা ফের ২৪ কিলোমিটার দূরে সেই নেহরু স্টেডিয়ামে অনুশীলন। মেঘনার ১৪ বছর সময় লাগে নিজের স্বপ্নকে সত্যি করতে। ২৭ বছরের মেঘনা ডাক পেয়েছেন ভারতীয় দলে। টেস্ট এবং একদিনের দলে রাখা হয়েছে তাঁকে।
মেঘনার ক্রিকেট জীবনে এক বারই বাধা এসেছিল। ভারতীয় রেলে চাকরি পেয়েছিলেন তিনি। সেই সময় ক্রিকেট থেকে কিছুটা মন সরে গিয়েছিল তাঁর। তবে ২০১৯ সালে ঘরোয়া ক্রিকেটে তাঁর পারফরম্যান্স বুঝিয়ে দিয়েছিল আন্তর্জাতিক মঞ্চের জন্য তৈরি মেঘনা।
তরুণী ভারতীয় পেসারের কোচ লক্ষ্যরাজ তিয়াগি। বহু রঞ্জি খেলোয়াড় তৈরি করেছেন তিনি। লক্ষ্যরাজ বলেন, “দারুণ সুযোগ মেঘনার সামনে। একদিনের বিশ্বকাপের আগে নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ পাবে ও। আমি বিশ্বাস করি অস্ট্রেলিয়ায় ভাল খেলবে মেঘনা।”
কোন অস্ত্রে শান দিয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিমানে উঠছেন মেঘনা? লক্ষ্যরাজ বলেন, “অস্ট্রেলিয়ার পিচে গতি থাকে। মেঘনার আউটসুইং ভাল কাজে দেবে ওখানে। মেঘনাকে আমি ‘ব্যানানা সুইঙ্গার’ বলতে পারি।”
মেয়েদের সঙ্গে নয়, ছেলেদের সঙ্গে অনুশীলন করতেন মেঘনা। তাঁর মা রীনা সিংহ কাজ করেন আশাকর্মী হিসাবে। তিনি বলেন, “আমরা মেঘনাকে মেয়ে নয়, পরিবারের ছেলে হিসাবেই দেখেছি। ওর যদিও ভাই আছে। ভারতের হয়ে খেলার জন্য ডাক পাওয়ার পরেই আমাদের জীবন পাল্টে গিয়েছে। ফোন ধরতেই ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে। সবাই শুভেচ্ছা জানাচ্ছে।”
মেঘনার বাবা বিজয় বীর সিংহ চিনির কলে নিরপত্তারক্ষী হিসাবে কাজ করেন। বিজয় বলেন, “খেলার প্রতি ওর ভালবাসাটাকে প্রাধান্য দিয়েছি সব সময়। ১০ বছর বয়সে খেলা শুরু করে মেঘনা। খেলার জন্য ওর ত্যাগ দেখে, তিয়াগি স্যরের কাছে নিয়ে যাই।”
বহু কষ্ট সহ্য করে মেয়েকে বড় করার ফল পেয়েছেন মেঘনার মা, বাবা। এ বার তাঁদের আশা অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ভাল খেলুক মেয়ে।