ফাইল চিত্র।
আমরোহার ফার্মহাউসে নিজের উদ্যোগেই পিচ তৈরি করেছেন মহম্মদ শামি। ভাই মহম্মদ কাইফের সঙ্গে সেখানেই জোরকদমে চলছে অনুশীলন। করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে ভারতীয় দল কবে মাঠে নামবে তা নিয়ে কোনও নিশ্চয়তা নেই। ডিসেম্বরে অস্ট্রেলিয়া টেস্ট সিরিজ। তার জন্য এখন থেকেই ছন্দে ফেরার চেষ্টা চলছে ভারতের তারকা পেসারের। দিনে চার ঘণ্টার উপরে প্রস্তুতি চলে তাঁর। সকালে দেড় ঘণ্টা ফিজিক্যাল ট্রেনিং। বিকেলে ভাই ও এক বন্ধুর সঙ্গে নেট প্র্যাক্টিস। প্রায় দু’শো থেকে আড়াইশো বল করে নিজেকে ছন্দে ফেরাচ্ছেন ভারতীয় পেসার।
আইসিসি-র পরিবর্ত নিয়ম মাথায় রেখেই অনুশীলন চলছে শামির। দুই ভাই দু’টি আলাদা বলের বাক্স নিয়ে নেটে যান। দু’জনের কিটও একেবারে আলাদা। কোনও ভাবেই বলে থুতু ব্যবহার করছেন না। প্রায় এক সপ্তাহ হল ট্রেনিং শুরু করে দিয়েছেন। প্রথম দিন ভুল করে বলে থুতু ব্যবহার করে ফেলেছিলেন শামি। তখনই সে বল বাতিল করে দেন তারকা পেসার। কিন্তু রিভার্স সুইংই যে তাঁর মূল অস্ত্র। সে ক্ষেত্রে বলের এক দিক চকচকে রাখতেই হয়। কী ভাবে সেই পদ্ধতি অবলম্বন করছেন শামি? ভারতীয় পেসারের ভাই মহম্মদ কাইফ বললেন, ‘‘ঘাম দিয়েই বল পালিশ করছে শামিভাই। ও বল করার সময় আমাকে ব্যাট করতে হয়। ফার্মহাউসের পাটা পিচেও বল অনায়াসে কাট করাচ্ছে।’’ আর রিভার্স সুইং? শামির তো সেটাই অন্যতম অস্ত্র। এই কৌশল কোনও ভাবে বন্ধ হচ্ছে না তো? কাইফের উত্তর, ‘‘থুতু লাগিয়ে বল পালিশ করার পরে যে রকম সুইং করত, ঘাম ব্যবহার করার ফলে কিছুটা সুইং কমেছে। কিন্তু একদম হচ্ছে না, বলা যায় না।’’
প্রস্তুতির মাঝে ছয় বল অন্তর হাত স্যানিটাইজ় করছেন শামি। ইংল্যান্ডের প্রস্তুতি ম্যাচে দেখা গিয়েছে, প্রত্যেক ওভার শেষে বাউন্ডারি লাইনে গিয়ে হাত স্যানিটাইজ় করছেন জেমস অ্যান্ডারসন। শামিও সেই পথেই হাঁটার চেষ্টা করছেন। কিন্তু হাত স্যানিটাইজ় করার পরে, বল বেশ কয়েক বার পিছলে বেরিয়ে যাচ্ছে। এমনকি হাত ভেজা থাকলে বলেও লেগে যাচ্ছে স্যানিটাইজ়ার। তাতে বল পালিশ করতে সুবিধা হলেও আইসিসি কি এই পদ্ধতিকে সমর্থন দেবে? কলকাতায় টাউন ক্লাবের হয়ে খেলে যাওয়া শামির ভাই তাই বলছিলেন, ‘‘আমাদের দু’জনের কিটেই স্যানিটাইজ়ার থাকে। ছয় বল অন্তর শামিভাই স্যানিটাইজ় করে আসে। তার পরে বল করলে হাত থেকে বল পিছলে যাচ্ছে। কিন্তু বলে স্যানিটাইজ়ার লাগলে, পালিশও ভাল হচ্ছে। ও চিন্তা করছিল, ভুল করে বলে স্যানিটাইজ়ার লেগে গেলে, বল-বিকৃতির প্রশ্ন উঠবে না তো?’’
ডিসেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ। তার জন্যও বাড়তি প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে শামির। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে পুরনো ম্যাচের ভিডিয়ো দেখছেন। সেই পরিবেশে কী রকম বল করে সফল হয়েছেন, সে সবও ঘুরিয়ে ফিরেয়ে দেখছেন তিনি। এমনকি স্টিভ স্মিথ, ডেভিড ওয়ার্নার কী ভঙ্গিতে অস্ট্রেলিয়ায় ব্যাট করেন, সে সব নিয়েও চর্চা করছেন ভারতীয় পেসার। কাইফের কথায়, ‘‘আমাকে পাশে বসিয়েই এ সব নিয়ে চর্চা করে শামিভাই। কোন ব্যাটসম্যান কী রকম বলে সমস্যায় পড়তে পারে, তা আমাকে বোঝায়। তাতে নিজেরও উপকার হয়। সেই ভিডিয়ো দেখে নেটে সেই অনুযায়ী বল করে। আমাদের ফার্মহাউসের পিচে সে রকম বাউন্স অথবা গতি নেই। তাতেই একের পর এক বাউন্সার ধেয়ে আসে ওর হাত থেকে। স্মিথ, ওয়ার্নারদের বিরুদ্ধেও যে সিরিজ জিতে ফিরতে পারে, সেই বিশ্বাস আছে ওর মধ্যে।’’
শামি যদিও বৃহস্পতিবার বেঙ্গালুরু উড়ে গিয়েছেন। তার কারণ, পরিষ্কার জানা যায়নি। কয়েক দিনের মধ্যেই ফিরবেন আমরোহার বাড়িতে। ফের শুরু হবে দুই ভাইয়ের কঠোর অনুশীলন।